somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এমন কষ্টের সময় এক ঝলক খুশির বাতাস

১০ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পূরণ হলো কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন। রুবেল–মাহমুদউল্লাহ–মাশরাফিদের তাই বাঁধনহারা উদ্‌যাপন! কাল অ্যাডিলেডে ছবি: এএফপিবাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা মাঠে দিগ্বিদিক ছুটছেন। ডাগ-আউট থেকে ছুটে আসছেন দলের বাকি সবাই। মাশরাফি বিন মুর্তজা দাঁড়িয়ে ছিলেন মিড অফে, সেখানেই উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লেন। সেদিকে চোখ পড়তেই একে একে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লেন অধিনায়কের ওপর। অ্যাডিলেড ওভালের সবুজ ঘাসে লাল-সবুজের অপরূপ একটা ছবি আঁকা হয়ে গেল।
ফুটবলে এমন দৃশ্য অহরহই দেখা যায়। ক্রিকেটে একটু বিরলই বটে। তা বিরল সাফল্যের উদ্যাপন তো একটু ব্যতিক্রমীই হবে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিরূপ কন্ডিশনে বিশ্বকাপ আর সেটিতেই কি না গ্রুপের শেষ ম্যাচ বাকি থাকতেই বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে!
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর অ্যাডিলেড ওভালের বাইরের আঙিনাটা যেন মিরপুর হয়ে গেল। ‘আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ স্লোগান চলছে, ডুগডুগির মতো কী যেন একটা বাজছে, বাতাসে গর্বিত ভঙ্গিমায় দুলছে লাল-সবুজ পতাকা...স্বপ্ন আর সত্যি এক বিন্দুতে মিলে গেলে সেই আনন্দ এমন বাঁধনহারাই হয়।
অ্যাডিলেড ওভাল অনেক ক্রিকেট ইতিহাসের সাক্ষী। ত্রিশের দশকে উডফুল আর ওল্ডফিল্ডকে ছোবল দেওয়া লারউডের আগুনে গোলায় বডিলাইন সিরিজ উত্তেজনার তুঙ্গ ছুঁয়েছিল এখানেই। এই মাঠকেই নিজের হোমগ্রাউন্ড করে নিয়েছিলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। ইতিহাসের আরও কতশত টুকরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এই মাঠে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও এখন নাম লেখা হয়ে গেল অ্যাডিলেড ওভালের। এখানেই যে রচিত হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের অমর এক কাব্য।
যেনতেন একটা ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলেও তা-ই থাকত। বাংলাদেশ যে জিতল সত্যিকার অর্থেই এক ওয়ানডে-ক্লাসিক। শেষ পর্যন্ত লাল-সবুজ হওয়ার আগে কতবার যে রং বদলাল এই ম্যাচ! গত বিশ্বকাপে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই চট্টগ্রামে অবিশ্বাস্য এক জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এখানে বাটলার আর ওকস মিলে সেই স্মৃতিই যেন উল্টোভাবে জাগিয়ে তুলছিলেন আবারও। ১৬৩ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সপ্তম উইকেটে মাত্র ১০.১ ওভারে দুজনের ৭৫ রানের জুটিটি ম্যাচটিকে প্রায় বেরই করে নিয়ে যাচ্ছিল।
সেটি ভাঙার পরও কি কম নাটকীয়তা! শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এই ম্যাচ শেষটাকে নিয়ে স্নায়ুধ্বংসী খেলা করেই গেল। তাসকিন বাটলারকে ফিরিয়ে দেওয়ার সময়ও সমীকরণটা ইংল্যান্ডের দিকেই একটু ঝুঁকে।
এই টি-টোয়েন্টির যুগে ২৫ বলে ৩৮ রান খুবই সম্ভব। সেটিকে ১৮ বলে ৩১ রান বানিয়ে বাংলাদেশ যখন একটু স্বস্তিতে, তখনই অস্বস্তির ঝোড়ো বাতাস বয়ে গেল ইনিংসের ৪৮তম ওভারে। লং অনে ওকসের ক্যাচ ফেলে দিলেন তামিম। তাসকিনের ওই ওভারে রান এল ১৫। শেষ ২ ওভারে ইংল্যান্ডের লাগে ১৬ রান, হাতে ২ উইকেট। কী লেখা আছে রুদ্ধশ্বাস এই নাটকের শেষে?
