somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

গৃহযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র পুনর্গঠন -- দ্বিতীয় পর্ব

১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রেসিডেন্ট জনসন দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে জোর- জবরদস্তিমূলক পরিবর্তনের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু ১৮৬৬ সলে উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস নির্বাচনের মাধ্যমে প্রগতিশীলরা নীতি নির্ধারণের ক্ষমতা লাভ করলে, ১৮৬৬ সালে কংগ্রেস সিভিল রাইটস এক্ট পাস করে। এই আইনে বলা হয়, জাতি, বর্ণ বা আগে যাই থাকুক না কেন (আগে দাস থাকলেও) যারা যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করবে তারা জণ্মগতভাগে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বলে গণ্য হবে। প্রেসিডেন্ট জনসন এই আইনে ভেটো প্রয়োগ করলেও কংগ্রেস তা বাতিল করে আইনটি চূড়ান্তভাবে পাস করে। ১৮৬৭ সালে কংগ্রেসে রিকন্সট্রাকশন এক্ট পাস হয়।এই আইন বলে দক্ষিণাঞ্চলীয় সরকারগুলোকে অপসারণ করে সামরিক শাসন জারি করা হয় এবং সব মুক্ত মানুষের ভোটাধিকার প্রদান করা হয়।
দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রায় সব রাজ্যে রিপাবলিকানদের জোট ক্ষমতায় আসার পর, সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে দক্ষিণের সমাজ ব্যবস্থাকে দাস নির্ভর অর্থনীতি থেকে মুক্ত শ্রমিক নির্ভর অর্থনীতি রূপান্তর করা হয়। সরকার মুক্ত নাগরিকদের আইনগত অধিকারকে রক্ষা করার ব্যবস্থা নেয়, মালিকদের সাথে শ্রমিকদের চুক্তিগুলির শর্তসমূহ ঠিক করে দেয় এবং মুক্ত দাসদের জন্য স্কুল এবং গীর্জা নির্মাণ করে দেয়। উত্তরাঞ্চল থেকে হাজার হাজার ধর্মপ্রচারক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে আসে। দক্ষিণাঞ্চলের যেসব মানুষ এদেরকে পছন্দ করতো না, তারা এদেরকে "কার্পেটবেগার" (carpetbagger) বলে ডাকতো। ওই সময়ে সরকার সারা যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপী রেললাইন বসানোর ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু ১৮৭৩ সালের সারা দেশে অর্থনীতিতে মহা-মন্দা দেখা দিলে রেললাইন স্থাপনের পরিকল্পনা বাতিল হয়ে যায়।

হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভসের প্রগতিশীল সদস্যরা পনর্গঠনের যে উদ্যোগ নেয়, প্রেসিডেন্ট জনসন তার বিরোধিতা করতে থাকেন। এতে ১৮৬৬ সালে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট জনসনকে অপসারণের (impeachment) উদ্যোগ নিলে তা সিনেটে এক ভোটার জন্য পাস করাতে ব্যর্থ হয়।

দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি ধীরে ধীরে আবার যুক্তরাষ্ট্রে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং কংগ্রেসে আবার সিনেটর ও প্রতিনিধি পাঠানোর অনুমতি দেয়া হয়।

১৮৭৫ সালে সিভিল রাইটস এক্ট পাস হয়, এতে সরাইখানা, সব ধরণের সড়ক ও নৌ পরিবহন, নাট্যশালা এবং সব ধরনের গণ-বিনোদনমূলক স্থানে জাতি, বর্ণ, বা আগে কি ছিল তা বিবেচনা না করে সব মানুষের সাথে সমান আচরনের নির্দেশ দেয়া হয়। অবশ্য ১৮৮৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে।

