somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অমীমাংসিত সপ্তরহস্য

১২ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



Voynich Manuscript (ভইনিশ ম্যানুস্ক্রিপ্ট):



নানাবিধ রঙিন ছবি সম্বলিত এ পান্ডুলিপিটি এখন অব্দি সবচেয়ে রহস্যময় পান্ডুলিপি হিসেবে বিবেচিত।ধারনা করা হয়, ১৫শতকের শুরুর দিকে উত্তর ইতালীতে এটির ব্যুৎপত্তি।প্রত্নতাত্ত্বিক উইলফ্রিড এম. ভইনিশ ১৯১২ সালে এটি সংগ্রহ করেন, তাঁর নামানুসারেই পান্ডুলিপিটির নামকরণ করা হয়।২৪০ পৃষ্ঠার এ পান্ডুলিপিটি এমন ভাষায় লিখা হয়েছে যা অজানা।এর প্রতিটি পৃষ্ঠা জুড়ে রয়েছে অদ্ভূত কিছু রঙিন নকশা ও কিদ্ভূতাকৃতির গাছের ছবি যা এ গ্রহের কোন প্রজাতির সাথে মেলে না।



এ পান্ডুলিপিটির উৎপত্তি ও প্রকৃতি সম্পর্কে প্রচুর তত্ত্ব রয়েছে।অনেকে মনে করেন এটি হচ্ছে ঔষধ প্রস্তুত করার প্রণালীসম্বন্ধে নির্দেশসংবলিত পুস্তক বা তালিকা,যা মধ্যযুগীয় ঔষধ শিল্পের প্রসারের জন্য লিখা হয়েছে।নানান ধরণের তৃণ ও গাছের ছবি থাকায় ধারণা করা হয় যে এটি আলকেমিস্টদের জন্য রচিত একটি গ্রন্থ।জ্যোতির্বিদ্যা-সংক্রান্ত কিছু রেখাচিত্র, অশনাক্তযোগ্য জীববিদ্যিয় ছবির জন্য অনেকে পান্ডুলিপিটিকে রীতিমত অ্যালিয়েন নির্মিত মনে করেন!!
‘পান্ডুলিপিটির নির্মাণশৈলী, এর পিছনে ব্যায়কৃত সময় ও শ্রম’ বিবেচনা করে একটি ব্যাপারে বেশীর ভাগ অভিজ্ঞরাই একমত পোষণ করেন- পান্ডুলিপিটি কোন প্রকারের ভাঁওতাবাজি না, এতে নিশ্চিতভাবেই কিছু লুকানো আছে।

ম্যানুস্ক্রিপ্টটির পিডিএফ


Kryptos (ক্রিপ্টোস):



একটি রহস্যাবৃত সংকেত সম্বিলিত ভাস্কর্য-ক্রিপ্টোস।আমেরিকান চিত্রকর্মী জিম স্যানবর্ন নির্মিত স্থাপনাটি CiA এর সদরদপ্তরের সম্মুখে স্থিত।সংকেতরূপে লেখা $২৫০,০০০ মূল্যের স্থাপনাটির ৪টির মধ্যে প্রথম ৩টি অংশের সমাধান বের করা গেলেও ৪র্থটি এখনো অনাবিস্কৃত।এটি এতোটাই কঠিনভাবে লিখিত যে CiA এর ঘাঘু ব্যক্তিরাও এর মানে বের করতে সক্ষম হননি এখন পর্যন্ত।এর সমাধানের জন্য ২০০৩ সালে Yahoo! একটি গ্রুপ খোলে যেটিতে রয়েছে ২০০০ সদস্য।


(ক্রিপ্টোস এর একাংশ)

