পর্ব- ২
২৩/১০/২০১৩ রাত ১০ টা, সোহাগ পরিবহনের আরামবাগ কাউন্টারে বসে আছি গাড়ি আসার অপেক্ষায়। ঢাকা টু বেনাপোল টিকেট নিল ৫৫০ টাকা। টিকেট কেটেছি আগের দিন সন্ধায়। গাড়ি আসলো ২০ মিনিট পর, ঝটপট উঠে পরলাম, বিদেশ যাচ্ছ বলে কথা। তাও আবার ট্রুরিস্ট ভিসায়। হাতে গনা কয়েকজন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে দিল গাড়ি। ওমা একটু পর চাকা পামচার হওয়ার বিরাট শব্দ, গাড়ি থামিয়ে চেক করে দেখে আমাদেরটাই।গাবতলী কাউন্টারে এসে গাবতলীর যাত্রী আর গাড়ির বাম পাশের পিছনের চাকা পাল্টিয়ে নিল। আমি গাড়িতে ঘুমাতে পারি ভালো। গাবতলী কাউন্টার থেকে কেনা কিছু শুকনা খাবার খেয়ে ঘুম দিলাম, ঘুম ভাংলো বেনাপোল এসে। গাড়ি থেকে নামার আগেই দেখি দালাল মামাদের টানাহেচরা। ব্যাগ এক মামা আর আমাকে আরেক মামা।
আমিঃ- মামা আমার লোক আছে।
দাললঃ- কে? কার ঘরে যাবেন? (অফিসকে ওরা ঘর বলে )
আমিঃ- মানিব্যাগ থেকে কাড বের করে বলি জসিম এন্টারপ্রাইজে যাব।
রাস্তায় বের হয়ে হয়রানি থেকে নিজেকে বাচাতে গুগুল মামার কাছ থেকে সব তথ্য নোট করে প্রিন্ট আউট ও প্লান্ট করে নিয়েছি। দালালের হাত থেকে ছুটে সোহাগ কাউন্টার থেকে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। এখানে এসে দেখি বিরট লম্বা লাইন, তাও আবার কয়েক পেচ মারা। বাড়িতে ঠিক করেছি পাসপোট ও ভিসা যেহুতু দালালের সাহায্য নেই নি সিমান্তেও নেবনা। কিন্তু কিছু করার নেই। লাইনে দাড়ালে অনেক সময় লাগবে তাই কল দিতে হল জসিম এন্টারপ্রাইজে। আমাকে ওদের অফিসে বসিয়ে ভ্রমন ট্রেক্স সহ পাসপোটের সব কাজ শেষ করে আমাকে লাইনে দাড়িয়ে দিল ভারত প্রবেশর। কিছু সময় দেখলাম গেট খোলার আগে বিএসএফ ও বিজিপির কুচকায়াজ। ২০ মিনিটের মত সময় লাগলো ইমিগ্রেশন শেষ করতে।
ইমিগ্রেশন শেষে ডলার ভাংঙ্গিয়ে নিলাম ওদের ভারতের অফিস থেকে। বেশ কয়েকটি মানি এক্সচেন্জর অফিস আছে, মন পছন্দের অফিস থেকে ভাংঙ্গিয়ে নিতে পারেন। সময় অনেক হয়ছে চিন্তা করলাম নাস্তাটা এখানেই সারাযাক। যত ভারতের গভীরে যেতে থাকি ততই নাকে ধূপের গন্ধ আসতে থাকে। বিশাল
বিশাল সব গাছ মাথার উপরে। মনে হয় শত শত বছরের পুরানো গাছ। বাম পাশেই একটা ছোট হোটেলে বসে পরলাম ভারতীয় আটার রুটি খাওয়ার জন্য। রুটির সাথে সবজি নিলাম। অবশ্য সবজি ছারা অন্য কিছু নেই। সবজিটা অসাধারন হয়েছে, নানা রকম মসলার গ্রান, আর রুটি খোলা থেকে সরাসরি আমার প্লেটে আসায় সময় লাগলো খেতে। যারা বেনাপোল হয়ে ভারত যাবেন তারা একবার হলেও এখানে নাস্তা করবেন। একটা মহিলা ও তার ছেলে মিলে পরিচালনা করে। নাস্তা বিল হয়েছে ২০রুপি। বাড়ি থেকে প্লান করা কাগজে দেখে নিলাম কিভাবে শিয়ালদহ যাওয়া যায়। হোটেলের পাশেই কিছু অটো ডাকাডাকি করছে বনগা বনগা। কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম বনগা ভাড়া কত রুপি! ২৫ রুপি চাইল, ২০ রুপি দেব হবে, বলল উঠুন। মিনিট ২০ এর মধ্যে পৌছালাম বনগা ষ্টেশনে। প্রতি ৩০ মিনিট পর পর ট্রেন ছাড়ে শিয়ালদহের উদ্দেশে, আমি এসে দেখি অলরেডি একটা বসে আছে, যাত্রী কম থাকায় জানালার পাশের সিট নিলাম। ট্রেন ছাড়ার ২ ঘন্টায় পৌছে গেলাম শিয়ালদহ। আমরা তিন জন আসার কথা থাকলেও আমি একাই এসেছি। আজ এখানেই থাকুন, কিছু দিনের মধ্যেই আমি আবার আসব আমার লেখা বাকি ব্লগ নিয়ে ছবি সহ।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪১