somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইমামের পিছনে মুক্তাদীর সুরা ফাতিহা পড়া আর না পড়া - শেষ পর্ব

২২ শে জানুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৩য় পর্বঃ

বিবেক বুদ্ধি কী বলেঃ

১।

ইমামকে, অন্য সবার মত, সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত করার জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে, কিন্তু তাঁকে এও আদেশ দেয়া হয়েছে যে যাহরী সালাতে যেন তার তিলাওয়াত মুক্তাদী শুনতে পারে যে আদেশ শুধুমাত্র ইমামকে দেয়া হয়েছে অন্য কাউকে না।এখন মুক্তাদী যদি নিজেই তিলাওয়াতে নিমগ্ন থাকে, তাহলে তারা ইমামের কেরাত শুনায় মনোযোগী হতে পারবে না।তাহলে বিষয়টি এমন দাঁড়ায় যে, শরীয়াতে ইমামকে এমন জামায়াতকে নেতৃত্ব দিতে বলা হয়েছে যে জামাতের মুক্তাদীরা তার তিলাওয়াতে মনোযোগীই না যেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং শরীয়াত কখনো এ ধরণের আদেশ দিতে পারে না।

২।

পূর্বেই বলা হয়েছে যে, সুরা ফাতিহার একটি অংশে প্রার্থনা আছে যা পাঠ করনে ওয়ালা পড়ার সময় করে থাকে।সবাই এই প্রার্থনাটি নিজেই নিজের জন্য করে থাকে শুধুমাত্র মুক্তাদী ব্যতীত যেটা ইমাম করে থাকে সবার পক্ষ থেকে।

এখন আমাদের প্রতিদিনের জীবন থেকে আমরা দেখতে পাই, যখন অনেক মানুষ একত্র হয়ে বা কোন গ্রুপ বা কোন সংগঠন প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে কোন বিষয়ে আবেদন করতে যাই, তারা কিন্তু প্রত্যেকে আলাদা আলাদা ভাবে আবেদন করে না বরং তাদের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি আবেদন পেশ করে থাকে।সে তাদের পক্ষ থেকে সব ধরণের অনুরোধ ও আবেদন দরখাস্ত পেশ করে কিন্তু এজন্য অন্যদের কেউ তাকে দোষারুপ করে না যদি না সে ভুল করে।এরপরও যদি কেউ তার বিরোধীতা করে এবং বলে যে কেন শুধু একজন আবেদন করেছে,আমিও করব, তখন বাকী সবাই সে বিরোধীতা কারীকে দোষারুপ করে এবং অজ্ঞও বলে।

ঠিক তেমনিভাবে মুক্তাদীদের পক্ষ থেকে ইমাম মহান আল্লাহর দরবারে সবার জন্য মিনতি সহকারে প্রার্থনা করে।আর মুক্তাদী নীরব থেকে সেই প্রার্থনা শুনে।হ্যাঁ, তারপর যখন তার প্রার্থনা শেষ হয়,তারা সবাই ইমামের পিছনে থেকে আমীন বলে সেই প্রার্থনাকে অনুমোদন করে (তাদের পক্ষ থেকে সম্মতি প্রদান করে এবং কবুল করার আবেদন জানায়) যেভাবে কোন দল বা সংগঠনের সদস্যরা আবেদনপত্রে সই করে সম্মতি দেয়।

৩।

কেরাত যা সালাতে পাঠ করতে বাধ্য,সেটাকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়ঃ প্রথমত সুরা ফাতিহা পাঠ করা এবং দ্বিতীয়ত সুরা ফাতিহার পর কোরআনের কোন সুরা বা অংশ তিলাওয়াত করা।

