রনক ইকরাম, তোর বাবা কি চোর ছিলো? যার কারণে তুই চুরি করছিস। চুরি করা অভ্যাসটা ছেড়ে দে। তুই তো বাংলাদেশ প্রতিদিনের দুর্নাম করছিস। কালের কন্ঠেরও বারোটা বাজাবি। কালের কন্ঠের মূল স্লোগান ছিল_আংশিক নয়, পুরাপুরি সত্য। সেই কথানুসারে তুই লেখাটি পুরাপুরি চুরি করলি? অপেক্ষা কর, খুব শীগ্রই মজাটা বুঝবি। আরে অকৃতজ্ঞ তথ্যসূত্র উল্লেখ করতে কস্ট লাগে।
ব্লগার বন্ধুরা, রনক ইকরাম চোর সাহেব নিচের লেখাটি আজ বাংলাদেশ প্রতিদিন ছাপিয়েছেন। উনি, চোর সাহেব http://www.biplobiderkotha.com থেকে চুরি করেছেন। রনক ইকরাম চোর সাহেবের আজ প্রকাশিত লেখাটি কপি করে দিলাম। আপনারা সময় পেলে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন।
ব্লগার বন্ধুরা, আপনারা অবগত আছেন আমার এই লেখাটি ২০০৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংবাদের সাহিত্য সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। ২০০৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সাপ্তাহিক একতায় বের হয়। ২০০৯ সালে সামহোয়ারইনব্লগে প্রকাশিত হয়। ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি http://www.biplobiderkotha.com এর বিশ্বের বিপ্লবী পৃষ্ঠাতে আপডেট করা হয়।
সোমবার ১২ জুলাই ২০১০, ২৮ আষাঢ় ১৪১৭, ২৯ রজব ১৪৩১
অনুসন্ধান : ইউনিজয় ফনেটিক search
close
বাংলাদেশ প্রতিদিন অনুসন্ধান গুগল ওয়েব অনুসন্ধান
নোবেলজয়ী পাবলো নেরুদার জন্মবার্ষিকী
প্রেম ও দ্রোহের কবি
রনক ইকরাম
পাবলো নেরুদা ছিলেন চিলির কবি ও রাজনীতিবিদ। তাঁর প্রকৃত নাম রিকার্ডো নেফতালি রেয়িসই বাসোয়ালতো। পাবলো নেরুদা প্রথমে তাঁর ছদ্মনাম হলেও পরে নামটি আইনি বৈধতা পায়। কৈশোরে তিনি এই ছদ্মনামটি গ্রহণ করেন। ছদ্মনাম গ্রহণের পেছনে দুটি কারণ ছিল। প্রথমত, সে যুগে ছদ্মনাম গ্রহণ দারুন জনপ্রিয় রীতি ছিল। আর দ্বিতীয়ত, এই নামের আড়ালে তিনি তাঁর কবিতাগুলো বাবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেন। তাঁর বাবা ছিলেন কঠোর মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি। তিনি চাইতেন তাঁর পুত্র কোনো ব্যবহারিক পেশা গ্রহণ করুক। নেরুদা নামটির উৎস চেক লেখক জান নেরুদা এবং পাবলো নামটির সম্ভাব্য উৎস হলেন পল ভারলেইন। পাবলো নেরুদাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রভাবশালী লেখক মনে করা হয়। তাঁর রচনা অনূদিত হয়েছে একাধিক ভাষায়। প্রেম ও বিদ্রোহের কবি নেরুদার জন্ম ১৯০৪ সালের ১২ জুলাই। চিলির পারালে। তাঁর বাবা ছিলেন একজন রেল শ্রমিক আর মা ছিলেন শিক্ষয়িত্রী। নেরুদার জন্মের ২ মাসের মধ্যে তাঁর মা মারা যান। বাবাও বেশিদিন বাঁচেননি। সৎ মায়ের কাছে কেটেছে শৈশব। ১৯২০ সালে ষোল বছর বয়সে পত্রিকায় নেরুদা নাম নিয়ে লেখালেখি শুরু। ১৯২৩ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম কবিতার বই ক্রেপুস্কুলারিও অর্থাৎ গোধূলি লগ্নের গ্রন্থ। ১৯২৪ সালে প্রকাশিত হয় ভেইন্তে পোয়েমাস দে আমোর ই উনা কানসিওন দেসেসপেরাদা অর্থাৎ বিশটি প্রেমের কবিতা ও একটি নিরাশার গান। এই বইটি প্রকাশের পর সাহিত্যজগতে ঝড় উঠল। এতে ছিল ভালোবাসা-প্রেম ও যৌবনের আবেদন। এ নিয়ে শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক। প্রশংসা করেন অনেকেই। আবার সমালোচনাও কম নয়। অনেক ভাষায় বই দুটোর অনুবাদ প্রকাশিত হয়।
১৯২৭ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে আর্থিক অনটনের কারণে রেঙ্গুনে (মায়নমার) চিলির রাষ্ট্রদূত হিসেবে সরকারি চাকরিতে যুক্ত হন। পরবর্তী সময়ে একই দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন সিলোনের কলম্বোয়, বাটাভিয়ায় (জাভা) ও সিঙ্গাপুরে। ১৯৩৪ সালে তিনি চিলির রাষ্ট্রদূত হয়ে স্পেনে যান।
