বেশ কিছুদিন ধরে ব্লগ ও অনলাইন মিডিয়ায় সুনীতা পালের কথা শুনে আসছি। সামোহারেও রাসেল (.......) একটা লেখা দিয়েছেন। Click This Link ভাইয়ের লেখা থেকে সুনীতা পালের খোঁজে লিঙ্ক ধরে আগালাম। তার ভাষায় আমারও মেজাজ বিলা হয়ে গেল। রাসেল ভাই অগ্রসর পাঠক হিসেবে যা ২৫ তারিখে আঁচ করেছেন। তারই খোঁজ পেলাম ৩ সেপ্টেম্বরের আমার দেশে। সুনীতা পালের আরেকটি লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তারা একটি সংবাদ ছেপেছেন। সংবাদটি পড়ে বিষয়টাকে চেনা মনে হলো। আবার গ্লোবাল পলিটিশিয়ানের দারস্থ হলাম। লেখাটি পড়লাম। সুনীতা পালের পরিচয় জানার জন্য কিছু অনুসন্ধান করলাম। ১৯৫২ সালে ভারতের কোচিনে জন্ম এই ভদ্রমহিলার। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় বিশেষজ্ঞ বলা যায়। বাংলাদেশ নিয়ে লিখেছেন অনেক। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে, বাংলাদেশ বিষয়ে এহেন একজন বিশেষজ্ঞের কথা কেন আমরা এতদিন জানতাম না। হোন তিনি বাংলাদেশ বিরোধী একজন লেখক কিন্তু তারপরও বাংলাদেশ নিয়ে এত ধারণা যার তার বিষয়ে কিছু খোঁজখবর তো আমাদের কাছে থাকার কথা ছিল। মনে করে দেখলে, ২০০৫/২০০৬ এর আগে সুনীতা পাল নামের কোনো লেখকের কথা শোনা যায় না। অর্থাৎ একদম বৃদ্ধ বয়সে এসে সুনীতা পাল বাংলাদেশ বিষয়ে লিখতে শুরু করেছেন। অথচ বাংলাদেশে তার কথা কেউ জানেন না।
এখন অবশ্য সবাই জেনে গেছেন। কারণ, তিনি বাংলাদেশের দুটি মিডিয়া নিয়ে কথা বলেছেন। এবং সে দুটি মিডিয়া খুব বিখ্যাত ও জনপ্রিয়। মিডিয়া দুটি হলো, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার। আমেরিকান ক্রনিকলে ছাপা এই লেখায় সুনীতা পালের অভিযোগ মারাত্মক। Click This Link অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার উলফা নেতা অনুপ চেটিয়ার টাকায় প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশের প্রধান একটি ইংরেজি সংবাদপত্রের সঙ্গে উলফা সংযোগের অভিযোগ করে সুনীতা পাল প্রথমে হৈ চৈ ফেলেছেন আসামে। আসামের দৈনিক পত্রিকা উলফা হ্যাজ স্টেকস ইন বাংলা মিডিয়া' নামে একটা খবর ছাপে। এই খবর ছাপার পর ডেইলি স্টার পত্রিকার মাহফুজ আনাম একটি প্রতিবাদ পাঠান। সে প্রতিবাদও সেখানে ছাপা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের পত্রিকা আমার দেশ প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের ওপর তাদের পূর্বতন রোষ থেকে ওই খবর ও সুনীতা পালের লেখার সূত্র ধরে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। প্রথম আলো সে খবরের প্রতিবাদ করে। কিন্তু প্রতিবাদ ছাপানোর নামে আমার দেশ সেই প্রকাশিত সংবাদটিকেই নতুনভাবে পরিবেশন করে।
এই আলোচনা পাল্টা আলোচনার সূত্র ধরে এখন বাংলাদেশে অনেকেই সুনীতা পালের নাম জেনে গেছেন। বলা চলে তিনি এখন বিখ্যাত কলামিস্ট। কিন্তু কোথাও সুনীতা পাল বা তার উপস্থিতির কোনো নজির পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাপারটা সবাইকে অবাক করেছে। বাংলাদেশ বিশেষজ্ঞ সুনীতা পাল বাংলাদেশের আইনজীবী তানিয়া আমির সম্পর্কে লিখেছেন। সে লেখার লিঙ্ক এ ব্লগেও দেয়া হয়েছে। Click This Link আল কায়দার উপস্থিতি নিয়ে তিনি নিয়মিত লেখেন। বাংলাদেশ কেন ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় না এনিয়েও তার মাথাব্যথার অন্ত নেই। বাংলাদেশ বিষয়ে এমন জানাশোনা যে ব্যক্তির বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে তার কিছু না কিছু যোগাযোগ তো থাকতেই হয়। স্বাভাবিক এই প্রশ্ন থেকেই আবার অনুসন্ধান চলে। যোগাযোগের সূত্রটি কিছুটা বের হয়ে আসে।
ব্লগের কেউ জানেন কি না জানি না। বাংলাদেশের একটি পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন। ইংরেজি পত্রিকাটির নাম উইকলি ব্লিটজ।http://www.weeklyblitz.net/ ব্লিটজ পত্রিকাটির সম্পাদক সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী। সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী খুবই বিখ্যাত ব্যক্তি। Click This Link বিএনপি আমলে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট সন্দেহে যাকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তিনিই সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী। আওয়ামী লীগ আমলে শেখ হাসিনাকে ইমেইলে হত্যার অভিযোগ দেয়ার কারণেও তাকে গ্রেফতার হতে হয়। সুনীতা পাল এই শোয়েব চৌধুরীরর পত্রিকার নিয়মিত লেখেন। আরও মজার বিষয় শোয়েব চৌধুরীকে নিয়ে তিনি একাধিক লেখা লিখেছেন। আরও মজার বিষয় হলো, সুনীতা পাল যেসব পত্রিকায় লেখেন যেমন আমেরিকান ক্রনিকল বা গ্লোবাল পলিটিশিয়ান সেসব পত্রিকার নিয়মিত লেখকদের মধ্যে সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী অন্যতম। সুনীতা পাল ও সালউদ্দিন শোয়েব চৌধুরীর লেখার বিষয়, আগ্রহ প্রায় একই। সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী যেখানে বাংলাদেশ বিষয়ে নরম, সেখান্ই সুনীতা পাল কঠোর। সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী ও সুনীতা পাল দুজনেই চান বাংলাদেশ ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিক এবং দেশটির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করুক।
বাংলাদেশে কে কবে কোথায় ইসরাইল বিরোধী বক্তব্য রেখেছেন তা একই সঙ্গে সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী ও সুনীতা পাল জেনে যান। সুনীতা পালের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলে তার জানার কথা। শোয়েব চৌধুরী নিজে সুনীতা পাল যদি না হন তবে তিনি সুনীতা পালের সোর্স এটি মোটামুটি নিশ্চিত।
সুনীতা পাল ও সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী যা করেন করুন। কিন্তু বাংলাদেশের আমার দেশ পত্রিকাটি কেন প্রো-ইসরাইলি, এন্টি বাংলাদেশ এলিমেন্টকে উৎসাহ দিচ্ছে। তাদের সোর্স থেকে খবর পরিবেশন করছে?
আর ব্লগের কুখ্যাত শিবির নেতাই বা কোন স্বার্থ থেকে প্রো-ইসরাইলি সংস্থার খবরকে এভাবে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে যাচ্ছে? Click This Link