somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার করিবার কিছু ছিল না - (দ্বিতীয় এবং শেষ অংশ)

১৭ ই জুন, ২০০৯ রাত ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম অংশ এইখানে

আমি সিদ্ধান্ত লইলাম, পরের দিন আগে আগে গিয়া হাজির হইবো, দেখিব কি হয়। সকাল দশটার মধ্যে আমি জায়গামত চলিয়া গেলাম। দেখি দস্তুর অবস্থা। লোকে লোকারণ্য। প্রার্থীদের সংখ্যার চাইতে উহাদের অভিভাবকদের সংখ্যাই বেশি। উনারা মুঠোফোনের মাধ্যমে এটা সেটা বলিতেছেন। আমি কয়েকজনকে প্রশ্ন করিয়া খুজিয়া পাইলাম, আমার ভাইভা দুপুর ১২টায়, ভূল বশতঃ রাত্রি ১২টা লিখা হইয়াছিল। যাহা হউক, আমি আমার জন্য নির্ধারিত কক্ষের সামনে অপেক্ষা করিতে লাগিলাম। যথাসময়ে মাস্টার্স এর প্রার্থীদের ভাইভা শুরু হইলো। একজন করিয়া রুমের ভিতরে যাইতেছে, আর ২/৩ মিনিটের মাথায় বাহির হইয়া আসিতেছে। আমার ভিতরে টেনশন কাজ করা শেষ, এখন ঝড় শুরু হইবে এমন উপক্রম। এমন সময়, আমার পূর্বপরিচিত একজন মেয়ে অন্য একটি কক্ষ থেকে বাহির হইয়া আসিতেছে দেখিয়া উহাকে জিঞ্গাসা করিলাম, সেও কি আমার মতো উহাদের ডাকে এইখানে আসিয়াছে কিনা? মেয়েটি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়িল। তারপর কথাপ্রসঞ্গে বাহির হইল তাহার ক্রম আমার একজন আগে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই তাহার ডাক পড়িল। আমি দোয়া-দরুদ পড়িতে লাগিলাম আর মনে মনে প্রার্থনা করিতে লাগিলাম যাতে আমার বিভাগীয় প্রধান ভাইভা বোর্ড এ না থাকেন। একটু পরেই আমার ডাক পড়িল, কোন কিছু বোঝার আগেই সয়ংক্রিয়ভাবে ভাইভা বোর্ডের সামনে হাজির হইয়া গেলাম। আমার বিভাগীয় প্রধান নাই দেখিয়া অন্তরে শান্তি আসিল। অতঃপর ভাইভা শুরু হইলো:

প্রশ্নঃ আপনার নাম কি?
উত্তরঃ [আমি আমার নাম বলিলাম]।
প্রশ্নঃ কোন বিশ্ববিদ্যালয়?
উত্তরঃ [আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বলিলাম]।
প্রশ্নঃ আপনার এস এস সি এর নম্বর কত?
উত্তরঃ [আমি আমার এস এস সি এর নম্বর বলিলাম]।
প্রশ্নঃ আপনার এইচ এস সি এর নম্বর কত?
উত্তরঃ [আমি আমার এইচ এস সি এর নম্বর বলিলাম]।
প্রশ্নঃ আপনার গ্রাজুয়েশন এর রেজাল্ট কি?
উত্তরঃ [আমি আমার গ্রাজুয়েশন এর রেজাল্ট বলিলাম]।
প্রশ্নঃ আপনি কোন সালে গ্রাজুয়েশন করিয়াছেন?
উত্তরঃ [আমি আমার গ্রাজুয়েশন এর সাল বলিলাম]।
প্রশ্নঃ আপনি এখন কি করিতেছেন?
উত্তরঃ একটা সফটওয়্যার ফার্মে চাকুরি করিতেছি।
প্রশ্নঃ আপনার কোন পাব্লিশড পেপার আছে?
উত্তরঃ আছে।
আচ্ছা ঠিক আছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার ভাইভা শেষ।

