somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কসমিক সিম্ফোনি... (সায়েন্স-ফিকশান) পর্ব ১০-১১

২৪ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দরজাতে প্রাণপনে বারি দিয়ে যাচ্ছে জিম। ধোয়ার কুন্ডলী আর ফিসফিসানির মাঝে চোখে অন্ধকার দেখছে সে। হেড-মাস্কের ডিসপ্লেতে দেখতে পেল ডিফেন্সিভ শিল্ড আর ১৫% বাকি আছে। যে কোন সময় ভেঙ্গে যাবে।

কমম লিঙ্কটাতে জোরে জোরে লিও আর ইরাকে ডেকে চলল সে। কিন্তু সে জানে না যে ট্রিনিটি ফল করেছে। তাদের সকল কমুনিকেশন সিস্টেম ফল করেছে তার সাথে সাথে।

হঠাৎ বীপ বীপ শব্দ তুলে ডিফেন্সিভ শিল্ডটা ভেঙ্গে গেল। মেঝেতে পরে গেল জিম। এক পলক দেখল সামনের সাদা বিচ্যুরণটাকে। প্রচন্ড বেগে ঘুরছে। আলোর জ্যোতি বাড়তে বাড়তে অসহনিয় পর্যায়ে ঠেকেছে। মগজে আঘাত করা গুঞ্জনটি হঠাৎ মৃদু ফিসফিসানিতে পরিনত হল। কিছুক্ষণের জন্যে থেমে গেল সব শব্দ।

দেখেছ! অবাক কণ্ঠে ফিসফিস করে উঠল একটি গলা। বলেছিলাম না তোমাদের? বলেছিলাম না!

তাই তো দেখছি! আরেকটা কণ্ঠ ভেসে এল ধোয়ার মাঝখান দিয়ে। ইন্টারেসটিং… প্রচন্ড ইন্টারেস্টিং… নতুন কাজ এসেছে… নতুন

কাজ এসে গেছে! কণ্ঠস্বরটা খুশি আর ধরে রাখতে পারছে না।

সরে দাঁড়াও! অপেক্ষাকৃত ভারি একটা কণ্ঠ বলল। আমাকে দেখতে দাও! মানুষ! কিন্তু ঠিক মানুষ না? কি এটা?

দেখতে মানুষ, কিন্তু একটা হাইব্রিড! আনন্দে চিৎকার করলো কণ্ঠটা। মাস্টার, দোহাই আপনার! এই বডিটাকে নিয়ে যেতে দিন! আমাকে এর মাঝের সকল জ্ঞান আহোরণ করতে দিন! আমি দেখতে চাই! আনন্দ পেতে চাই! উন্মাদের মত কাপতে থাকল তার কণ্ঠটা।

আরেকজনের কি হবে? গম্ভীর কণ্ঠটা বলে উঠল।

সে এত ইন্টারেস্টিং সাবজেক্ট না! অন্যদের চেয়ে আলাদা কিছু নেই! এর মাঝে সবকিছুর স্ট্রাকচার আলাদা! একে চাই আমরা। আরেকজনের কথা ভুলে যান!

কয়েক মুহুর্ত অপেক্ষা করল কণ্ঠটা। তারপর বলল ঠিক আছে।

সারা দুনিয়াটা ঘুরতে শুরু করলো জিমের সামনে। পুরো ঘরটা এতোই উজ্জ্বল হয়ে গেছে যে আশেপাশের কোন কিছুই চোখে দেখতে পারছে না। শুধুমাত্র তীব্র সাদা আলো।

হেড-মাস্কের ভেতর দিয়ে ধোয়া ঢুকে গেল তার শরীরে। তার শরীর দিয়েও উজ্জ্বল সাদা আলো বিচ্যুরিত হতে লাগল। নিস্তেজ হয়ে পরল জিম। শরীরের উপর তার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। মনে হচ্ছে মহাশূণ্যে সে ভেসে বেড়াচ্ছে। একসময় তার চেতনা লোপ পেল।
ধীরে ধীরে আলোর তীব্রতা কমতে থাকল। আস্তে আস্তে ধোয়ার কুন্ডলী হারিয়ে গেল রুমটা থেকে। আগের অন্ধকার পরিবেশটা ফিরে এলো। সবকিছুই আগের মত রয়ে গেল।

শুধু জিম পুরোপুরি হারিয়ে গেছে…

***********

জেনার দিকে বিষ্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে লিও। তুমি এখানে কেন? চিৎকার করলো সে! তোমাকে আমি একটা মিশন দিয়েছিলাম! তুমি কেন চলে আসলে?

অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে জেনা। তুমিই তো আমাকে এখানে ডেকে পাঠিয়েছ! সব খুলে বলল সে।

শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল লিও। কোনমতে আদিম আমলের একটা চেয়ারে বসে পড়ল। মারাত্বক এক ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পরেছে তারা কিন্তু ব্যাপারটা সম্পর্কে ন্যূনতম কিছু জানে না সে।

এই ভাইরাস শুধু ভাইরাস না… ফিসফিস করে বলল ইরা। এখনো মৃদু ফোপাচ্ছে সে। এটা ভাইরাস না…

জেনা ইরার কাধ ধরলো। কি বলছো তুমি?

সেলাস্টিয়াল বিং… এদের বলে কসমিক এনটিটি, এরা কসমিক এনার্জি দিয়ে তৈরি। তৃতীয় মাত্রার মাঝে আবধ্য নয় তারা। পঞ্চম মাত্রার জীব। সময় তাদের কাছে সাধারণ একটা দিকের মতো। যে কোন ভাবে তারা সময়ের টাইমলাইন পরিবর্তন করতে পারে… মানুষ এদের সম্পর্কে কিছুই জানে না… বিজ্ঞান একাডেমি যাও জানে তা প্রকাশ করে না। অতি উচ্চ বুদ্ধিসম্পন্ন প্রাণী।

লিও ঝুকে পরল তার দিকে। কসমিক এনটিটি? তারা আমাদের আক্রমণ করেছে?

হয়তো! হাত দিয়ে নাক মুছলো ইরা। তারা তৃতীয় মাত্রায় অবস্থান করলে তাদের রেডিয়েশনে এক ধরণের ভাইরাস তৈরি হয় বাই প্রোডাক্ট হিসেবে! সেই ভাইরাসের সিগনেচারই আমরা এতক্ষণ দেখেছি। কোন পঞ্চম মাত্রার কসমিক এনটিটি এই স্পেসস্টেশনে অবস্থান করছে… গলা কাপল ইরার। আর তারা এখন পাওয়ার ইউনিটে… কারণ ভাইরাসের সিগনেচারগুলো…

জিম! দাতে দাত ঘষল লিও। তোমরা এখানে থাকো! আমি জিম কে নিয়ে আসছি! প্যাসেজটার দিকে পা বাড়ালো লিও।

দাঁড়াও! তাকে থামালো জেনা। তুমি পঞ্চম মাত্রার জীবের সাথে কি করতে পারবে? আমিও চলছি তোমার সাথে।

তাকে বাধা দিতে যাচ্ছিলো লিও কিন্তু সামনে কিরু২ এর হালকা অবয়ব দেখে থমকে দাড়ালো। অন্ধকার ফুড়ে তার উজ্জ্বল লাল চোখগুলো জ্বলছে।

কিন্তু কিরু২ এগিয়ে আসলে তার মুখ থেকে হাসি খসে পরল। একটা ব্লাস্টার গান তার হাতে… ধীর পায়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে।

দুঃখিত লিও, খসখসে গলায় বলল কিরু২। তুমি ওদিকে যেতে পারবে না।

হতবুদ্ধি হয়ে গেল সবাই। কিরু? তুমি জিমকে ফেলে…

বরং বলো আটকে এসেছি! শুধরে দিল কিরু২। রুমটার ভেতরে।

কিন্তু ওখানে তো কসমিক জীবেরা যাচ্ছে! চিৎকার করলো ইরা।

জানি! বাধা দিল কিরু২। তাদের জন্যেই ওখানে জিমকে আটকে এসেছি আমি।

তুমি! অদম্য একটা ক্রোধে চোখে অন্ধকার দেখল লিও! তুমি আমাদের সেবাটোজ করেছো। শুরু থেকেই তুমি ছিলে! তোমার ঐ কপোট্রন আমি গুড়ো করে দিবো। বলতে বলতে ইবোনির দিকে হাত বাড়ালো সে।

উহু! ধাতব আঙ্গুল নাড়ল কিরু২। তোমার ব্লাস্টার থেকে একটা রশ্মিও বেড় হবে না। হাসতে হাসতে বলল সে। সব জ্যাম করে দিয়েছি।
সত্যিই লিও উলটে পালটে দেখলো। ব্লাস্টারটা লক হয়ে গেছে।

জেনার সরু চোখে কিরু২ এর দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু তুমি কিভাবে জ্যাম করলে? তোমার তো ফ্রিকোয়েন্সি জানার কথা নয়! ট্রিনিটিকে ফ্রিজ করে ফেলার মত শক্তিi তো তোমার থাকার কথা নয়। কিভাবে করলে?