পূর্বের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারি যে, কোন উলামাই এ কথা বলেননি যে “ মুক্তাদী দ্বিতীয় অংশ তিলাওয়াত করতে বাধ্য ”, বরং তার পরিবর্তে তারা বলেছেন, “ ইমামের কেরাত তাদের জন্য যথেষ্ট এবং পর্যাপ্ত ”। তাহলে কেন কিছু উলামা এ কথা বলেন যে, প্রথম অংশ অর্থাৎ সুরা ফাতিহা পাঠ মুক্তাদীর জন্য আবশ্যক কিন্তু দ্বিতীয় অংশ অর্থাৎ কোরআনের কোন সুরা বা অংশ তিলাওয়াত আবশ্যক না? ইমামের দ্বিতীয় অংশের কেরাত যেমন মুক্তাদীর দ্বিতীয় অংশের জন্য যথেষ্ট ঠিক তেমনি ইমামের প্রথম অংশের কেরাত অর্থাৎ সুরা ফাতিহা পাঠও মুক্তাদীর প্রথম অংশের জন্য যথেষ্ট অর্থাৎ দুটি ক্ষেত্রেই ইমাম আর মুক্তাদীর জন্য একই আদেশ। সুতরাং ইমামের কেরাতই যথেষ্ট।

৪।

যদি কোন ব্যক্তি কোন কারণে দেরি করে আসে এবং ইমামকে রুকু অবস্থায় পায়,তাহলে তার জন্য জামাতে শরীক হওয়ার নিয়ম হলঃ সে প্রথমে তাকবীর বলবে,কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকবে,এক সেকেন্ডের জন্য হলেও, তারপর ইমামের সাথে রুকুতে শরীক হবে।এই রাকাতটা তার জন্য গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তাকে এই রাকাতটি পরে আলাদা ভাবে পড়তে হবে না।

প্রত্যেক ইমাম মুহাদ্দিসগণ এ বিষয়ে একমত যে যদি সে তাকবীর বা কিয়াম miss করে (করতে না পারে),তখন এই রাকাতটি তার জন্য অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে এবং তাকে শেষে এই রাকাতটি আবার পড়তে হবে।কিন্তু কোন স্কলার এই রকম মতামত দেন নি যে তার রাকাতটি গ্রহণ করা হবে না কারণ সে সুরা ফাতিহা পড়তে ব্যর্থ হয়েছে।এতেই প্রমাণিত হয় যে সুরা ফাতিহা পড়া মুক্তাদির জন্য ফরয নয় যেখানে তাকবীর বলা এবং কিয়াম করা ফরয। এতে এও প্রমাণিত হয় যে, ইমামের কেরাত মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট।

৫।

যদি ইমাম সালাতে কোন ভুল করে,সকল মুক্তাদীকে ইমামের সাথে সিজদাহ সাহু আদায় করতে হবে এবং যখন ইমাম সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে,তখনও মুক্তাদীকে সিজদাহ সাহু আদায় করতে হবে,যদিও এটা কোন সিরী নামাযের মধ্যে হয়ে থাকে যেখানে মুক্তাদী ইমামকে তিলাওয়াত করতে শুনে না (তবুও মুক্তাদীকে সিজদাহ সাহু আদায় করতে হবে)।অতএব ইমামের একটি মাত্র ভুল যদি সম্পূর্ণ জামাতের জন্য যথেষ্ট হতে পারে, তাহলে কেন ইমামের কেরাত তাদের সবার জন্য যথেষ্ট হবে না?

আপাত দৃষ্টিতে এই মতামতের বিরোধী হাদীসগুলোর সঠিক বিশ্লেষণঃ

কিছু সহীহ এবং দুর্বল হাদীস আছে যেগুলো আপাত দৃষ্টিতে দেখলে উপরে উল্লেখিত আয়াত এবং হাদীসগুলোর পরিপন্থী বলে মনে হয়।এ কারণে কিছু স্কলার ইমামের পিছনে কেরাত পড়াকে বাধ্যতামূলক প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন।

এসব হাদীসে অনেক তথ্য ও প্রমাণ আছে যা এ বিষয়ের সমস্ত সন্দেহ,ভুল বোঝাবুঝি ও ভুল ব্যাখ্যা দূর করবে এবং তাদের আসল অর্থ ও তাৎপর্য বের করে আনবে যা পূর্বে উল্লেখিত হাদীসগুলোর সাথে একমত পোষণ করে।