১৯৪২ সালে নেরুদা রচনা করেন 'কান্তো আ স্তালিনগ্রাদো' নামে একটি কবিতার বই। ১৯৪৩ সালে 'নুয়েভো কান্তো দে আমোর আ স্তালিনগ্রাদো' নামে আরেকটি বই রচনা করেন। এ দুটো কবিতায় তার কমিউনিস্ট চেতনা ও সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি অনুরাগ প্রকাশ পায়। এ সময় তিনি চিলির রাষ্ট্রদূত হয়ে মেঙ্েিকাতে ছিলেন। ১৯৪৫ সালের ৪ মার্চ আতাকামা মরু অঞ্চলের আন্ডোফাগাস্তা ও তারাপাকা প্রদেশের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে সিনেটর নির্বাচিত হন নেরুদা। ১৯৪৪ সালের শেষের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিলির কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৪৬ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গাব্রিয়েল গনজালেস ভিদেলার পক্ষে নেরুদা প্রচারণা চালান। ১৯৫৩ সালে নেরুদা স্তালিন শান্তি পুরস্কার পান। ওই বছরই স্তালিন মারা যায়। তাঁকে নিয়ে শোকগাঁথা রচনা করেন তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কিউবার ফুল গেনসিও বাতিস্তা ও পরে ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে প্রশংসা করে কবিতা লেখেন। লেনিন সম্পর্কে বলেছেন, 'গ্রেট জিনিয়াস অফ দিস সেঞ্চুরি।'
১৯৪৫ সালে খনি শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী আইন প্রণয়নের প্রতিবাদ করায় চিলি সরকারের রোষানলে পড়েছিলেন নেরুদা। ১৯৪৭ থেকে '৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। ১৯৪৮ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী গাব্রিয়েল গনজালেস ভিদেলা সাম্রাজ্যবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করে। যার ফলে বাধ্য হয়ে দেশ ছাড়েন নেরুদা। চলে যান ইউরোপে। ১৯৫০ সালে ভারতে এসেছিলেন। ১৯৫২ সালে চিলিতে ফিরে যান। ১৯৬৯ সালে চিলির কমিউনিস্ট পার্টি নেরুদাকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের জন্য মনোনীত করে। পরে সম্মিলিত বামফ্রন্ট সালভাদোর আলেন্দেকে সর্বসম্মত প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করলে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন নেরুদা।
নেরুদার প্রকাশিত ৬৫টি কাব্যগ্রন্থের মধ্যে কয়েকটি বইয়ের বাংলা নাম হলো- গোধূলিলগ্ন, ক্ষুদ্র মানুষের ঝুঁকি, মর্ত্যের অধিবাসী ১ ও ২, তৃতীয় অধিবাসী, হে স্পেন আমার হৃদয়, স্তালিনগ্রাদের সংগীত, মাচ্চু-পিচ্চুর শিখরে, মুক্তিযোদ্ধা, এই প্রান্তরের নাম হুয়ান, হে মহাসমুদ্র, আমি আছি, প্রজ্বলিত তরবারি, অনুর্বর ভূখণ্ড, সমুদ্রের ঘণ্টাধ্বনি ইত্যাদি।
১৯৭১ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান তিনি। চিলিতে অগাস্তো পিনোচেটের নেতৃত্বাধীন সামরিক অভ্যুত্থানের সময়েই ১৯৭৩ সাল নাগাদ প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হন নেরুদা। তিন দিন পরই ১৯৭৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সান্তিয়াগোর সান্তা মারিয়া ক্লিনিকে মারা যান তিনি। পিনোচেট নেরুদার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াকে জনসমক্ষে অনুষ্ঠিত করার অনুমতি দেননি। যদিও হাজার হাজার শোকাহত চিলিয়ান সেদিন কার্ফ্যু ভেঙে পথে ভিড় জমান। পাবলো নেরুদার অন্ত্যেষ্টি পরিণত হয় চিলির সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রথম গণপ্রতিবাদে। সব মিলিয়ে পাবলো নেরুদা বিশ্বজুড়েই একজন কবি এবং রাজনীতিক হিসেবে সমানভাবে সমাদৃত।