somewhere in... blog

ঠগী (১ম অংশ)

২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





নার্সটি ভাবলেশহীনভাবে ফর্মটি এগিয়ে দেয়।নাদের পুরো ফর্মটি একবার পড়ে নেয়।তারপর এগিয়ে দেয় শামার দিকে।শামা সময় নিয়ে ফর্মটি পড়ে।পড়া হয়ে গেলে নাদেরের কাছে কলম চেয়ে নেয়।ফর্মে গোটা গোটা অক্ষরে লেখে, আনিকা শামা।স্বামীর ঘরটি ফাঁকা রাখে।সই করে ফর্মটি নার্সের দিকে এগিয়ে দেয়।নার্স ফর্মটি পড়া শেষ করে নাদেরকে জানায় তাকেও তার পুরো নাম লিখে সই করতে হবে।নাদের নিজের নাম লেখে-রাগীব নাদের।

ওটি ড্রেস পড়া একজন বয়স্ক নারী এগিয়ে আসে ওদের দিকে।
-আপনারা পরস্পরের কে হোন?স্বামী-স্ত্রী?
শামা আর নাদের চুপ করে বসে থাকে।ফ্যানের নীচে বসেও নাদের ঘামছে।
এবার নার্সটি মুখ খোলে।
-ফাহমিদা আপা এরা আমার খুব কাছের লোক।
ফাহমিদা আর কথা বাড়ায়না।নাদেরকে একটা স্লিপ ধরিয়ে দেয়।নাদের পড়ে দেখে ওতে লেখা জি-ক্যাটামিন।

নাদের ঔষধ এনে দেখে শামা নেই।আয়াকে প্রশ্ন করে,ওরা কোথায় গিয়েছে।আয়া জানায় ওটি রুমের দিকে।নাদের ওটি রুমের কাছে এসে শামাকে পেয়ে যায়।শামা নাদেরের চোখে চোখ রাখে।শামার কাছে মনে হয় নাদের চোখে রাজ্যের বিরক্তি।

-আর কতক্ষণ লাগবে?
-এই রুগীটি বেরুনোর পর।
শামা জানায়।
ভেতর হতে নারী কন্ঠের চাপা গোঙ্গানীর আওয়াজ ভেসে আসে।তারপর আবার নীরবতা।
-আমি বারবার বলেছিলাম কনডম সাথে আছে কিনা?না উনি জানালেন সমস্যা হবেনা।বাহিরে ফেলবে।আর এখন?কতদিনে স্বাভাবিক হবো কে জানে?
চাপা কন্ঠে রাগত স্বরে শামা বলে।
নাদের আশেপাশে দেখে নেয়,কেউ আছে কিনা।
-আমার একার দায় মনে হচ্ছে?তোমারও তো হুঁস ছিলোনা পরে।
-আমরাতো বিয়ে করতে পারতাম?
ওটির দরজা খুলে যায়।পরিচিত নার্সটি এগিয়ে আসে।নাদেরের হাত হতে ক্যাটামিন ইনজেকশন নেয়।তারপর শামাকে নিয়ে ওটির ভেতরে চলে যায়। নাদের হাঁটতে হাঁটতে ওয়েটিং রুমে চলে আসে।ওয়েটিং রুম ফাঁকা।দু’জন আয়া গল্প করছে।নাদেরকে দেখে নীচু স্বরে কথা বলতে থাকে।তবুও নাদের তাদের কথা শুনে ফেলে- “জন্ম দেবার সাধ্য নাই,চুদবার গোঁসাই”।নাদেরের কান ঝাঁ ঝাঁ করতে থাকে।সে ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে আসে।সিগারেট ধরায়।নিজেকে প্রশ্ন করে,-শামাকে কি সে ভালোবাসে?উত্তর আসে-না।

প্রেসক্রিপশন লিখা শেষ করে ফাহমিদা শামাকে বলে-দেখো মা,এই বয়সে ভুল হবে।তবে কিছু কিছু ভুল প্রকৃতি ক্ষমা করেনা।
শামা উত্তর করেনা।ওর প্রচন্ড রাগ হতে থাকে।কিছুক্ষণ পর নাদের শামার কাছে আসে।নাদের বিল পরিশোধ করে দেয়।