এই অংশে শুধুমাত্র কিছু গুরূত্বপূর্ণ ও ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ ও ব্যাখ্যা দেওয়া হবে,কারণ সব গুলোর বিচার বিশ্লেষণ লিখতে গেলে হয়ত পুরো একটি বই লিখতে হবে।যাই হোক, সবার শেষে কিছু উপকারী ও অধিকতর তথ্যপূর্ণ কিতাব ও বইয়ের নাম উল্লেখ করা হবে তাদের জন্য যারা এ বিষয়ে আরও অধিকতর জ্ঞান অর্জন করতে চান এবং এ বিষয়ের আরও গভীরে ঢুকতে চান।

০১।

উবাদাহ বিন সামিত (রঃ) বর্ণনা করেন,রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, “ যে ব্যক্তি সুরা ফাতিহা পড়ল না,তার নামায হল না। ” অন্য একটি রেওয়ায়েতে তিনি বলেন, “ যে ব্যক্তি সুরা ফাতিহা এবং অন্য কিছু আয়াত পড়ল না,তার নামায হল না। ”

এটি একটি সহীহ হাদীস যেটির মাধ্যমে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয় যে মুক্তাদির জন্য সুরা ফাতিহা পড়া ফরয।যাই হোক, যদি এই হাদীসটির সঠিকভাবে বিশ্লেষন ও ব্যাখ্যা করা হয়,তাহলে উপরে উল্লেখিত আয়াত এবং হাদীসের সাথে তা সম্পূর্ণ মিলে যায় এবং সেখানে আর কোন অসংগতি থাকে না।

এটির ব্যাখ্যা বিভিন্নভাবে দেওয়া যায়। যেমনঃ

(i)

এই হাদীস অনুসারে ইমাম এবং মুক্তাদী উভয়ের জন্যই সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত বাধ্যতামূলক কারণ এটি একটি সাধারণ আদেশ(যা সবার জন্য হয়ে থাকে) যার ফলে ইমামের পাশাপাশি এখানে মুক্তাদীকেও বুঝানো হয়েছে। হানাফীরা এই হাদীসটিকে বাদ দেয় নি বা বাতিল করে নি, কিন্তু তারা বলে যে ইমামের কেরাতের পিছনে মুক্তাদী এই আবশ্যকতা থেকে অব্যাহতি পায় কারণ রসূলুল্লাহ (সঃ) এও বলেছেন যে ইমামের কেরাতই মুক্তাদির কেরাত।সুতরাং এটা ধরা হবে যে মুক্তাদী তার উপর অর্পিত দায়িত্ব এ হাদীসটির মাধ্যমে পূরণ করেছে(কারণ ইমামের কেরাত পড়া মানে মুক্তাদীর কেরাত পড়া)।

(ii)

যেহেতু কোরআনের আয়াত এবং সাথে অন্যান্য সহীহ হাদীসগুলোতে মুক্তাদীকে নীরব থাকা ও শুনার জন্য আদেশ দেয়া হয়েছে,সুতরাং মুক্তাদী এ বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পাবে এবং হাদীসটিতে শুধুমাত্র ইমাম ও মুনফারিদ (যে একাকী নামায পড়ে) এর জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে ব্যাখ্যা দেওয়া যায়।

(iii)

কিছু সহীহ হাদীস (যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে) মুক্তাদীর তিলাওয়াত করাকে নিষেধ করেছে।সুতরাং সে এই নির্দিষ্ট হাদীসের আদেশ ও বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পাবে।এই আদেশ ও বাধ্যবাধকতা শুধুমাত্র ইমাম ও মুনফারিদ (যে একাকী নামায পড়ে) এর জন্য।

(iv)

