পৃথিবীর আদিতম একটি ভাষা হল সংস্কৃত এবং নাসার এক বিজ্ঞানী মনে করেন গাণিতিক সূত্র ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রকাশের জন্য সংস্কৃত প্রযোজ্য হতে পারে এবং বেদিক সংস্কৃত ভাষায় হিন্দু ধর্মের ধর্মগ্রন্থ – স্রুতি রচিত যা সংস্কৃত এর পূর্ব রূপ থেকে পাওয়া। তবে সংস্কৃত ও আরবী এক মূল থেকে আসা ভাষা নয়। সংস্কৃত ইন্দো-আরিয়ান ও ইন্দো-ইওরোপিয়ান ভাষা পরিবার থেকে উদ্ভব একটি ভাষা।
হঠাৎ মনের মাঝে একটি প্রশ্ন এলোঃ
-আল কুরআনের ভাষা আরবী কেন?
এবার আরবী সম্পর্কে আরও একটু জানা চেষ্টা করলামঃ
-কুরআন যে আরবী ভাষায় লেখা হয়েছে তাকে বলা হয় ক্লাসিক্যাল আরবী (সূত্রঃ বা কুরআনিক আরবী ) এটির উৎপত্তি হয় এভাবেঃ
সেমিটিক (খৃঃপূর্ব ৪০০০ বছর পুরোনো ভাষা) > কেন্দ্রীয় সেমিটিক > পশ্চিম সেমিটিক > ক্লসিক্যাল আরবী (কুরআনিক)
বর্তমানে যে আরবী ভাষাটি চলছে তা কুরআনের ভাষা দুই ধাপ পরের বির্বতনের ভাষা। একে বলা হয়- আধুনিক স্ট্যানডার্ড আরবী। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সেমিটিক থেকে হিব্রু ভাষার উৎপত্তি হয়েছিল এবং যেটি বাইবেলের ভাষা।
প্রশ্ন জাগলো মনেঃ
-প্রাচীন এই ভাষাটিতে কুরআন কেন এলো?
কুরআনে যুক্তি হলোঃ এটি একটি ব্যপ্ত ও বিস্তৃত ভাষা এবং অল্প কথায় এতে অনেক কিছু বোঝানো সম্ভব।
প্রাচীন এই ভাষাটি ব্যকারণের ব্যবহার ছিল। বলা হয়ে থাকে, আরবী ভাষা খুবই দক্ষ যে অল্প কথায় যেকোন আইন/নিয়ম ব্যাখ্যার জন্য।
কুরআনে আরও বলা হয়েছেঃ অন্য ভাষায় নাজিল হলে বিভাষীরা প্রশ্ন করতো যে, এর ব্যাখ্যা কই? অথার্ৎ ততকালীন সময়ের ভাষাগুলোর চেয়ে কুরআনিক আরবী অনেক শক্তিশালী ছিল ভাব প্রকাশের দিক থেকে। ভাষাবিদ নই বলে এর পেছনের যুক্তি দিতে পারলাম না অথবা আরও একটু জানতে হবে এ বিষয়ে কিছু বলার আগে। তবে পড়তে পারেন, কুরআনের 41:44 আয়াত
“If we made it a non-Arabic Quran they would have said, “Why did it come down in that language?” Whether it is Arabic or non-Arabic, say, “For those who believe, it is a guide and healing. As for those who disbelieve, they will be deaf and blind to it, as if they are being addressed from faraway.”
সবশেষে, বলা হয়েছে কুরআনের ভাষা বিশ্বাসীদের জন্য। যারা বিশ্বাসী নয় তাদের অন্ধ ও বধির বলে বলে বলা হয় যে, তারা আরবী ভাষী হলেও কুরআনের অর্থ অনুধাবন করতে পারবেনা। অর্থাৎ মোদ্দা কথায় কুরআন বিশ্বাসীদের জন্য।
ভাষার বির্বতন, উন্নয়ন, আরও ব্যপক ব্যকরণের চেয়ে ভাব প্রকাশই মূখ্য।
আবার সম্পুরক আরো একটি প্রশ্ন মনে এলোঃ -লওহে মাহফুজে পবিত্র কুরআনের মূল যে কপিটি রাখা আছে তাও কি কুরআনিক আরবীতে?
পরকালের ভাষা আরবী কিনা তা নিয়ে বিতর্ক আছে হাদিস বেত্তাদের। কখনও বলা হয় মহানবী (সঃ) বলেছেন কুরআনের ভাষা ও পরকালের ভাষা আরবী কিন্তু অপর ইসলামিক স্কলাররা মনে করেন এটি একটি প্রকৃত হাদিস নয় । তারা মনে করেন, একমাত্র আল্লাহ্ তায়ালা জানেন এর উত্তর এবং এই বিষয় নিয়ে ভাবার চেয়ে অন্যান্য বিষয়গুলো জানা ও মান্য করা জরূরী।
সবশেষে, উপসংহারে, নিচের লাইনটি পোষ্ট মন্তব্য (ওরাকল ও রাগিব ভাই) হতে তুলে দিলাম (খুবই যুক্তিপূর্ণ মনে হয়েছে বলেই)-
মহানবী (সাঃ) এর ভাষা আরবি ছিল বলেই কুরআন শরীফ আরবিতে । অন্য সকল নবী রাসুলদের ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসৃত হয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০১০ ভোর ৪:৪২