রমনা পার্কের আবহাওয়টা বড্ড গুমোট মনে হচ্ছে নাদেরের কাছে।শামার দিকে তাকানো যাচ্ছেনা।ফর্সা গাল লাল হয়ে আছে।
-দু’মাস হয়ে গেলো কিছ্ছু করতে পারছোনা?এরপর জানাজানি হলে আমার কি অবস্থা হবে ভেবে দেখেছো?
-আমি কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা?
-বিয়ে করো?
তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে শামা।
-বিয়েই কি এর সমাধান?
-তা নয়তো কি?
-আমি এখনও ছাত্র।তুমিও পড়ছো।পারিবারিকভাবে মেনে নেবে?
-তাহলে এখন আমি কি করবো?ফুর্তি করার সময় হুঁস ছিলোনা?
শামা হতাশ হয়ে বলে।
-আমি একা উপভোগ করেছি?তুমি একমাসের প্র্যাগনেন্ট জেনেও সবকিছুই চালিয়ে গিয়েছো।এখন শুধু আমাকে দোষারোপ করছো।
-তবে কাকে বলবো?দুলাভাইকে?একটা রাস্তা বের করো।
শামার কথা শুনে কিছুক্ষণ ঝিম মেরে থাকে নাদের।ভাবে তার প্রস্তাবটা কিভাবে গ্রহণ করবে শামা।
-চুপ যে?
শামা প্রশ্ন করে।
-আমার সাথে এক বড় ভাইয়ের পরিচয় আছে,তিনি ঔষধ কোম্পানীতে চাকুরী করেন।
-তো?
-আজ পাঁচ বছর ধরে উনি আজিমপুরে কাজ করেন।
-এর সাথে আমাদের সমস্যার সম্পর্ক কি?
শামা জানতে চায়।
-উনার সাথে আলাপ করেছিলাম।উনি বললেন,আজিমপুরে উনার এক ক্লিনিকের সাথে ভালো জানাশোনা আছে।
-আমাদের এই ব্যাপারের মধ্যে ক্লিনিক কেন?
-এবর্শন করানো হয় ওই ক্লিনিকে।খুব নিরাপদে।
ফ্যাঁসফ্যাঁসে গলায় নাদের জানায়।
-কবে যাবো?
শান্ত গলায় শামা নাদেরকে প্রশ্ন করে।
শামার প্রশ্ন শুনে নাদেরের কেমন একটা শিরশিরে অনুভূতি হয়।


হলে ফেরবার সময় নাদেরের মনে হতে থাকে,পুরো বিষয়টা শামার প্ল্যানিং এর মধ্যে ছিল।শুধু নাদেরকে দিয়ে বলিয়ে নিল

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:১২
৪৫৬ বার পঠিত
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এক্স লইয়া কি করিব

লিখেছেন আনু মোল্লাহ, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫১

যাচ্ছিলাম সেগুনবাগিচা। রিকশাওয়ালার সিট কভারটা খুব চমৎকার। হাতে সেলাইকরা কাঁথা মোড়ানো। সুন্দর নকশা-টকশা করা। নর্মালি এররকম দেখা যায় না। শৈল্পিক একটা ব্যাপার। শুধু সিটকভার দেইখাই তার-সাথে কোন দামাদামি না কইরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইলিশনামা~ ১

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৭


১৯৮৫ সালে ডক্টর মোকাম্মেল হোসাইন ‘ ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে যেই রিসার্চ পেপারটা( থিসিস – এম এস এর জন্য) জমা দিয়েছিলেন সেটা এখানে মিলবে;
[link|https://open.library.ubc.ca/cIRcle/collections/ubctheses/831/items/1.0096089|Spawning times and early life history of... ...বাকিটুকু পড়ুন

৯০% মুসলমানের এই দেশ? ভারতে কতগুলো মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির করা হয়েছে? গতকালও ভারতে মসজিদের পক্ষে থাকায় ৩ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৪২

সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার | SAD

লিখেছেন আজব লিংকন, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩



শীতকালীন সর্দি-কাশি, জ্বর, হাঁপানি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, কনজাংকটিভাটিস, নিউমোনিয়া কিংবা খুশকি মতো কমন রোগের কথা আমরা জানি। উইন্টার ডিসঅর্ডার বা শীতকালীন হতাশা নামক রোগের কথা কখনো শুনেছেন? যে ডিসঅর্ডারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্টগ্রাম আদালত চত্বরের একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে লিখছি

লিখেছেন শান্তনু চৌধুরী শান্তু, ২৬ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮



আজ চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে যে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তা নানান গুজব ও ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতা এড়াতে প্রকৃত ঘটনাটি নিরপেক্ষভাবে একজন প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে লিখছি।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×