প্রথম রেওয়ায়েতে শুধুমাত্র সুরা ফাতিহার কথা উল্লেখ আছে এবং দ্বিতীয় রেওয়ায়েতে “ফাসাইদান” শব্দটিরও উল্লেখ আছে যার অর্থ “এবং অতিরিক্ত”। এখানে সবচেয়ে আশ্চর্য্যকর ব্যাপার এই যে যেসব স্কলার মুক্তাদীর জন্য সুরা ফাতিহা পাঠ আবশ্যকীয় বলে মতামত দেন তারা কিন্তু এ কথা বলেন না যে সুরা ফাতিহার সাথে সাথে অন্য আয়াতও অবশ্যই পাঠ করতে হবে, অথচ দ্বিতীয় রেওয়ায়েতে সুরা ফাতিহার পাশাপাশি অন্য কোন আয়াত পাঠের আবশ্যকীয়তার কথাও বলা আছে।এভাবে তারা যে কারণ ও ব্যাখ্যার মাধ্যমেই হোক না কেন অন্য কোন আয়াত পাঠ করাকে জরুরী বলেননি, ঠিক তেমনি সে রকম কারণে আমরা সুরা ফাতিহা ও অন্য কোন আয়াত, উভয়টি পাঠ করাকে মুক্তাদীর জন্য জরুরী বলি না।পার্থক্য শুধু এই যে, আমরা সম্পূর্ণ হাদীসটিকে বিবেচনা করেছি এবং উভয় অংশের জন্য (সুরা ফাতিহা এবং সাথে অন্য কোন আয়াত) একই আদেশের কথা বলেছি যে মুক্তাদী ইমামের কেরাতের মাধ্যমে উভয় অংশ পাঠ করা থেকে অব্যাহতি পাবে।অথচ অন্যান্য স্কলাররা শুধুমাত্র সুরা ফাতিহা পাঠ করাকে জরুরী বলেছেন, সাথে অন্য কোন আয়াত তিলাওয়াতকে জরুরী বলেন নি।যদি এই ব্যাখ্যা দেওয়া হয় যে, ইমামের সুরা ফাতিহার পরের অংশ তিলাওয়াত মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট, তাহলে আমরা এটাও বলতে পারি যে ইমামের উভয় অংশের তিলাওয়াতই মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট কারণ পূর্বে উল্লেখিত হাদীসে বলা হয়েছে ইমামের কেরাত মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট।

(v)

এই হাদীসটি মুক্তাদীকে আদেশ দেয় না,বরং ইমাম এবং মুনফারিদকে সুরা ফাতিহা তিলাওয়াতের আদেশ দেয়।পরের হাদীসে রসূলুল্লাহ (সঃ) এর একজন সাহাবী ঠিক এই মতটিই প্রদান করেন।ইমাম তিরমিযী হযরত যাবীর (রঃ) এর হাদীস সহীহ সনদে বর্ণনা করেন,যেখানে তিনি বলেন, “ যে ব্যক্তি একটি রাকাত পড়ল যেখানে সে সুরা ফাতিহা পড়ল না,তখন সেটি এমন যেন সে তা (নামায) পড়ল না,যদি না সে ইমামের পিছনে থাকে ।”

(তিরমিযী ৭১ : ১)

এটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, হাদীসের আদেশটি মুক্তাদীর জন্য নয়।
উপরোক্ত হাদীস সম্পর্কে ইমাম তিরমিযী ইমাম আহমদ এর মতামতও উল্লেখ করেছেন,

“ ইনি রসূলুল্লাহ (সঃ) এর একজন সাহাবী যিনি রসূলুল্লাহ (সঃ) এর ‘ যে ব্যক্তি সুরা ফাতিহা পড়ল না তার নামায হল না ’ এ কথার ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে এই আদেশ শুধুমাত্র একাকী নামায পড়নে ওয়ালার জন্য।”
(ই’লা’উস সুনান ৭৫ : ৪)

রসূলুল্লাহ (সঃ) এর হাদীসের অর্থ ও ব্যাখ্যা রসূলুল্লাহ (সঃ) একজন ঘনিষ্ঠ সাহাবীর চেয়ে কে বেশি ভাল দিতে পারে?

০২।

উবাদাহ বিন সামিত (রঃ) বর্ণনা করেন, “ আমরা রসূলুল্লাহ (সঃ) এর পিছনে ফজরের সালাত আদায় করছিলাম।তিনি তিলাওয়াত শুরু করলেন কিন্তু তাঁর পাঠ তাঁর জন্য কঠিন হয়ে পড়ে,তাই নামায শেষে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ তোমরা সম্ভবত ইমামের পিছনে কেরাত পড়ছিলে?’ জবাবে আমরা বলি, হাঁ, ইয়া রসূলুল্লাহ। রসূলুল্লাহ (সঃ) বললেন, ‘ সুরা ফাতিহা ব্যতীত অন্য কিছু পাঠ করবে না, কারণ যে এটি পড়বে না তার নামায হবে না। ’ ”