২০০৬ সালে স্যানবর্ন চতুর্থ খন্ডের রহস্যের উপর আলোকপাত করে বলেন, প্রথম খন্ডের মধ্যে নিহিত রয়েছে এর সমধান।২০১০ সালে তিনি জানান আরেকটি তথ্য-চতুর্থ অংশের ৬৪-৬৯ নম্বর অক্ষরগুলো ‘NYPVTT’ পাঠোদ্ধার করলে দাঁড়ায় ‘BERLiN’ । স্যানবর্ন বিবৃতি দেন যে, ভাস্কর্যের রহস্য সমাধানের আগেই যেন তাঁর মৃত্যু হয় এবং বিশ্বাস করেন তিনি ছাড়া অন্য কেউ একজন এর অর্থোদ্ধার করতে পারবে।


BeaLe Ciphers (বিল সাইফার্স):

বিল সাইফার্স হলো তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সংকেতলিপির একটি গুচ্ছ।ধারণা করা হয়ে থাকে এটি যুক্তরাস্ট্রের সবচে প্রাচুর্যময় গুপ্তধনের অবস্থান উন্মোচিত করবে:যেখানে রয়েছে হাজার হাজার পাউন্ডের স্বর্ণ, রুপা ও মনি রত্ন যার আনুমানিক মূল্য $৬৩মিলিয়ন।১৮১৮ সনে কলোরাডোতে খননকার্য করার সময় থমাস জেফারসন বিল নামে একজন রহস্যময় লোক এ গুপ্তসম্পদ পান।বিল সেই গুপ্তধনের অবস্থান তিনটি সংকেতে লিপিবদ্ধ করে একজন সরাইখানার মালিককে দিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান, এরপর আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।


১ম সংকেত


২য় সংকেত


৩য় সংকেত

তিনটির মধ্যে এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র দ্বিতীয়টির অর্থোদ্ধার করা গিয়েছে যেটিতে বলা হয়েছে গুপ্তধনগুলো বেডফোর্ড কাউন্টি,ভার্জিনিয়ায় সমাধিস্থ আছে। এর সঠিক অবস্থান জানতে গুপ্তধন শিকারীরা পুরো জায়গাটি তন্ন তন্ন করে চষে বেড়াচ্ছে আজ অব্দি।


বেডফোর্ড কাউন্টি,ভার্জিনিয়া


Shugborough inscription (শাগবাঢ়ৌ ইন্সক্রিপশন):

শাগবাঢ়ৌ ইন্সক্রিপশন হচ্ছে কয়েকটি অক্ষর ‘O U O S V A V V’ এর ধারা যা আরো দুটি অক্ষর ‘D M’ এর মাঝে অবস্থিত।



নিকোলাস পুস্সিন এর চিত্রকর্ম “দ্যা শেফার্ডস অফ আর্কাডিয়া”র আদলে নির্মিত ভাস্কর্যের নীচে অক্ষরগুলো খোদাইকৃত রয়েছে।১৯৮২ সালে মাইকেল বেইজেন্ট, রিচার্ড লেই এবং হেনরী লিঙ্কন রচিত বই “দ্যা হলি ব্লাড অ্যান্ড দ্যা হলি গ্রেইল” প্রকাশিত হবার পর এ সংকেতলিপিটি বিশদভাবে পরিচিতি লাভ করে।


(দ্যা শেফার্ডস অফ আর্কাডিয়া)

কথিত আছে, এ সংকেতটির পাঠোদ্ধার করতে জোশিয়া ওয়েজউড, চার্লস ডারউইন ও চার্লেস ডিকেন্স এর মতো ব্যক্তিরাও ব্যার্থ হয়েছিলেন !!


