♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
(ছবি নেট হতে)
গত পোস্টের মাধ্যমে যদিও চেয়েছিলাম কোনো যৌক্তিক আলোচনা হোক, কিন্তু আশা করিনি। কারণ, দুঃখজনক সত্য হচ্ছে আমাদের যৌক্তিক চুলছিঁড়া আলোচনাতে অনীহা রয়েছে। জাতি হিসেবে আমরা বড্ড আবেগপ্রবণ। তাই যদিও ব্লগের আইডিয়াটা নিরামিষ পর্যায়ের গবেষণাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, কিন্তু আমাদের সমাজে এসে তা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের মতোই রসালো হয়ে উঠেছে। এ কথা অস্বীকার করার সুযোগ নেই যে, আবেগ যেমন কর্মক্ষেত্রকে অনুকূল করে, তেমনি নিয়ম-নীতিকেও শিথীল করে তুলে। মানে যেমনটা হয় সংসারে। আবেগকে কেন্দ্র করে অনেক অনিয়মও নিয়ম হয়ে যায়। এর ফলেই আমাদের প্রতিটি সংগঠনে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দেখা যায়। আর ফলশ্রুতিতে সবকিছুর মূল হয়ে দাঁড়ায় নিজের স্বার্থ। আমরা এমন এক জাতি যাকে যেকোনো কাজে দিলেই সেখানে নিজের একটা স্বার্থের ব্যবস্থা করে নেয়। এই প্রেক্ষিতে নিচের কৌতুকটি প্রায়ই মনে পরে।
এক থানায় এমন এক ঘুসখোর পুলিশ ছিলো যে আসামী থেকে যেকোনো উপায়েই টাকা না খেয়ে ছাড়তো না। তো বাকি সব পুলিশ শুধু পথ খোঁজে যে এই পুলিশকে কিভাবে বাঁশ দেওয়া যায় যেনো টাকা না খেতে পারে। তো এক কয়েদি মারা গেলো। সব মিলে ঠিক করলো ঐ পুলিশকে দিয়ে মৃত্যুর সংবাদ পাঠাবে যেখানে টাকা খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তো যথারীতি কয়েদির বাড়িতে ঐ পুলিশ যেয়ে খবর দেয়। খবর শুনে যখন সবাই কান্না শুরু করে তখন ঐ পুলিশ কান্না বন্ধের জন্যে ধমক দিয়ে বলে, “কান্না পরে। এখন তার যে ২ বছরের সাজা খাটা বাকি সেটা কে খাটবেন তাই বলুন। অবশ্য আমায় কিছু খরচ দিলে আমি চেষ্টা করে দেখতাম কোনো ব্যবস্থা করা যায় কিনা!”
এই যখন অবস্থা, তখন ব্লগেও মনে হয় অনেকে ব্লগিং করতে এসে নিজের আখেরের ব্যবস্থা করে নিচ্ছেন। আমার গত পোস্টে একজন অমুসলিম নায়িকা নির্বাচনের বক্তৃতায় নবী ( স: ) এর সম্মান তুলে ধরেছেন, বিষয়টা কে কিভাবে দেখছেন জানতে চাচ্ছিলাম। তো সেখানে ধর্ম বিদ্বেষী একটা ট্যাম্প্লেট মন্তব্য আসে যে, “বাংলায় কোরান হাদিস পড়ার আগ পর্যন্ত মহম্মদকে শ্রদ্ধা করতাম, এগুলো বুঝে পড়ার পর শ্রদ্ধা হারিয়ে গেল। একজন ব্যক্তি আল্লাহর দোহাই দিয়ে কেমনে শিশু বিবাহ, বহু বিবাহ, বিবাহ না করেই যুদ্ধবন্দী নারীদের সাথে সহবত, দাসী সহবত, অতর্কিত হামলা করে হত্যা, সমালোচনা করে কবিতা লেখার জন্য গুপ্তহত্যা হালাল করে দেয়? এই তালিকা অনেক লম্বা। কোরান হাদিসের যদি আপডেট করে এগুলো যদি গোপন করা না হয়, কয়েকশত বছর পর ইসলামের কোনো গ্রহন যোগ্যতা থাকবে না। যদি কেউ চ্যালেঞ্জ করেন আমি কোরান হাদিস সিরাত থেকে এখানে কপি পেস্ট করে দেবো।” পড়েই বুঝি এটা পোস্ট না পড়ে ইসলামকে হেয় করতে দেওয়া। তাই উত্তর দিলাম, “আমি এখানে প্রকাশিত খবর সম্পর্কে মতামত চেয়েছি, ইসলাম সম্পর্কে না। চুলকানি থাকলে অন্য কোথাও গিয়ে চুলকান। :# :# নির্বোধের মন্তব্য কাম্য নয়। :# মন্তব্য সড়ালাম না কর্তৃপক্ষ এবং সহব্লগারগণের দৃষ্টিআকর্ষণে।”
পরবর্তি মন্তব্য পাই, “চাইলে ব্লক মেরে দেন, অনেকেই মারছে। ধন্যবাদ।” উত্তর দিলাম, “চিন্তা করবেন না। আমি ভালো ব্লক মারতে পারি।”