আবু দাঊদ,তিরমিযী এবং নাসাঈ একই রকম বর্ণনা পেশ করেন এবং আবু দাঊদের একটি রেওয়ায়েতে বলা হয়েছে, “ রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেন, ‘আমি এইরূপ চিন্তা করি যে, আমার সাথে তারা কোরআন পাঠে প্রতিযোগিতা করছে।আমি নামাযের মধ্যে যখন উচ্চস্বরে তিলাওয়াত করি,সুরা ফাতিহা ছাড়া পবিত্র কোরআনের কোন অংশ তিলাওয়াত করবে না।’ ”
(মিশকাত শরীফ ৮১ : ১, আবু দাঊদ,তিরমিযী,নাসাঈ থেকে)

অর্থাৎ মুক্তাদীকে সুরা ফাতিহা, যা আবশ্যকীয়, ছাড়া অন্য কোন কেরাত পড়তে হবে না।

অনেকগুলো কারণ আছে যেসবের জন্য এই হাদীসটিকে এই অর্থে গ্রহণ করা যাবে না অথবা এটিকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করতে হবে।

(i)

এই রেওয়ায়েতে রাবীদের তালিকায় মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক নামে একজন আছে যার সম্পর্কে কেউ কেউ ‘বিশ্বাসযোগ্য’ বললেও অধিকাংশ ‘আইয়ম্মা তুর রিজাল’ সরাসরি তার সমালোচনা করেছেন।সুলাইমান আত তাইমি এবং হিশাম তাকে ‘কাযযাব’ বলেছেন, ইমাম মালিক তাকে দাজ্জালদের মধ্যে ‘দাজ্জাল’ উপাধি দিয়েছেন।ইবনে যাহীর,ওয়াহাব ইবনে খালীদ,যাবীর ইবনে আবদিল হামিদ এবং দারু কুতনী প্রমুখগণও তার সম্পর্কে অনেক গুরূত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছেন।অতএব,এ রকম সনদ গ্রহণ করা সম্পূর্ণ অনৈতিক।

(ii)

দ্বিতীয়ত, এই সনদে অনেক বিভ্রান্তি আছে।মাঝে মাঝে মাখুল মুহাম্মদ ইবনে রাবী থেকে হাদীস বর্ণনা করেন,এবং মাঝে মাঝে নাফি ইবনে মুহাম্মদ থেকে,কিছু সংখ্যক মাত্র।নাফি ইবনে মুহাম্মদ সম্পর্কে স্কলাররা,যেমন ইবনে আবদিল বার, তাহাবী, এবং ইবনে কদামাহ বলেছেন যে, তিনি অপরিচিত।যেহেতু এই বিষয়ে বিপুল সংখ্যক হাদীস আছে যা ত্রুটিহীন, সেহেতু উপরোক্ত হাদীসের প্রয়োগ এখানে উচিত নয় কারণ এটি পূর্বের হাদীসগুলোর বিরোধী বা সেগুলোর সাথে অসংগতিপূর্ণ।

(iii)

এই হাদীসটি মা’লুল এবং একে উবাদাহ (রঃ) এর উপর মাওকুফও বলা যায়, মারফূ না।

ইবনে তাইমিয়াহ বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন,

“ মুহাদ্দিসগণের কাছে বিভিন্ন কারণে এই হাদীসটি মা’লুল। ইমাম আহমদ এবং অন্যান্যরা বলেছেন, হাদীসটি দুর্বল। এই দুর্বলতা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা অন্য জায়গায়(একই বই) উল্লেখ রয়েছে এবং সেখানে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে (প্রমাণ করা হয়েছে) যে রসূলুল্লাহ (সঃ) এর প্রকৃত সহীহ হাদীসটি হল, “ উম্মুল কোরআন ছাড়া কোন সালাত নেই ।” এটি বুখারী ও মুসলিমে উল্লেখ আছে এবং যুহরী এটি মুহাম্মদ ইবনে রাবীর মাধ্যমে উবাদাহ (রঃ) থেকে বর্ণনা করেন। এই হাদীসে (২ নম্বর যা তিরমিযীতে ২য় ব্যাখায়) তিনি বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ (সঃ) ফজরের সালাত আদায় করলেন কিন্তু তিলাওয়াত তাঁর জন্য কষ্টকর হল, তাই সালাত শেষে তিনি বললেন, “ তোমরা ইমামের পিছনে তিলাওয়াত করছিলে ! ” আমরা বললাম, “ হ্যাঁ ।” রসূলুল্লাহ (সঃ) আদেশ দিলেন, “ উম্মুল কোরআন ব্যাতীত কোন কিছু তিলাওয়াত করবে না, কারণ যে এটি তিলাওয়াত করবে না তার জন্য কোন নামায নেই ।”