Tamam Shud Case (তামাম শুদ কেইস):

১লা ডিসেম্বর, ১৯৪৮- সময় ভোর ৬:৩০ মিনিট।অস্ট্রেলিয়ার সমারটন বীচের তীরবর্তী এলাকায় পাওয়া যায় একজন ব্যক্তির মরদেহ।তার ট্রাউজারে পাওয়া যায় গুপ্ত একটি পকেট যেখান থেকে উদ্ধার করা হয় ছোট্ট একটি কাগজ যাতে লিখা ছিল ‘Tamam Shud’-এর মানে দাঁড়ায় সমাপ্তি,যা ওমর খৈয়ামের রুবাইয়াৎ কাব্যগ্রন্থের শেষ পৃষ্ঠার ছেঁড়া অংশে লিখা ছিল।



তবে রহস্য ঘনীভূত হয় যখন অ্যাডিলেড রেলস্টেশনে একটি বাদামী রঙের ব্যাগ পাওয়া যায় যাতে ছিল রুবাইয়াৎ এর একটি কপি, সেটিতে লিখা ছিল কিছু সাংকেতিক শব্দ।


(ব্যাগে পাওয়া রুবাইয়াৎ এর কপিতে লিখিত সংকেত)

গোয়েন্দা বিভাগের ধারণা ব্যাগটি সে মৃত ব্যক্তিটিরই।কোনভাবেই ঐ ব্যক্তির পরিচয় উদঘাটন করা যায়নি,তার মৃত্যুর কারণ ও অজানাই রয়ে গিয়েছে।


(অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ)


The Wow! SignaL (দ্যা ওয়াও! সিগন্যাল):

সাল ১৯৭৭, গ্রীষ্মের এক রাতে SETi(Search for ExtraterrestriaL inteLLigence) এর স্বেচ্ছাসেবক জেরী এহম্যান গভীর মহাশূন্যের রেডিও তরঙ্গ স্ক্যান করছিলেন।হঠাৎ ভিন্ন ধরণের একটি সংকেত তাঁর রেডিওতে ধরা পড়ে।সংকেতটি ৭২ সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।এহম্যান সাথে সাথে তা রেকর্ড করে নেন।সেটি ছিল প্রবল ও এর উৎপত্তিস্থল ছিল এমন এক জায়গা থেকে যেখানে মানুষ আগে কখনো পৌঁছাতে পারেনি:-১২০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি নক্ষত্র ‘Tau Sagittarii’।
হতভম্ব এহম্যান সিগন্যালটির প্রিন্ট আউটের উপরে Wow! লিখেন, যে কারণে এটি Wow! SignaL নামে পরিচিত।



সিগন্যালটির অবস্থান জানার সব প্রচেষ্টাই বৃথা গিয়েছে।এটি জন্ম দিয়েছে নানা প্রকার বিতর্ক এবং তা অ্যালিয়েনদের অস্তিত্ত্বের সম্ভাবনা আরো বাড়ায়।


The Zodiac Letters (দ্যা যোডিয়াক লেটারস):

সাল ১৯৬০ এর শেষ এবং ১৯৭০ এর শুরুর সময়ে স্যান ফ্র্যান্সিসকো বে শহরের অধিবাসীরা আতংকে জর্জরিত ছিল একজন সিরিয়াল কিলারের ভয়ে যে নিজেকে যোডিয়াক নামে পরিচয় দিয়েছিলো।অজ্ঞাত পরিচয়ের এ খুনী ৪জন পুরুষ ও ৩ জন মহিলাকে খুন করে নৃসংশভাবে।মূলত বিদ্রুপ করতে সে পুলিশ ও সাংবাদিকদের নিকট চারটি সাংকেতিক চিঠি পাঁঠায় যার মধ্যে শুধু প্রথমটিরই সমাধান বের করা সম্ভব হয়।

যোডিয়াক কিলারের চিঠিসমূহ

১৯৭০ এর পর যোডিয়াকের আর কোন খুনের নিদর্শন পাওয়া যায়নি।


(যোডিয়াকের স্কেচ)

** ২০০৭ সালে এ ঘটনার উপর ভিত্তি করে Zodiac নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। ডাউনলোড লিঙ্ক।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৫:১৭
৬৩টি মন্তব্য ৬৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×