শব্দ করে হাসলো কিরু২। তোমার বুদ্ধির তারিফ করতে হয়। আসলেই ঠিকই ধরেছো। আমি একা নই। বিজ্ঞান একাডেমি আমার সাথে আছে। তুমি দেখেছো তো এই মিশন লিস্টেড না বিজ্ঞান একাডেমির সার্ভারে। সবকিছুই বিজ্ঞান একাডেমি সুন্দর ভাবে সাজিয়েছে। তারাই আমাকে কোন তরঙ্গে ট্রিনিটি জ্যাম হয়ে যাবে বলে দিয়েছে… এটা একটা মাস্টার প্ল্যানেরই অংশ

বিজ্ঞান একাডেমি? হিসহিস করে উঠল লিওর গলা। আমরা বিজ্ঞান একাডেমির কি এমন করেছি যে তারা পঞ্চম মাত্রার জীবদের দিয়ে আমাদের ধ্বংস করতে চাইছে? আমাদের মতো নিরপরাধ মানুষকে কারণ ছাড়াই তারা মারতে পাঠিয়েছে?

কাম অন! ঠোট বাকিয়ে হাসল কিরু২। পঞ্চম মাত্রার জীব সবাইকে চাইছে না, চাইছে শুধু তাকে! ইরার দিকে আঙ্গুল তুলল সে।
ইরা ই৫৫ ভাইরাস ডিকোড করে দিয়েছে বিজ্ঞান একাডেমিকে। যেটা কসমিক এনটিটিদের ডিজাইন করা ভাইরাস ছিল। বিজ্ঞান একাডেমি তাদের ল্যাবে ই৫৫ এর জিনোম বদলে ই৫৯ ভাইরাস তৈরি করে, যেটা দিয়ে তারা কসমিক এনটিটিকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে… বলা বাহুল্য তারা মারাত্বকভাবে হেরে যায়! এরপর থেকে কসমিক এনটিটিরা ই৫৫ ভাইরাসের আবিষ্কারককে তাদের হাতে দিতে বলে, নাহলে তারা বিজ্ঞান একাডেমিকে গুড়িয়ে দিবে। তাই তারা এই প্ল্যানটা করে তোমার জন্যে।

কিন্তু তোমার লাক ভালো, হাসল কিরু২। তাদের চোখ এখন জিমের উপর পড়েছে। তারা তোমার চাইতে জিমকে নিতে আগ্রহী।

ওহ না! দু হাতে মুখ ঢাকল ইরা। জিমকে না… প্লিজ জিমকে না… সে কিছু করে নি…

আর তোমরা কেউই নিরপরাধ নও। গম্ভীর কণ্ঠে বলল কিরু২। তোমরা সবাই অনেক বেশি জেনে ফেলেছ!




এগারোঃ
পুরাতন স্পেসস্টেশন সোলারেক্সের কন্ট্রোল ইউনিটে যেন নাটক মঞ্চায়িত হচ্ছে। সব কিছু হজম করে নিতে সময় লাগছে অভিযাত্রীদের। পুরো ব্যপারটা তাদের কাছে কাল্পনীক কোন স্বপ্ন বলে মনে হচ্ছে।

লিও! লিওর দিকে হাত তুলল কিরু২। জানতে চাও তুমি কি অপরাধ করেছো? মজা পাচ্ছে যেন কিরু২। তোমার অপরাধ হচ্ছে তুমি অনেক বেশি জানো।

ভন্ডামী ছাড়ো! রাগে চিৎকার করে উঠল লিও। বেশি জানি মানে? আমি তো জানিই না কেন আমাকে মারতে চায় বিজ্ঞান একাডেমির মত একটি সংস্থা? যাদের জন্যে আমি বেস-স্টেশন থেকে বেস-স্টেশনে দিনের পর দিন একনিষ্ঠভাবে কাজ করে গেলাম তারাই আমাকে এমনভাবে মারতে চায়…

সিন্ড্রা মিশন? মুচকি হাসল কিরু২?