তারপরের মন্তব্য, “আমাকে ব্লক দেওয়ার সাথে সাথে, নিজের চিন্তা ভাবনাকেও ব্লক করে দেন। সত্য জানার চেষ্টা করবেন না, সত্য আপনারা সহ্য করতে পারবেন না। যদি সত্য জানার চেষ্টা করতেন তাহলে কোরান হাদিস দিয়ে আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে দিতেন। ধন্যবাদ।” মন্তব্যটা পরে হাসলাম। বুঝলাম আমাকে উত্তেজিত করার চেষ্টা। বিষয়টা এমন যে, কেউ জারজ ডাকলে তাকে জন্মের কাগজপত্রসহ ডিএনএ রিপোর্ট এমনকি পারলে ভিডিও ক্লিপস্ দেখিয়ে প্রমাণ করতে হবে নিজের জন্ম পরিচয়। তাই উত্তর দিলাম, “সুন্দর বলেছেন। অবশ্যই সেটা করতাম যদি প্রাসঙ্গিক হতো। কিন্তু পোস্টের সঙ্গে মন্তব্যের কোনো প্রাসঙ্গিকতা পাইনি। ধান বানতে শিবের গীত গাওয়ার অভ্যেস সবার না। এই সামান্য কমনসেন্স যদি কারো না থাকে তখন কি আপনি তাকে যুক্তিতর্ক বুঝাতে যাবেন? ভালো থাকুন।”
এবার আমার ধারণা সত্য করে মন্তব্য দিলো, “পোস্ট দিয়েছেন ইসলামী পোস্ট, তারপর মুশ্রিকদের কাছ থেকে আপনি নবীর চরিত্রের সার্টিফিকেট নিচ্ছেন, তাই কিছু কথা না বলে পারলাম না। এদিকে আপনি নবীর উপর আরোপিত অভিযোগ খন্ডন করবেন, মুমিনের এর চেয়ে জরুরী কাজ আর কিছু থাকতে পারে? যাই হোক আপনি এখনো নাকে দড়ি বাঁধা উটের মত মুমিন হতে পারেন নি, ইসলামের গভীরে যাওয়ার আগ্রহ আপনার কম, তবে মানুষ হিসাবে মনে হচ্ছে আপনি খুব ভদ্র, গালি গালাজ দিচ্ছেন না, তাই আপনার সম্মানার্থে আমি অফ গেলাম। ধন্যবাদ।” বুঝলাম আর বাকিসব ধান্দাবাজের মতো আশা ছিলো আমি তারে গালি-গালাজ করবো, আর তখন তা পুঁজি করে বাকস্বাধীনতা নাই স্লোগান উঠাবে, আর জামাত-শিবির তকমা লাগাবে। তবে এর মধ্যেই ব্লগার জাদিদ সাহেব গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য দিয়ে উক্ত মন্তব্যকারীকে নসিহতের দায়িত্ব নিলেন দেখে দর্শক হলাম। জাদিদ সাহেবের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যগুলো পোস্টে আছে। এখানে যুক্ত করলাম না কারণ, পোস্ট অনেক বড় হয়ে গেছে। জদিদ সাহেব উক্ত মন্তব্যকারীকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানোর পর হতে ব্লগে এ্যাক্টিভ হয়েও পোস্টে নীরব ভূমিকা পালন করতে দেখছি।
এতো কথা বলার মূল কারণ হচ্ছে, এভাবে ইলামবিদ্বেষ ছড়িয়ে কি ধান্দা উদ্ধার হচ্ছে তা তুলে ধরা। আমার মনে হলো ঐ মন্তব্যকারী বড্ড হতাশাগ্রস্থ। জীবনে সফলতার মুখ দেখেনি। তাই সর্টকাট হিসেবে এই ইসলামবিদ্বেষের সস্তা পথ বেছে নিয়েছে। এরা মূলত নাস্তিক নয়। এরা অতি নিম্নশ্রেণীর দেশ বেচে খাওয়া ধান্দাবাজ। এরা সব ধর্মের জন্যে সমান ক্ষতিকর। বিস্তারিত ঐ পোস্ট দেখেলে বুঝে থাকবেন। এদের মূল উদ্দেশ্য হলো, ধর্মীয় কুটুক্তি করে উস্কানো। তারপর পাল্টা আক্রমণ করলেই ফলাও করে প্রচার করা যে, এদেশে বাকস্বাধীনতা নেই। সব জামাত-শিবির। আওয়ামী থিউরি আরকি। আর এসব করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বিদেশীদের নজর কেড়ে এসাইলাম নেওয়া।
শুনেছি আগে ৩য় বিশ্বের দেশে মিসনারীরা স্বধর্ম ত্যাগ করলে আর্থিক সাহযোগীতা করতো, গরু-ছাগল প্রদান করতো। এটারই ডিজিটালরূপ এই অনলাইন ধর্মবিধ্বংসী কার্যক্রম।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৭