৩ বলের মধ্যে দুবার স্টাম্পে লাল বাতি জ্বালিয়ে বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে উড়তে থাকা এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন রুবেল হোসেন। এই বিশ্বকাপে আসার আগে ঝড় বয়ে গেছে তাঁর জীবনে। সেই রুবেলই কাল বোলিংয়ে ঝড় হয়ে উঠলেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির পুরস্কার হিসেবে মাহমুদউল্লাহর হাতে ম্যান অব দ্য ম্যাচের ট্রফি। তবে রুবেলকে সেই স্বীকৃতি দিলেও অন্যায় কিছু হতো না। শেষের ওই প্রলয়নৃত্যের আগে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে চার বলের মধ্যে ২ উইকেট নিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডকে।
রুবেলের হাতেই রংমশাল। তবে এই ম্যাচ তো আসলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবহেলা-অনাদরের পাত্র পেস বোলারদের উল্লাসে রঙিন। মাশরাফি-তাসকিনও কী বোলিংটাই না করলেন! ইংল্যান্ড-বধে স্পিনই মূল অস্ত্র বলে যে ধারণা, সেটিকে উড়িয়ে দিয়ে তিন পেসারের ৮ উইকেট। বাকি দুটি রানআউট। দুই দল মিলিয়েই সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং সাকিব আল হাসানের। পরোক্ষ অবদান তাই তাঁরও আছে। তার পরও এই জয়টা বাংলাদেশের ক্রিকেটে আলাদা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়েই থাকবে। বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো জয়, যাতে স্পিনারদের কোনো উইকেট নেই!
উইকেট নেওয়ার চেয়েও বেশি প্রশংসার দাবিদার পেসারদের অবিশ্বাস্য নিয়ন্ত্রিত বোলিং। তিনজনই তেড়েফুঁড়ে বোলিং করেছেন, অথচ পুরো ইনিংসে একটিও ওয়াইড নেই, নো-বলও মাত্র একটি! সেটিও তাসকিনের হাত থেকে একটি বিমার বেরিয়ে গিয়েছিল বলে। ম্যাচটার দিকে ফিরে তাকালে শেষ পর্যন্ত তো নির্ধারক বলতে হবে পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংকেই।
টুকরো টুকরো অনেক কিছু মিলেই এমন একটা জয়ের ছবি আঁকা হয়। পেসারদের অসাধারণ বোলিংয়ের আগে যেমন ব্যাটিংয়ে দুটি জুটি। এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের দুর্দশার সবচেয়ে বড় কারণ বলা হচ্ছিল জেমস অ্যান্ডারসনের সুইং না পাওয়া। সকাল থেকে মুখ গোমড়া করে রাখা অ্যাডিলেডের আকাশের নিচে কাল সেই আরাধ্য সুইংয়ের দেখা পেলেন অ্যান্ডারসন। ইনিংসের ১৩ বলের মধ্যেই দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়ে স্কোরবোর্ডে ৮/২ লিখে দিলেন ইংল্যান্ডের পেসার। সৌম্য সরকারের সঙ্গে ৮৬ রানের জুটিতে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কাজটা শুরু করলেন মাহমুদউল্লাহ। এই বিশ্বকাপে সৌম্য তারুণ্যের ভয়ডরহীন পতাকা উড়িয়ে একঝলক তাজা বাতাস হয়ে এসেছেন বাংলাদেশ দলে। তবে সৌম্যর পিছু পিছু সাকিবও আউট হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ আবার অথই সাগরে।
৯৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে টলমল তরিটাকে বেয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা যাঁরা করলেন, সম্পর্কে তাঁরা ভায়রা। মাঝখানে মাহমুদউল্লাহর যখন খারাপ সময় আর মুশফিকুর ওয়ানডেরও অধিনায়ক, এমন সব কথাবার্তা হয়েছে যে, সম্পর্কটাকে দুজনের কাছেই বিষম বোঝা মনে হয়েছে। সেসবের জবাব ব্যাটেই দিচ্ছেন। তাঁদের গড়ে দেওয়া ভিত্তির ওপরই মাথা তুলে দাঁড়াল বাংলাদেশের স্বপ্নসৌধ। এই বিশ্বকাপে চার ম্যাচে তিনবার জুটির রেকর্ড নতুন করে লিখেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাকিব-মুশফিকের ১১৪ ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম-মাহমুদউল্লাহর ১৩৯ ছাড়িয়ে কাল মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের ১৪১।
অ্যাডিলেড ওভালের ব্যাটিং-স্বর্গ উইকেট আর উইকেটের আড়াআড়ি ছোট বাউন্ডারি মাথায় রেখে বিরতির সময় আলোচনা হচ্ছিল, বাংলাদেশের স্কোরটা ২০-২৫ রান কম হয়ে গেল কি না! তখন তো আর কেউ জানে না, নিজেদের চেনানোর জন্য এই ম্যাচটাই ঠিক করে রেখেছেন বাংলাদেশের পেসাররা!
