somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে সব কারণে ভারতীয় চ্যানেল দেখে আমাদের দেশের মহিলা দর্শকরা

১৬ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা প্রায়ই আক্ষেপ করে থাকি, আমাদের দেশের চ্যানেল আমাদের দেশের মহিলারা দেখেন না। তারা ভারতীয় চ্যানেল দেখতে বেশি পছন্দ করে। অপ্রিয় হলেও এটাই বাস্তবতা। কেন হল এমন ?
আমার বিবেচনায় নিচের দশটি কারণ :

কারণ -০১ :

ভারতীয় চ্যানেলগুলোর সঙ্গে আমাদের চ্যানেল মার খাওয়ার মূল কারণ হল, ওদের চ্যানেলগুলো বিশেষায়িত চ্যানেল।

যেমন : জিটিভি, স্টার প্লাস, স্টার জলসা এবং জি বাংলা - আমাদের দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যানেল। কারণ হল এগুলো ড্রামা চ্যানেল। নাটক ছাড়া এই সব চ্যানেল আর কিছু দেখায় না।
আমাদের দেশে কেবল নাটক দেখায় এই রকম চ্যানেল একটাও নাই। আমাদের সবগুলি টিভি চ্যানেল হল খিচুড়ি চ্যানেল। খিচুড়ি চ্যানেল দিয়ে বিশেষায়িত কোন চ্যানেলের সঙ্গে পেরে ওঠাটা সম্ভব না।

কারণ -০২ :
ওদের সবগুলো ধারাবাহিক ডেইলি সোপে। প্রতিদিন দেখায়। একই সময়ে দেখায়। বাংলাদেশে এই ধরনের ধারাবাহিক বিরল। ফলে ওদের নাটকের নেশাটা খুব সহজে ধরে।

কারণ -০৩ :
ওদের গল্পগুলোর মূল চরিত্র সব সময় নারী। তাই মেয়েরা ওদের গল্পগুলো বেশি পছন্দ করে। আমাদের দেশের নাটকের মূল চরিত্র নারী হলেও পুরুষ গুরুত্ব পায়।

কারণ -০৪ :
আমাদের গল্পের মধ্যে দ্বন্দ্বের চেয়ে ঘটনা বা কমেডি জোর দেয়া হয়। ওদের গল্পে প্রতিটি মুহূর্তে দ্বন্দ্ব থাকে। প্রতিটি মুহূর্তে চরিত্রগুলো কোন না কোন প্রব্লেমে থাকে, তাই দর্শক খুবই টেনশন নিয়ে ওদের নাটক দেখে। ফলে নেশাটাও সহজে ধরে।

কারণ -০৫ :
ওদের সময়জ্ঞান চমৎকার। এক সেকেণ্ড দেরি করবে না কোন নাটক শুরু করতে। আমাদের চ্যানেলের সময়জ্ঞান নাই। নাটক শুরু করার বদলে বিজ্ঞাপন দেখাতে দেখাতে বিরক্ত করে ফেলে দর্শককে। ফলে দর্শক চলে যায় অন্য চ্যানেলে।

কারণ -০৬ :

ওরা নাটকের শুরুতে কোন বিজ্ঞাপন দেয় না। নাটক শুরু হওয়ার পর মাঝখানে বিজ্ঞাপন দেয়। দর্শককে প্রথমে কিছুটা গল্পের ভেতর ঢুকতে দেয়, তারপর বিজ্ঞাপন দেয়। ফলে দর্শক আটকে যায়। আমাদের দেশের নাটকের প্রথমেই একগাঁদা বিজ্ঞাপন দিয়ে দর্শককে বিরক্ত করে ফেলে।

কারণ -০৭ :
ওরা বিজ্ঞাপন দেয়ার সময় একটা কাউন্টডাউন ব্যবহার করে। ঠিক কতক্ষণ পর ফিরে আসছে সেটা জানতে পারে দর্শক। ফলে দর্শক অন্য চ্যানেলে চলে গেলেও নির্দিষ্ট সময়ে আবার ওই চ্যানেলে ফিরে আসে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ চ্যানেলে এই কাউন্ট ডাউন ব্যবহার হয় না।

কারণ -০৮ :

আমাদের দেশের নাটক দেখতে বসলে মনে হয়, নাটক নয় বিজ্ঞাপন দেখছি। দর্শক বিরক্ত হয় বিজ্ঞাপনের আধিক্যের কারণে। অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনের কারণে অনেক ভালো নাটকও মার খায়। বিশেষত ঈদের ভালো ভালো নাটক বিজ্ঞাপনের অত্যাচারে দর্শক দেখতে পারে না।

কারণ -০৯ :

ভারতীয় চ্যানেলে প্রচারিত নাটকে যত ক্ষুদ্র অভিনয় শিল্পীই হোক, সে ভালো অভিনয় শিল্পী। আমাদের দেশের নাটকের অনেক অ-অভিনেতাকে অভিনয় শিল্পী হিসেবে চালিয়ে দেয়া হয়। ওই অ-অভিনেতার অভিনয় দর্শককে বিরক্ত করে।

কারণ - ১০ :
এই কারণটাও একটা কারণ। আমাদের দেশের নাটকের বাজেট কম। অনেকে বলবেন, নাটক বানাতে টাকা লাগে না, মেধা লাগে। কথা সত্য নয়। মেধাও লাগে, টাকাও লাগে - দুটোই লাগে। একটা আরেকটার পরিপুরক। সব কিছুর দাম বেড়েছে, কিন্তু টিভি চ্যানেলগুলো এখন অনেক কম দামে নাটক কেনে। এত কম টাকায় ভালো নাটক বানানো কঠিন।


একই বিষয়ে আমার পুরোনো লেখা :

আমার বৌ তার প্রিয় ভারতীয় চ্যানেলে ফেরত গেছে
ভারতীয় চ্যানেলের আগ্রাসন ঠেকানোর সর্বোত্তম উপায়
আমাদের মিডিয়া কবে এই রকম হবে ?
খিচুড়ি চ্যানেল আর নকল অনুষ্ঠান চাই না
টিভিগুলি কি ঈদের অনুষ্ঠান দেখাচ্ছে ?
বেসরকারী টিভিতে বিটিভির সংবাদ চাই না
সমর্থন করলাম : শিক্ষা টেলিভিশন
একটি জঘন্য আইন - তীব্র প্রতিবাদ জানাই
ভাত দেয়ার মুরোদ নাই , কিল দেয়ার গোসাই
সবাই কেবল স্টার বানাতে চায়, শিল্পী বানাতে চায় না কেউ

সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১:৪৩
৩২টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×