১৮৭৭ সালে রাদারফোর্ড বার্চার্ড হয়েস যুক্তরাষ্ট্রের ১৯শ তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার করে নেন। এরপর থেকে দক্ষিণের রাজ্যগুলি উত্তরে রাজ্যগুলির কোনো প্রভাব ছাড়াই নিজেদের রাজ্য স্বাধীনভাবে পরিচালনা করতে থাকে।

দক্ষিণের শ্বেতাঙ্গরা আবারো কালো মানুষদেরকে অধীনস্থ হিসাবে বিবেচনা করতে থাকে। ১৮৯০ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত সাবেক কনফেডারেট রাজ্যগুলিতে কালোদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়।

দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে কালোদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত করার জন্য ১৮৬৬-১৮৬৭ সালে কু ক্লাক্স ক্লান (Ku Klux Klan) নামে একটি সংঘটনের জন্ম হয়। তাদের লক্ষ্য ও আদর্শ হলো, নব্য-কনফেডারেট, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ, শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদ, আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ, অভিবাসন বিরোধিতা, সাম্যবাদ বিরোধিতা, খিষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ, ক্যাথলিক মতবাদের বিরোধিতা, ইহুদীবিদ্বেষ, নব্য-ফ্যাসিবাদ ও নব্য- নাৎসিবাদ। কালোদেরকে ভোটাধিকার প্রয়োগে ভীত-সন্ত্রস্ত করে, শ্বেতাঙ্গ শাসন পুনঃবহালের ক্ষেত্রে এই সংঘটন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:৩০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাথা ঠান্ডা করুন, ভাবুন, যুক্তি দিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করুন।

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৩

মাথা ঠান্ডা করুন, ভাবুন, যুক্তি দিয়ে পরিস্থিতি বিবেচনা করুন।

নিজের মতকে যে একমাত্র সত্য, সঠিক ভাবে সে নিঃসন্দেহে ফ্যাসিস্ট। সাইকোপ্যাথ সে যে উন্মাদের মতো খিস্তি খেউর করে, নিজের ভয়াবহ পিশাচ আইডিয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিন্দু - সনাতন - ইসকন কোনটা কী?

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৪


হিন্দু আমার ভাই, হিন্দু আমার প্রতিবেশী। আমার প্রতিবেশীর সাথে আমাদের কোন ঝামেলা নাই, ৩৬শেও হয়নি। আমরা একসাথে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিজয় মিছিল দেখেছি, কেউ তাদের দিকে তাকায়নি, সবাই ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছিল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন আর হিন্দু এক না; হিন্দুরা কেন ইসকনকে সমর্থন করছে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:২৪



সকল ধর্ম-বর্ণে শিশু বলাৎকার হলো নিষিদ্ধ।তারপরও ইসকন নেতা চিন্ময় প্রায় সময় শিশুদের সাথে বলাৎকার ও নারীদের সঙ্গে যৌন কাজে লিপ্ত থাকে।এটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে তিনি এই কাজে লিপ্ত।... ...বাকিটুকু পড়ুন

=স্নিগ্ধ সকালে নিমন্তন্ন চায়ের=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:১৩



ঘুম রেখে এসো দখিনের বারান্দায়, কী স্নিগ্ধ আলো,
উড়ছে চিল উঁচু তলা ছুঁয়ে, লাগবে তোমারও ভালো,
চা করেছি, চুলায় জল করছে টগবগ, দিয়েছি চা পাতা
তুমি এলেই কাপে ঢালবো, খুলবো প্রেমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারত বিরোধিতা ও ৮০০ কোটি টাকা গচ্ছা যাওয়ার কাহিনী!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৭ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০০


"ভারত আমাদের শত্রু যে প্রজন্ম তা বুঝতে পারবে তারাই হবে শ্রেষ্ঠ প্রজন্ম"- মওলানা ভাসানী। জুলাই অভ্যুত্থানের পিছনে শেখ হাসিনা রেজিমের দুঃশাসন ও বিগত ২/৩ টি নির্বাচনে ভারতের নগ্ন হস্তক্ষেপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×