পূরণ হলো কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন। রুবেল–মাহমুদউল্লাহ–মাশরাফিদের তাই বাঁধনহারা উদ্‌যাপন! কাল অ্যাডিলেডে ছবি: এএফপিবাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা মাঠে দিগ্বিদিক ছুটছেন। ডাগ-আউট থেকে ছুটে আসছেন দলের বাকি সবাই। মাশরাফি বিন মুর্তজা দাঁড়িয়ে ছিলেন মিড অফে, সেখানেই উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লেন। সেদিকে চোখ পড়তেই একে একে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লেন অধিনায়কের ওপর। অ্যাডিলেড ওভালের সবুজ ঘাসে লাল-সবুজের অপরূপ একটা ছবি আঁকা হয়ে গেল।
ফুটবলে এমন দৃশ্য অহরহই দেখা যায়। ক্রিকেটে একটু বিরলই বটে। তা বিরল সাফল্যের উদ্যাপন তো একটু ব্যতিক্রমীই হবে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিরূপ কন্ডিশনে বিশ্বকাপ আর সেটিতেই কি না গ্রুপের শেষ ম্যাচ বাকি থাকতেই বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে!
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর অ্যাডিলেড ওভালের বাইরের আঙিনাটা যেন মিরপুর হয়ে গেল। ‘আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ স্লোগান চলছে, ডুগডুগির মতো কী যেন একটা বাজছে, বাতাসে গর্বিত ভঙ্গিমায় দুলছে লাল-সবুজ পতাকা...স্বপ্ন আর সত্যি এক বিন্দুতে মিলে গেলে সেই আনন্দ এমন বাঁধনহারাই হয়।
অ্যাডিলেড ওভাল অনেক ক্রিকেট ইতিহাসের সাক্ষী। ত্রিশের দশকে উডফুল আর ওল্ডফিল্ডকে ছোবল দেওয়া লারউডের আগুনে গোলায় বডিলাইন সিরিজ উত্তেজনার তুঙ্গ ছুঁয়েছিল এখানেই। এই মাঠকেই নিজের হোমগ্রাউন্ড করে নিয়েছিলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। ইতিহাসের আরও কতশত টুকরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এই মাঠে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও এখন নাম লেখা হয়ে গেল অ্যাডিলেড ওভালের। এখানেই যে রচিত হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের অমর এক কাব্য।
যেনতেন একটা ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলেও তা-ই থাকত। বাংলাদেশ যে জিতল সত্যিকার অর্থেই এক ওয়ানডে-ক্লাসিক। শেষ পর্যন্ত লাল-সবুজ হওয়ার আগে কতবার যে রং বদলাল এই ম্যাচ! গত বিশ্বকাপে এই ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই চট্টগ্রামে অবিশ্বাস্য এক জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এখানে বাটলার আর ওকস মিলে সেই স্মৃতিই যেন উল্টোভাবে জাগিয়ে তুলছিলেন আবারও। ১৬৩ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সপ্তম উইকেটে মাত্র ১০.১ ওভারে দুজনের ৭৫ রানের জুটিটি ম্যাচটিকে প্রায় বেরই করে নিয়ে যাচ্ছিল।
সেটি ভাঙার পরও কি কম নাটকীয়তা! শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত এই ম্যাচ শেষটাকে নিয়ে স্নায়ুধ্বংসী খেলা করেই গেল। তাসকিন বাটলারকে ফিরিয়ে দেওয়ার সময়ও সমীকরণটা ইংল্যান্ডের দিকেই একটু ঝুঁকে।
এই টি-টোয়েন্টির যুগে ২৫ বলে ৩৮ রান খুবই সম্ভব। সেটিকে ১৮ বলে ৩১ রান বানিয়ে বাংলাদেশ যখন একটু স্বস্তিতে, তখনই অস্বস্তির ঝোড়ো বাতাস বয়ে গেল ইনিংসের ৪৮তম ওভারে। লং অনে ওকসের ক্যাচ ফেলে দিলেন তামিম। তাসকিনের ওই ওভারে রান এল ১৫। শেষ ২ ওভারে ইংল্যান্ডের লাগে ১৬ রান, হাতে ২ উইকেট। কী লেখা আছে রুদ্ধশ্বাস এই নাটকের শেষে?