এই হাদীসের শব্দগুলোর বাহ্যিক দৃষ্টিতে দেখে কিছু সিরিয়াবাসী ভুল করে বসে। বাস্তবতা এই যে উবাদাহ ইবনে সাবিত (রঃ)তখন বায়তুল মুকাদ্দাস এর ইমাম ছিলেন যখন তিনি এই হাদীসটি বর্ণনা করেন। সিরিয়াবাসী বিভ্রান্তিতে পড়ে (ভুল করে) এটিকে মরফূ ধরে, যেখানে এটি শুধুমাত্র উবাদাহ (রঃ) এর উপর মাওকূফ ছিল।”
(ফতওয়াহ ২৮৭ : ২৩ )

ইবনে তাইমিয়াহ যেহেতু এ রকম বলেছেন, সেহেতু এটি যেরকম সেটাকেই ধরে নিতে হবে। অতএব, এই হাদীসটি কোন প্রমাণ বা দলীল হিসেবে থাকতে পারে না।

(iv)

যদি, আমরা কিছু সময়ের জন্য এই হাদীসটিকে সহীহ বলে ধরে নিই, তাহলে রসূলুল্লাহ (সঃ) এর “ তোমরা সম্ভবত ইমামের পিছনে তিলাওয়াত করছিলে ” শব্দগুলো বুঝায় যে তিনি তিলাওয়াত করাকে আদেশ দেননি, এবং তিলাওয়াত করাটি তার অনুমোদনেও হয় নি।অধিকন্তু যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তাঁরা ইমামের পিছনে তিলাওয়াত করছিলেন কি না তখন শুধুমাত্র কিছু সাহাবীর হ্যাঁ সূচক জবাব প্রমাণ করে যে এটি সবার এবং সব সাহাবীর সাধারণ কাজ বা অভ্যাস ছিল না (অর্থাৎ সবাই তিলাওয়াত করতেন না) এবং এমনকি যারা এটি (তিলাওয়াত) করেছেন, সম্ভবত এর (তিলাওয়াত করার) নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কেক তারা অসচেতন ছিলেন।

(v)

এই হাদীসটিকে ব্যাকরণগতভাবে বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাব যে, এই হাদীসটিকে মুক্তাদীর জন্য সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত করা জরুরীর প্রমাণ হিসেবে দাঁড় করানো যায় না।এর কারণ হল ব্যাকরণের নিয়ম অনুসারে, ‘লা’ (সনদে উল্লেখিত) শব্দটি একটি নেতিবাচক অনুজ্ঞাসূচক শব্দ এবং যা যা এই নিষেধাজ্ঞা থেকে বহির্ভূত (‘ইলা’ শব্দ দ্বারা) শুধুমাত্র তাই অনুমতিযোগ্য হবে তবে তা করা বাধ্যতামূলক হবে না। যেহেতু সুরা ফাতিহা এর বহির্ভূত সেহেতু এটি নিছক অনুমতিযোগ্য হবে কিন্তু বাধ্যতামূলক হবে না। রসূলুল্লাহ (সঃ) এর প্রথম যুগে এটি কিছু সময়ের জন্য অনুমতিযোগ্য ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে এটি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং সাহাবারা ইমামের পিছনে সুরা ফাতিহা তিলাওয়াত করা থেকে বিরত থাকলেন, হাদীস ০১ এবং ০২ এর ব্যাখ্যাতে যা বলা আছে।

০৩।

আবু হুরায়রা (রঃ) বর্ণনা করেন যে রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, “ যে ব্যক্তি সালাত আদায় করল কিন্তু উম্মুল কোরআন পড়ল না, তার সালাত অপরিপূর্ণ।”

