ঈদের ছুটি প্রায় দোর গোড়ায় । কিন্তু কোন কোন প্রফেশনের লোকজনের ছুটি নেই । তারা কাজ করবেন হাসপাতালে । লাইট ক্যামেরা , মাইক্রোফোন নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ছুটে যাবেন । তারা টিভি সাংবাদিক । তাদের কষ্টের কথা স্মরণ করে পোস্ট শুরু করছি ।

কয়েকটি অন্যরকম পোস্টের সংকলন নিয়ে এই পোস্ট ।
প্রতিটি পোস্ট ই বহুল পঠিত । আমার মনে হয় , সবার ই কমন পড়ে যাবে । এগুলোতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয় গুলো একটু ভিন্ন ভাবে একটু চমকপ্রদ ভাবে চলে এসেছে ।
(১)
সংকলনের প্রথম পোস্ট দেয়ার আগে এক রোগীর গল্প বলি ।
একদিন সে চোখের পানি সামলানোর বৃথা চেষ্টা করতে করতে বললো " আমাকে একটু বিষ দেন খেয়ে মরে থাকি ।"
এই রোগী র বাচ্চা হচ্ছেনা । সম্প্রতি তার হাইপোথাইরয়েড ধরা পড়েছে । গলার কাছের থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থেকে যতটা দরকার ততটা হরমোন আসছেনা । তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে । এখন ধৈর্যের পরীক্ষা । কিন্তু তার কি ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে ?
যেটা জানলাম তার হাইপোথাইরয়েড এর সমস্যার কথা তার স্বামীর বাড়ির লোকজন জানার পর সংসারে বিরাট অশান্তি শুরু হয়ে গেছে । তারা প্রায় নিশ্চিত এর আর বাচ্চা হবেনা । কয়েক জন ডাক্তারের সাথেও নাকি তারা এ ব্যাপারে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছে । এখন স্বামীর উপর পুরো চাপ চলছে , এই বউ ত্যাগ করে আবার বিয়ে করার ।
স্বামী বেচারা মায়ের বাড়ির দিকে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে । কিন্তু এভাবে আর কত দিন ?
কতদিন ? আমিও দীর্ঘশ্বাস ফেললাম ।
একবছর পর ঝিঙের বিচির মত কালো এক শিশু নিয়ে এই দম্পতি ঢুকল । এরা নিজেরাও ঝিঙের বিচির মত । সুতরাং এই বাচ্চা যে ওদের , আপনি দেখেই বুঝে ফেলবেন , কোনই সন্দেহ করবেন না । আমিও করিনি কারণ এই সময় টা আমি ওদের পাশে ছিলাম ।

ভাগ্যিস স্ত্রীর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ সব অশান্তি মাথা পেতে নিয়েও স্বামী তাকে ছেড়ে যায়নি ।
যাই হোক অন্য রকম এক গল্প পরিবেশন করেছেন খেয়া ঘাট ।
"ছোটগল্প- পীনোন্নত বক্ষ"
এই গল্প টির প্রেজেন্টেশন দেখে চমকে গেলাম । সুন্দর । পড়লে আপনার ও ভাল লাগবে ।
ছোটগল্প- পীনোন্নত বক্ষ
(২)
এর পরের গল্প এ্যনার আর টম দম্পতির
এ্যনার বয়স ৩৪ টমের ৪০, তাদের প্রেমের বয়স প্রায় ২০ বছর, আর তাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় ১০ বছর। তাদের সুখি সংসার, এ্যনা বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছে, শীর্ষ থাকবার স্বপ্ন পূরণ না হলেও জীবনে অন্যকোন কিছুর অভাব নাই বললেই চলে। অসাধারণ সুন্দরী এ্যনার আর টম দম্পতির জীবনে বর্তমানে একটাই সমস্যা, আর তা হল, তারা দীর্ঘ ৬ বছর ধরে সন্তান নেয়ার চেষ্টা করবার পরেও তাদের কোন সন্তান হচ্ছে না!!!
আশায় থাকতে থাকতে এক পর্যায় তারা ইনফারটিলিটি বিশেষজ্ঞ ডাঃ হারভির শরণাপন্ন হলেন। ডাঃ হারভির সাথে প্রথম সাক্ষাতেই, যখন উনি কেইস হিস্ট্রি নিচ্ছিলেন, এ্যনা অদ্ভুত এক তথ্য দিল। এ্যনার কোন দিন ঋতুস্রাব হয়নি!!! এমন কি এটা কি জিনিস এ্যনা জানেই না??!!
বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে প্রাইমারি এমেনোরিয়া। কিন্তু এই ধরনের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মায়েরা তাদের মেয়েদেরকে ১৫ কিংবা ১৬-১৭ বছর হতে না হতেই ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসেন। ২৮ বছরের একজন মেয়ে মানুষের কাছ থেকে এই ধরনের তথ্য পাওয়া নিতান্তই অদ্ভুত। কিন্তু ঘটনা সত্যি!!!!
বাকিটা জানতে পড়ে ফেলুন