৩ বলের মধ্যে দুবার স্টাম্পে লাল বাতি জ্বালিয়ে বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে উড়তে থাকা এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন রুবেল হোসেন। এই বিশ্বকাপে আসার আগে ঝড় বয়ে গেছে তাঁর জীবনে। সেই রুবেলই কাল বোলিংয়ে ঝড় হয়ে উঠলেন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির পুরস্কার হিসেবে মাহমুদউল্লাহর হাতে ম্যান অব দ্য ম্যাচের ট্রফি। তবে রুবেলকে সেই স্বীকৃতি দিলেও অন্যায় কিছু হতো না। শেষের ওই প্রলয়নৃত্যের আগে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে চার বলের মধ্যে ২ উইকেট নিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছেন ইংল্যান্ডকে।
রুবেলের হাতেই রংমশাল। তবে এই ম্যাচ তো আসলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অবহেলা-অনাদরের পাত্র পেস বোলারদের উল্লাসে রঙিন। মাশরাফি-তাসকিনও কী বোলিংটাই না করলেন! ইংল্যান্ড-বধে স্পিনই মূল অস্ত্র বলে যে ধারণা, সেটিকে উড়িয়ে দিয়ে তিন পেসারের ৮ উইকেট। বাকি দুটি রানআউট। দুই দল মিলিয়েই সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং সাকিব আল হাসানের। পরোক্ষ অবদান তাই তাঁরও আছে। তার পরও এই জয়টা বাংলাদেশের ক্রিকেটে আলাদা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়েই থাকবে। বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো জয়, যাতে স্পিনারদের কোনো উইকেট নেই!
উইকেট নেওয়ার চেয়েও বেশি প্রশংসার দাবিদার পেসারদের অবিশ্বাস্য নিয়ন্ত্রিত বোলিং। তিনজনই তেড়েফুঁড়ে বোলিং করেছেন, অথচ পুরো ইনিংসে একটিও ওয়াইড নেই, নো-বলও মাত্র একটি! সেটিও তাসকিনের হাত থেকে একটি বিমার বেরিয়ে গিয়েছিল বলে। ম্যাচটার দিকে ফিরে তাকালে শেষ পর্যন্ত তো নির্ধারক বলতে হবে পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংকেই।
টুকরো টুকরো অনেক কিছু মিলেই এমন একটা জয়ের ছবি আঁকা হয়। পেসারদের অসাধারণ বোলিংয়ের আগে যেমন ব্যাটিংয়ে দুটি জুটি। এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের দুর্দশার সবচেয়ে বড় কারণ বলা হচ্ছিল জেমস অ্যান্ডারসনের সুইং না পাওয়া। সকাল থেকে মুখ গোমড়া করে রাখা অ্যাডিলেডের আকাশের নিচে কাল সেই আরাধ্য সুইংয়ের দেখা পেলেন অ্যান্ডারসন। ইনিংসের ১৩ বলের মধ্যেই দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়ে স্কোরবোর্ডে ৮/২ লিখে দিলেন ইংল্যান্ডের পেসার। সৌম্য সরকারের সঙ্গে ৮৬ রানের জুটিতে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কাজটা শুরু করলেন মাহমুদউল্লাহ। এই বিশ্বকাপে সৌম্য তারুণ্যের ভয়ডরহীন পতাকা উড়িয়ে একঝলক তাজা বাতাস হয়ে এসেছেন বাংলাদেশ দলে। তবে সৌম্যর পিছু পিছু সাকিবও আউট হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ আবার অথই সাগরে।
৯৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে টলমল তরিটাকে বেয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা যাঁরা করলেন, সম্পর্কে তাঁরা ভায়রা। মাঝখানে মাহমুদউল্লাহর যখন খারাপ সময় আর মুশফিকুর ওয়ানডেরও অধিনায়ক, এমন সব কথাবার্তা হয়েছে যে, সম্পর্কটাকে দুজনের কাছেই বিষম বোঝা মনে হয়েছে। সেসবের জবাব ব্যাটেই দিচ্ছেন। তাঁদের গড়ে দেওয়া ভিত্তির ওপরই মাথা তুলে দাঁড়াল বাংলাদেশের স্বপ্নসৌধ। এই বিশ্বকাপে চার ম্যাচে তিনবার জুটির রেকর্ড নতুন করে লিখেছে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাকিব-মুশফিকের ১১৪ ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম-মাহমুদউল্লাহর ১৩৯ ছাড়িয়ে কাল মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের ১৪১।
অ্যাডিলেড ওভালের ব্যাটিং-স্বর্গ উইকেট আর উইকেটের আড়াআড়ি ছোট বাউন্ডারি মাথায় রেখে বিরতির সময় আলোচনা হচ্ছিল, বাংলাদেশের স্কোরটা ২০-২৫ রান কম হয়ে গেল কি না! তখন তো আর কেউ জানে না, নিজেদের চেনানোর জন্য এই ম্যাচটাই ঠিক করে রেখেছেন বাংলাদেশের পেসাররা!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৮:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

“বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো উচিত হয়নি “এই কথা রিজভী কোন মুখে বলে ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫১



অবাক হয়ে রিজভীর কথা শুনছিলাম উনি কি নিজেকে মহান প্রমান করার জন্য এই কথা বললেন নাকি উনি বলদ প্রকৃতির মানুষ সেটাই ভাবতেছি। উনি নিশ্চই জানেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাকে খুন করে, মায়ের জন্য লোক দেখানো ডিজিটাল ভালোবাসা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১২ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৪৮


বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় প্রেমিকার চাহিদা পূরণ করতে হাত খরচের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে উম্মে সালমা খাতুন (৫০) নামের এক গৃহবধূকে হত্যা করে তার ছোট ছেলে সাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা নিয়োগ কারা দেয় ?

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনের সফল পরিসমাপ্তির পর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা ডক্টর ইউনুসকে দেশের ক্ষমতা গ্রহন করার আহবান সেই শহীদ মিনার থেকেই জানিয়েছিল। ডক্টর ইউনুস প্রথমে অরাজি হলেও পরে ছাত্রদের হাজারো অনুরোধের মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলার একমাত্র অভিশপ্ত রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগ

লিখেছেন জ্যাকেল , ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫০

২৩শে জুন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব জনাব সিরাজ উদ দৌলা ব্রিটিশদের কাছ হেরে যান কেবলমাত্র মীরজাফর, জগৎশেট, রাজভল্লভ, ঘষেটিদের কারণে। বাংলার ইতিহাসে এই দিনটি একটি অভিশপ্ত দিন। এর পর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের গ্রামের বিয়ের বর দেখা

লিখেছেন প্রামানিক, ১৩ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:১৩


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

একদিন পরেই শুক্রবার। সকালেই বাবাকে ঐ বাড়ির ঘরবর (অর্থাৎ বর দেখা অনুষ্ঠানকে আঞ্চলিক ভাষায় ঘরবর বলে) উপলক্ষে ডাকা হয়েছে। বাবা সকালে গিয়ে বর দেখা উপলক্ষ্যে কি কি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×