somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনুগল্প - যৌনাবেগ - পুলিশ ইন অ্যাকশন

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লিয়াকত , এইদিকে আসো
-- ইয়েস স্যার
আমি যা দেখি তুমি কি তাই দেখো ?
-- ইয়েস স্যার । স্যার ঘাড় কি ডাইনে নাকি বাইয়ে ঘুরামু ?
ডাইনে ঘুরাও

কনস্টেবল লিয়াকত মিয়া তার ঘাড় ডানে ঘুরায় । ডানে বিপিন পার্ক । আশে পাশে কেউ নাই । একটা ল্যাম্পপোস্ট জ্বলছে নিভছে ।

কিছু দেখলা ?
--ইয়েস স্যার ।
কি দেখলা ?
--ঘুটঘুটা অইন্ধার স্যার ।
আর কিছু ?
--একটা ল্যাম্পপোস্টও দেখছি স্যার । জ্বলতাছে আর নিভতাছে । নষ্ট লাইট । কয়েক সেকেন্ডের জন্য যখন জ্বলে তখন পাশে একটা কুত্তা দেখা যায় । কুত্তা লেঞ্জা চক্ষে শুইয়া আছে ।

লেঞ্জা দিয়া চক্ষু ঢাকা কুত্তা দেখলা আর কুত্তার পাশের বেঞ্চিতে যে একটা নটি বসে আছে , অইটা দেখলা না ? তুমি তো মিয়া দিন দিন বুইড়া ভাম হইয়া যাইতাছো । এই তুমগর লাইজ্ঞাই আজকাল পুলিশ দেখলে মানুষজন টিটকেরি মারে ।


কনস্টেবল লিয়াকত আলী আবার তাকালো । সত্য কথা । একটা মেয়ে বেঞ্চে পা তুইল্লা বইয়া আছে । মাথা নিচু করা । তাই সহজে তাকে নজরে নিয়ে আসা যায় না । সাব ইন্সপেক্টর ইকরাম স্যারের পাক্কা দৃষ্টি । স্যার এমনিতে দুই দুইবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক ’ পায় নাই । স্যারের ভিতরে মাল আছে ।

-- স্যার , আফনের নজর মাশাল্লাহ । দিতাম নাকি নটিরে একটা দৌড়ানী ?
লিয়াকত মিয়া তেলতেলে হাসি হাসার চেষ্টা করে ।

তুমি বড্ড পাষাণের মতো কথা বোলো , লিয়াকত আলী । কেন রে নটি মাগী হইছে বলে কি এরা মানুষ না ?

-- ইয়েস স্যার । অতি অবশ্যই । নটিরাও মানুষ ।

তো ! তাদেরও তো পেট আছে । তাদেরও তো ক্ষিদা লাগে । একটুখানি ভাত কাপড়ের জন্য শরীরডার উপ্রে তারা কি কষ্টটাই না করে ! ভাবছো কখনো !

--আগে ভাবি নাই স্যার । আজ ভেবে কষ্ট হইতেছে ।
লিয়াকত দুঃখ দুঃখ মুখ নিয়ে বলল ।

জানো লিয়ামত , এইসব নটিদের জন্য আমার বড় মায়া হয় । ইচ্ছা হয় তাদের জন্য কিছু একটা করি ।


পঞ্চাশঊর্ধ্বো লিয়াকত আলী ত্রিশ ছুঁইছুঁই ইকরাম স্যারের কথায় বুঝদারের মতো কেবল মাথা নাড়ায় । সাব ইন্সপেক্টর ইকরামুল হক পুলিশ ভ্যানের বনেটে হেলান দিয়ে এখন ভাব জগতের কথা বলছে সাথে ভুড়ভুড় করে টানছে সিগারেট । লিয়াকত আলী চুপচার দাড়িয়ে । তিনি স্যারের পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায় । ইকরাম স্যার আগ বাড়িয়ে কথা বলা পছন্দ করেন না ।

লিয়াকত আলী – এই নাও সিগারেটের প্যাকেট । ভিতরে দুইটা আছে । তোমার জন্য । তুমি এখন কনস্টেবল হামিদ আর পলাশকে বলবা এক প্যাকেট বেনশন নিয়া আসতে আর ঐ মেয়েটাকে গাড়িতে পাঠাবা । মেয়েটার সাথে প্রাইভেটে একটু সুখ দুক্ষের কথা বলতে ইচ্ছা হইতেছে । যাও , কুইক ।

কনস্টেবল লিয়াকত আলী – ইয়েস স্যার বলে অ্যাকশনে নেমে যায় । হামিদ আর পলাশকে সিগারেট আনতে বলায় তারা একে অন্যের দিকে চোখ টিপি দেয় । বজ্জাত আছে পোলা দুইটা । নতুন পুলিশে ডুকছে । তেল এখনো শেষ হয় নাই । তবে লিয়াকত আলী তার দীর্ঘ চব্বিশ বছর চাকুরীর অভিজ্ঞতার জানে এদের তেল শিগ্রী শেষ হবে যাবে । শুধু শেষ হবে না সেইসাথে তেল ধরে রাখার শিশি পর্যন্ত এরা খুঁজে পাবে না ।


লিয়াকত আলী মেয়েটির কাছে আসলো । বয়স একদম অল্প । চৌদ্দ কি পনেরো । লাইনে নতুন । একে আগে দেখেনি ।

-- তোর নাম কি রে ?