আমি থতমত খাইয়া বোর্ড থেকে বাহির হইয়া দেখি প্রার্থীরা সবাই কানাঘুষা করিতেছেন। পরে তাহাদের মুখ হইতে জানিতে পারিলাম ওইদিন বিকালেই ফল প্রকাশ করা হইবে এবং তাহাদের সবাইকে একই প্রশ্ন করা হইয়াছিল। কোন কিছুই মাথায় ঢুকিল না, সোজা অফিসে আসিয়া হাজির হইলাম। আসার পূর্বে যোগাযোগের জন্য ফোন নাম্বার নিয়া আসিলাম।

সেইদিন বৈকালে অনেক চেষ্টা চরিত্র করিয়াও উহাদের মুঠোফোনে সংযোগ স্থাপন করিতে না পারিয়া ক্ষান্ত দিলাম। পরেরদিনও একই অবস্থা। অবশেষে, আমার এক বন্ধু হাত বাড়াইয়া দিলো। সে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হইতে ল্যান্ডফোন হইতে ফোন করিয়া খোঁজ নিয়া আমাকে জানাইলো যে, ওই পোস্টের জন্য কাহাকেও নির্বাচন করা হয় নাই। আমি বলিলাম, একজনও না? সে বলিল, না।

আমি অবাক হইলাম, কারণ যে প্রশ্নগুলো করা হইয়াছিল তাহাতে সবারই ১০০% সঠিক উত্তর দেওয়ার কথা (এপ্লিকেশন এ সেইসব তথ্যগুলো দিতে হইয়াছিল), সেই হিসাবে সবারই তো সিলেক্টেড হইবার কথা। ২ খানা পোস্টের বিপরীতে ১০ জনকে লওয়া তো সম্ভব না, কিন্তু ১জনকেও লওয়া হইলো না এইটা কেমন কথা? অতঃপর, ভাবিতে লাগিলাম -

আমার কি করিবার কিছু ছিল?

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০০৯ রাত ১০:৪৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগে বুঝতে হবে রিসেট বাটন কি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:০৩

আগে বুঝতে হবে রিসেট বাটন কি......

বেশ কিছুদিন যাবত ডক্টর ইউনুস সাহেব এক সাক্ষাৎকারে "রিসেট বাটন" শব্দদ্বয় বলেছিলেন- যা নিয়ে নেটিজেনদের ম্যাতকার করতে করতে মস্তিষ্ক এবং গলায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধু ভগবান না হয় ইশ্বর!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:৫২



মানুষ বঙ্গবন্ধুর ওপর এতোই ত্যক্তবিরক্ত যে আজকাল অনেকেই অনেক কথা বলছে বা বলার সাহস পাচ্ছে। এর জন্য আম্লিগ ও হাসিনাই দায়ী। যেমন- বঙ্গবন্ধু কলেজ, বঙ্গবন্ধু স্কুল (হাজারের কাছাকাছি),... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১:২৮





বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু সংবাদ শুনে কোন গালিটা আপনার মুখে এসেছিলো?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬



"খবিশ মহিলা", গালিটি বা তার কাছাকাছি কিছু?

মতিয়া চৌধুরী (১৯৪২-২০২৪) ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সৎ রাজনীতিবিদ। গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশে তিনিই ছিলেন একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ও সবচেয়ে নিবেদিত-প্রাণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্বে চরম দারিদ্র্যে বাস করা প্রায় অর্ধেক মানুষই ভারতের

লিখেছেন সরকার পায়েল, ১৭ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৮


বিশ্বের ১১০ কোটি মানুষ দারিদ্রে দিন কাটাচ্ছে। তাদের প্রায় অর্ধেকই যুদ্ধ-সংঘাত লেগে থাকা দেশের বাসিন্দা। জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।


ইউএনডিপির বরাতে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×