শান্ত, আমি করজোড় করে, নতজানু হয়ে ক্ষমা ভিক্ষা করতে এসেছি আজ। আমাদের তুই ক্ষমা কর বাবা, আমরা তোর জন্য সুন্দর একটা অভয়ারন্য তৈরি করতে ব্যার্থ হয়েছি বারংবার। উল্টো আমাদের স্বার্থের লড়াইয়ে তোকে বলি করছি প্রতি নিয়ত। গত দিন তুই যখন মাথা ও পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে, ভাতের বাটি নিয়ে রাস্তায় পড়ে ছিলি, তখন আমরা দল বেঁধে ১৫ মিনিট ধরে, ফটো সেশন করেছি তোর। না তুই কোন সেলিব্রেটি ছিলি না, তুই তো ছোট লোকের বাচ্চা। ছোট লোকের বাচ্চারা সেলিব্রিটি হয় না, কিন্তু সে সময় তুই চরম হট একটা নিউজ, যা তোর কল্পনাতেও নেই। আগামী কালের পত্রিকাগুলোতে শিরোনাম হবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি শিশু ‘শান্ত’ অথবা কি দোষ ছিল শান্ত’র। তুই বুজছিস কি রকম নিউজ এটা? যাক তুই ছোট মানুষ, আবার ছোট লোকের বাচ্চা এসব বুঝবি না, কিন্তু পরে আমরা তো তোকে উদ্ধারে গিয়েছি, যখন জুয়েল নামের এক শিশু তোকে কোলে তুলে নিয়েছিল, তখন আমরাও তো গিয়ে তোকে হাসপাতালে দিয়ে এসেছি, এ ব্যাপারে আমাদের দোষ দিতে পারবি না তুই, আমরা যা করেছি, সেটা অনেক। আমরা না গেলে, তুই কিন্তু মরে যেতে পারতি এটা তোকে স্বীকার করতেই হবে। অবশ্য মরে গেলে নিউজের মানটা আরো একটু ভালই হত, আচ্ছা যাক যা হবার তা হয়েই গেছে……………………..
এই যে আমি, এখন তোর জন্য শোঁকগাথা লিখছি, এখানেও আমার স্বার্থ জানিস? আমি ব্লগে লিখছি, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছি, হয়তো বা কোন পত্রিকাতেও ছাপা হবে, তোর জন্য আমার শোঁকগাথা। মানুষ পড়বে, আমাকে বাহবা দিবে, কমেন্ট করবে, শেয়ার হবে ওয়ালে ওয়ালে, উঁচু দরের লেখকদের কাঁতারে ঠাঁই হবে আমার। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাবো, আমার মধ্যে ‘আমি কি হনুরে’ জাতীয় ভাব আসবে। ২ দিন, সর্বোচ্চ ২ দিন। এরপর তোকে ভূলে, নতুন কোন শান্ত’র খবরের জন্য রেডি হব। স্বার্থলোভী এইসব ভাই, বোন, পিতা, মাতা, মামা, খালা, চাচাদের তুই ক্ষমা কর বাবা………………. আমাদের ক্ষমা কর……………………