হাদীসের প্রেরক আবু হুরায়রা (রঃ) কে জিজ্ঞেস করেন, “ আমি মাঝে মাঝে ইমামের পিছনে থাকি (সুতরাং তখনও কি তিলাওয়াত করব?) ।আবু হুরায়রা (রঃ) নির্দেশ দিলেন, “ মনে মনে তিলাওয়াত করবে।” ”
(তিরমিযী শরীফ ৭১ : ১)

এই হাদীসে ২টি অংশ রয়েছে, প্রথম অংশটি হল মারফূ যেখানে রসূলুল্লাহ (সঃ) নিজেই সুরা ফাতিহার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। আর দ্বিতীয় কথাটি আবু হুরায়রা (রঃ) এর। এই দ্বিতীয় অংশ থেকে ইমামের পিছনে সুরা ফাতিহা পড়ার অত্যাবশ্যকতা প্রমাণের চেষ্টা করা হয়।

এই সনদের প্রথম অংশ ১ নং হাদীসের মত প্রায়(যা কিছু আগে বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং এই বিষয়ের উপর বিভিন্ন উত্তর দেয়া হয়েছে)।অতএব, যেসব বিশ্লেষণ ওখানে করা হয়েছে তা এখানকার জন্যও প্রযোজ্য। প্রকৃত উত্তর এবং ব্যাখ্যা হলঃ ইমামের কেরাত মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট, অতএব, মুক্তাদী সুরা ফাতিহার যে বাধ্যবাধকতা আছে তা স্বয়ংক্রীয়ভাবেই পূরণ করছে।

হাদীসের ২য় অংশের ব্যাখ্যা নিম্নরূপঃ

(i)

এটি মওকূফ এজন্য যে আবু হুরায়রা (রঃ) এর নিজের বাণী এটি এবং রসূলুল্লাহ (সঃ) এর কাছ থেকে বর্ণিত না।তাই, এটি গ্রহণ করা যাবে না কারণ এটি শুধুমাত্র একটি মওকূফ সনদ, অন্য সহীহ মরফূ হাদীসগুলোর পরিপন্থী যেগুলো এই হাদীসের চেয়ে অধিকতর শ্রেয়।

(ii)

“ ফি নাফসিক ” শব্দের প্রকৃত অর্থ হল, “ মনে মনে পড় এটি, গভীরভাবে চিন্তা কর এবং মুখে উচ্চারণ কর না ।” কোন সন্দেহ নেই, যদি মুক্তাদী ইমামের তিলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকে, তবে সে গভীরভাবে চিন্তাও করতে থাকবে (চিন্তার মধ্যে থাকবে)।

(iii)

“ তিলাওয়াত কর এটি যখন তুমি একাকী সালাত আদায় করছ ” এই অনুবাদ বা শব্দগুলো দ্বারাও এটি প্রকাশ করা যেতে পারে, এবং একটি হাদীসে কুদসী, যেখানে একই রকম আরবী শব্দ এসেছে, এই ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।

আল্লাহ পাক বলেন, “ যদি বান্দা আমাকে স্মরণ করে যখন সে একাকী থাকে (প্রকৃত শব্দটি হল ফি নাফসিহি), আমি তাকে স্মরণ করি একইভাবে, আর যদি সে আমাকে স্মরণ করে কোন মজলিসে (যখন অনেক মানুষ থাকে), তবে আমি তাকে এর চেয়ে বড় মজলিসে স্মরণ করি।”

কোন মজলিসে অনেক লোকের সাথে থাকার বিপরীত হল একাকী থাকা। সুতরাং, আবু হুরায়রা (রঃ) যা বলেছেন তার অর্থ দাঁড়ায়, “ শুধুমাত্র যখন তুমি আলাদাভাবে নামায আদায় করবে,তোমাকে তখন সুরা ফাতিহা অবশ্যই পড়তে হবে। ”
এভাবে, “ ফি নাসফিক ” এর অর্থ ধরে নেয়া যায় , “ যখন তুমি একাকী ।”