মানে? হঠাৎ কি হলো ঠিক বুঝতে পারলো না লিও। চোখের সামনে সবকিছু অন্ধকার হয়ে গেল। তার মনে হচ্ছে অমশৃণ কোন একটা গুহার মাঝে বাকা হয়ে পরে আছে সে। কোন এক কোনা থেকে গাড় বেগুনী আলোক রশ্মি তার সামনের তলে পড়ছে। লিও...! জিমের অস্পষ্ট আওয়াজ শুনতে পেল, তারা জেগে গেছে! আমাদের পালাতে হবে… লিও! কম্পমান শব্দটা তীক্ষ্ণ থেকে তীক্ষ্ণ হতে লাগল। লিও! আবার ডাকল জিমের কণ্ঠস্বরটা। ওহ তুমি কিভাবে পা ভেঙ্গে ফেললে! আমার কাধে ভর দাও! ওরা এক্ষুণি চলে আসবে! কিছু বোঝার আগেই দেখল লিওকে কাধে ভর দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে জিম, ঘাড় ফিরিয়ে পেছনে দেখলো কালো একটা অবয়ব, লাল রঙের রক্তচক্ষু মেলে তার দিকে তাকিয়ে আছে…

হঠাৎ করেই ঘোর ভেঙ্গে গেল তার। কি হচ্ছে তার বুঝতে কিছুক্ষণ সময় লাগল। পা টা হঠাৎ টলমল করে উঠল…

তুমি ঠিক আছো? নিচু গলায় জিজ্ঞেস করল জেনা। প্রতিউত্তরে মাথা ঝাকালো লিও।

সিন্ড্রা মিশনে অনেক কিছুই ঘটেছিল তোমার আর জিমের সাথে। বলে চলল কিরু২। কিন্তু তোমাদের কিছুই মনে নেই কারণ তোমাদের মেমোরি মুছে ফেলা হয়েছে। তুমি যা মনে করো সিন্ড্রা মিশন সম্পর্কে তার সবই বিজ্ঞান একাডেমির বানানো মেমোরি। আর্টেফিশিয়ালি ডিজাইন করা মেমোরি তোমার মাথায় বসানো আছে, জিমের উপরেও একি কাজ করা হয়েছে।

বিজ্ঞান একাডেমি এর পরে তোমাদের ছেড়ে দিলেও তারা বারবার ভেবেছিলো এই গোপন স্মৃতি তোমরা ফিরে পেলে এই বিশ্বের সব ইতিহাস পালটে যাবে। তাই তারা আর কোন রিস্ক নিতে চায় নি…

সব মিথ্যে কথা! জোরে চিৎকার করলো লিও। মিথ্যা নাটক বানাচ্ছো তুমি…

তাই? হাসলো কিরু২। কখনো কি তোমার মনে হয়েছে এই ব্লাস্টার দুটো তুমি কোথায় পেলে?

আমি… আমি, হতবুদ্ধি হয়ে গেল লিও। এগুলো বিজ্ঞান একাডেমি সিন্ড্রা মিশনে যাওয়ার আগে আমাকে দিয়েছে…

এটাই তুমি বিশ্বাস করো? এই ধরণের কোন অস্ত্র কারণ ছাড়াই বিজ্ঞান একাডেমি তোমাকে দিয়ে দিল?

মাথা গুলালো লিওর। পাশের ডেস্কে ভর দিল।

আর তুমি, জেনার দিকে তাকালো কিরু২। তুমি বিজ্ঞান একাডেমির সার্ভার হ্যাক করে অনেক গোপন তথ্য জেনে ফেলেছো। তাই তোমার মুখ বন্ধ করাটাও তাদের জন্যে জরুরী হয়ে পরেছে।

রাগে ফোসফোস করতে লাগল জেনা। তারা আমাকে জানাতে দেয় না দেখে বাধ্য হয়ে করেছি!