মেয়েটি ঘুমাচ্ছিল । ঘুম ভেঙ্গে সামনে পুলিশ দাঁড়ানো দেখে থতমত খেয়ে গেছে । তার চোখ ভর্তি ভয় । মুখ হা হয়ে আছে । কেঁদে পা জড়িয়ে না ধরলেই হয় ! এরা কিছু হলেই এমনভাবে পা জড়িয়ে ধরে আর ছাড়ানো যায় না ।

--তুই কি ইলিয়াসের মেয়ে ? ইলিয়াস কই গেছে ?

উনি ঐদিকে গেছেন । আইয়া পড়বো অহনি । মেয়েটি হাতের ইশারায় দক্ষিণ দিক দেখালো ।

ইলিয়াস হালায় নিশ্চিত হাগতে গেছে । এই এলাকায় ইলিয়াস মেয়ে সাপ্লাই দেয় । থানার সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ । সেই সুবাধে প্রায় সব মেয়েকেই লিয়াকতের চেনা ।

মেয়েটার চোখে এখন কিছুটা স্বস্তি । প্রাথমিক ভয় সে কাটিয়ে উঠেছে । এখন সে তার ট্রেনিং প্রাপ্ত আচরন শুরু করেছে । বারবার দুহাত উচিয়ে তার খোঁপা ঠিক করতে চাচ্ছে । অল্প বয়সে মেয়েটার শরীরে ভালো বান ধরেছে । লিয়াকত আলী তার দৃষ্টি সরিয়ে নিল ।

--- তুই ঐ ভ্যানের দিকে যা । আমাদের বড় স্যার আছেন । তিনি তোর সাথে কিছুক্ষন কথা বলবেন । যদি খুশি করতে পারস ভালো বকশিশ পাবি ।
ইলিয়াস ভাইরে কইয়া যাই ?
--দরকার নাই । আমি আছি । ইলিয়াস আইলে আমি কথা কমুনি । তুই তাড়াতাড়ি যা । দেরী হইলে স্যার কিন্তু রাগ করবো ।

মেয়েটি চলে যাবার পর লিয়াকত আলী বেঞ্চিতে বসলো । ইকরাম স্যারের দেয়া প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট ধরিয়ে আয়েশি টান দিল । আজ তার সারারাত ডিউটি । এখনি ঘুম পাচ্ছে । বয়স বাড়লে যা হয় । একটু চা পেলে মন্দ হতো না । চায়ের কথা ভাবতে ভাবতেই লিয়াকত আলীর মোবাইল বেজে উঠলো ।

হ্যালো বাবা , তুমি কি করো ?
--ডিউটি দিতাছি মা । আপনি যে এতো রাইত পর্যন্ত জেগে আছেন ? শরীর কি খারাপ করছে ?
না বাবা । কাল আমার ফিক্সিজ পরীক্ষা । তাই আজ সারারাত পড়বো । পড়তে পড়তে তোমার কথা মনে হলো । তাই ফোন দিলাম । বাবা , তুমি আইজ রাইতে খাইতে আসো নাই কেন ?
--একটা কামে আটকা পড়ছিলাম মা । থানাতেই খাইয়া নিছি ।
কি দিয়া ভাত খাইসো বাবা ?
--টেংরা মাছের চচ্চড়ি আর মুগের ডাইল । আপনের মা আইজ কি পাক করছিল ?
টাকি মাছ ভর্তা আর কচুর লতি দিয়া মাছের মাথা ।
লিয়াকত আলী চিন্তিত কণ্ঠে বলল -- আপনে তো মা , কচুর লতি পছন্দ করে না । আপনি কি খাইলেন তাইলে ?
আমি আজ দুধ ভাত খাইছি । কাইল আমার পরীক্ষা তো তাই মা খাওয়াইয়া দিছে ।


লিয়াকত দেখল ইলিয়াস ফিরে আসচ্ছে । নেশায় সে ঠিকমতো পা ফেলতে পারছে না ।

--মা , আপনি সারা রাইত জাইজ্ঞেন না । একটু হইলেও ঘুমাইয়েন । আমি সকালে আপনেরে ফোন করে জাগাইয়া দিমুনি । এখন রাখি মা ?
ঠিক আছে বাবা । আমার জন্য দোয়া করো । আল্লাহ্‌ হাফেয ।

লিয়াকত ফোন রেখে ইলিয়াসের দিকে তাকালো ।

সালাম স্যার
--হুম ।ক্যামন আছো ইলিয়াস ।
আফনেদের দোয়াতে ভ্যালা আছি স্যার । দূর থেইক্কা দেখলাম মাগী ভ্যানের দিকে গেছে । জব্বর মাল পাইছি স্যার । একেবারে টাটকা কচি । বড় স্যারের খুব পছন্দ হইবো ।
ইলিয়াস বিশ্রীভাবে হাসচ্ছে ।

লিয়াকত আলী জানে ইলিয়াস ঐ অল্প বয়সী পতিতা মেয়েটার কথাই বলছে । অথচ তারপরও তার কেবলই নিজের ১৪ বছরের আদুরে মেয়েটার মুখের মনে পড়ছে । তিনি বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়ালেন । তিনি বুকে হটাত করেই চিনচিনে একটা ব্যাথা অনুভব করছেন ।

কনস্টেবল লিয়াকত আলী ঠোঁটে জ্বলতে থাকা সিগারেট অন্ধকারে ছুড়ে ফেলে দিল । ইকরাম স্যারের সিগারেট টানতে তার ঘেন্না হচ্ছে । ঘেন্না লাগছে নিজেকে ।






অনুগল্প - যৌনাবেগ - নতুন দুলাভাই এবং ...

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৪
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×