উপরোক্ত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের শেষ পর্যায়ে এসে আমরা খুব সহজে এবং নিশ্চিতভাবে পরিসমাপ্তি টানতে পারি যে, হানাফীদের মতের অনুকূলে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রমাণ থাকার কারণে তাদের মতামতটা সবচেয়ে শুদ্ধ বলা যায়। কোরআনের আয়াত এবং হাদীসের আলোকে এটি স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, মুক্তাদীকে ২টি বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হয়,যেগুলো হল তাকে চুপচাপ থাকতে হবে এবং মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।হাদীসের আলোকে এটি পরিষ্কার যে, ইমামের কেরাতই মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট।
যেহেতু প্রথম আয়াতটি, যখন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন যে কোন ধরণের শব্দ উচ্চারণ করা বা বলাকে নিষেধ করে, সেহেতু এটিকে একটি নিষেধাজ্ঞা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে এবং মুক্তাদীকে পুরোপুরি নীরবতা পালন করতে হবে,সেটা সিরী নামায হোক বা জাহরী নামায হোক। এখানে আর কোন প্রশ্ন অবশিষ্ট নেই যে কেন মুক্তাদীকে সিরী নামাযে চুপচাপ থাকতে হবে যেখানে ইমামের কেরাত শুনার কোম উপায় নেই। এটি পূর্বেই আলোচিত হয়েছে যে, প্রথম আয়াতটি ২টি আদেশ প্রদান করে, তার মধ্যে একটি হল নীরবতা পালন করা যা সিরী নামাযের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

হানাফী মাযহাব এই সমস্ত বিষয়গুলোকে বিবেচনায় আনে এবং পরিশেষে এই মতে পৌঁছে যা হাদীসের সবগুলো দিকই ব্যাখ্যা করে বা মেনে চলে, অতএব এই মতামতটিই কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও কাছাকাছি।

ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে বুঝার তওফীক দান করুন।আমীন।
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঠকানোটাই ভাল শিখেছি আমরা

লিখেছেন ফেনা, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৭



এই বিশাল মহাকর্ষীয় বস্তু সবকিছু নিজের দিকে টেনে নেয়—এমনকি আলোও পালাতে পারে না। কিন্তু কৃষ্ণ গহ্বরের ভিতরে কী ঘটে? সেখানে সময় ও স্থান কেমন আচরণ করে? এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরব বিশ্বে নারীরা অপমানিত? আমার অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬



বহুদিন ধরে একটি কথা শুনে আসছি—“নারীরা আরব দেশে অসম্মানিত অবস্থায় থাকে।”
কিন্তু আমি আরব দেশে গিয়েছি, থেকেছি, এবং প্রায় দুই মাস ধরে একাধিক জেলায় ঘুরেছি।
সত্যি বলছি—আমি সেখানে কোথাও নারীদের অসম্মানিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় দাবিদাওয়া নিষ্পত্তি সংস্থা : অরাজকতার পালে নতুন হাওয়া!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:০৩


বাংলাদেশে আজকাল দাবি না জানালে কেউ আর মানুষ থাকে না—ছাত্র, শিক্ষক, গৃহিণী, পুলিশ, পিয়ন, কবি, কুস্তিগির, সবাই 'অধিকার' চায়। তবে অধিকার মানে এখানে মোটেই দায় বা কর্তব্য নয়, বরং ছিনিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্পা এবং দেহ ব্যবসায়ীদের কথা শুনলে রেগে যাবেন না

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:৪৯



পুরো পৃথিবীতে স্পা এর সংখ্যা ১ লক্ষ ৮১ হাজার। এইসব স্পা-গুলোর বেশির ভাগই গড়ে উঠেছে ইউরোপে। এশিয়া - প্যাসিফিকের দেশগুলোতেও স্পা-এর সংখ্যা কম নয়। ৫১ হাজারেরও বেশি। বাংলাদেশে স্পা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার মিরর ডোল, নিজের মনের অশান্তি অন্যের উপর চাপিয়ে দিয়ে ফ্যাসিস্টের মতো আচরণ করবেন না

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ২:৩৫

ব্লগার মিরর দৌলাকে বলছি।
আপনাকে কিছু কড়া কথা আজ বলবো। ব্লগে বর্তমানে আপনার কোন অবদান নেই। সামুর যে ব্লগপেইজটা আপনি চালান, সেখান থেকে সব পোষ্ট আপনি ড্রাফটে নিয়েছেন। সেটা আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×