তুমি প্রোজেক্ট’১২ সম্পর্কে খোজখবর নেওয়া শুরু করেছো যেটা ভালো চোখে দেখেনি বিজ্ঞান একাডেমি। তাই মরতে হবে তোমাকেও…
কিভাবে মারবে আমাদের! কটমট করল জেনা। বললে কসমিক জীবেরা জিমকে নিতে আসছে, আমাদের না।

তোমাদের জন্যে অন্য ব্যবস্থা আছে, নিষ্ঠুর ভঙ্গিতে হাসল কিরু২। নরম্যান্ডির মাঝে এন্টিম্যাটার ওয়ারহেড এক্টিভেট হয়ে গেছে।

তোমাদের আড়ালে, ট্রিনিটির আড়ালে থেকে। আশেপাশের একহাজার মাইলের মাঝে যা আছে সব ধ্বংস হয়ে যাবে…

তুমিও মরবে… হিসহিস করে উঠল ইরা। তোমার মত একটা নরকের কিটকেও আমাদের সাথে যেতে হবে।

তাত্ত্বিকভাবে আমি একটা রোবট। আমার কোন মৃত্যু নেই! আমার কপোট্রনের মেমোরি অন্য কোন দশম পর্যায়ের রোবোটে পাঠানো হলে আর ঠিকভাবে প্রোগ্রামিং টিউন করলে আমি আবার অন্য কোথাও বেচে উঠব! রোবট আইন বলে মানুষকে কোন রোবট মারতে পারবে না। তাই আইনগতভাবে আমি তোমাদের মারতে পারবো না। কিন্তু এন্টিম্যাটার ওয়ারহেডটা পারবে।

আরো কিছু সময় বাকি আছে এখনো! তোমরা কি জিমের শেষ মুহুর্তটা দেখতে চাও।

ভীত হয়ে তার দিকে তাকালো ইরা… না… কোনভাবে না…

হাতের তালুর মাঝে থেকে হলোগ্রাফিক সেন্সরটা প্রাইমারি ডিসপ্লেটার উপর কাস্ট করলো কিরু২। সবাই জিমের হৃদয় বিদারক দৃশ্যটা দেখতে পারল। সাদা ধোয়ার কুন্ডলীর মাঝে হাত পা ছুড়ছে জিম। তীব্র আলোতে এক মুহুর্তের জন্যে আশেপাশের কিছুই দেখা গেল না।
আস্তে আস্তে আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল সবকিছু, শুধুমাত্র জিমের কোন অস্তিত্বই রইল না।

না জিম না… হাটু গেড়ে মেঝেতে আছড়ে পরল ইরা। আমার জন্যে সে মরতে পারে না। দুচোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে তার। কসমিক… তারা তাকে মৃত্যুর চেয়েও কঠোর যন্ত্রণা দেবে… কথা আটকে গেল তার।

দৌড়ে তাকে জাপটে ধরে ফেলল জেনা। শক্ত করে তার কাধ ধরে রাখল। কি শান্তনা দেবে সে ইরাকে, তার চোখেও তখন পানি।
আমরা এখানে হয়তো মরবো… আশেপাশের নিস্তব্ধতা খানখান হয়ে গেল জেনার গর্জনে। কিন্তু তুইই সবার আগে মরবি হতচ্ছাড়া যন্ত্র! তুই কোন দিন মানুষের সমান হতে পারবি না, তুই শুধু নিকৃষ্ট এক যন্ত্র মাত্র!

তার দিকে চোখ ফেরালো কিরু২। হঠাৎ থমকে দাড়ালো। চোখের উজ্জ্বল লাল আলো ম্লান হয়ে গেল, কাপতে লাগল চোখের আলো…

লিও, এখনি! চিৎকার করে উঠল জেনা।

চোখের পলকে এক দিকে ডাইভ দিয়ে হাতে ইবোনিকে নিয়ে এল লিও। শূণ্যের মাঝে থাকতেই কিরু২ এর বুক বরাবর তাক করে ট্রিগার চাপল। উজ্জ্বল নীল রশ্মি বের হয়ে এলো ব্লাস্টারটার মাথা দিয়ে।

পরক্ষণেই দশম জেনারেশনের রোবট কিরু২ এর চেস্টপ্লেট ঝাঝরা হয়ে গেল। গোল গর্তটার দিকে চোখে অবিশ্বাস নিয়ে একপলক তাকালো কিরু২, চোখের আলো মিটমিট করলো কয়েক মুহুর্ত, এরপর একপাশে কাত হয়ে পরে গেল।

আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৫০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×