ব্লগার মুদ্ দাকির এর
ভালোবাসার জৈবিক বিজ্ঞানঃ টেষ্টোস্টেরন
(৩)
ব্লগার মনিরা সুলতানা লিখেছেন ,মা হবার গল্প । বহুল পঠিত এই পোস্ট টা পেশাগত জীবনে আমার সাবজেক্টের সাথে যাওয়ায় এটি আমার পছন্দের একটি পোস্ট ।

দেহঘড়ির মিস্তিরি বলেছেন: আপানর পোষ্ট দেখে মনে পড়ে গেল , হিউম্যান বডি সর্বোচ্চ যতটুকু পেইন সহ্য করতে পারে , মাতৃত্ব কালীন পেইন তার চেয়ে ৫-৬ গুন ।
আমরা ফ্রেন্ড গুলো মজা করে বলি , পৃথিবীতে তিন জাতি বাস করে নারী-পুরুষ আর মা জাতি ।
কোথাও পড়েছিলাম স্বর্গের এঞ্জেলরা নাকি পৃথিবীতে আশার অনুমতি পায় না , তাই মা জাতির সৃষ্টি।
কথাটার সাথে একশভাগ সহমত ।
ভাল থাকবেন , নিরন্তর শুভ কামনা আপনার প্রতি এবং বাবুদের প্রতি
ইচ্ছে হয়ে লুকিয়ে ছিলি মনের মাঝে রে ( আমার মা হবার গল্প ) -২
(৪)
আমার লেখা একটি ব্লগ যুক্ত করতে পারি ? :!>
ব্লগটি আসলে কেমন এই বিষয়ে আমার ধারণা নেই । সবাই বলল ভাল , তাই আমারো মনে হল , হয়ত ভাল । সবাই কে অনেক ধন্যবাদ ক্রমাগত উতসাহ দিয়ে যাবার জন্য । তা না হলে লিখা হয়ে উঠত না ।
এই ব্লগ নিয়ে ফারজানা শিরিন বলেছিলেন , পড়তে পড়তে আনন্দে কেঁদে দিলাম । আপু অনেক সুন্দর । অনেক অনেক অনেক অনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেকঅনেক অনেক অনেক সুন্দর । : )
কাজল রেখা ও তার সন্তান আর একলাম্পসিয়া
(৫)
এবার আর গল্প নয় , এটা এক আবিষ্কারের কাহিনী ।

এনেসথেসিয়া নিয়ে এমন প্রাণবন্ত লেখা ব্লগার দক্ষিনা বাতাসের । লেখা এমন হলে তবেই না পড়তে ইচ্ছে করে ।
এরিস বলেছেন: আপনার লেখা পড়ে কিছু মন্তব্য করার নাই। শুধু এইটুকু বলবো, শেখার জন্যে খুব প্রাণবন্ত একটা স্কুল খুঁজে পেয়েছি এখানে। ক্লাস ফাকি দিবো না, আই প্রমিস।
বিজ্ঞানের খাতা-১০: এনেসথেসিয়া আবিষ্কার। চিকিৎসা জগতের মাইলফলক।
(৬)
অবশেষে আমার সবচেয়ে প্রিয় পোস্ট ।

ব্লগার মেলবোর্ন কে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর এই পোস্ট সিরিজ আমাদের উপহার দেয়ার জন্য । তাঁর জন্য অনেক শুভকামনা । এই সংকলনে নিঃসন্দেহে এই পোস্ট সেরা । ইসলাম নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে তাদের সবার ভাল লাগবে সুন্দর এই পোস্ট ।
# কোরআনের ভাষাগত সৌন্দর্য:পর্ব ১০ -- যখন আমি রোগাক্রান্ত হই, তখন তিনিই আরোগ্য দান করেন।
মূল পোস্ট শেষ ।
ইতিহাস বলে জাতি হিসেবে আমরা ভাল রকমের অকৃতজ্ঞ । আর এই অকৃতজ্ঞতা নামের নেগেটিভ দিকটিকে উস্কে দেয়ার জন্য হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ছুটে বেড়াবেন কয়েকজন হলুদ সাংবাদিক ।
তারা কিছুতেই ডাক্তার খুঁজে পাবেন না ।

এই মানুষগুলোর পিছনে এক একটি পরিবার আছে । যেখানে কোন সন্তান হয়ত বসে থাকে , কখন তার মা আসবে । অথবা কোন স্ত্রী বসে থাকেন স্বামীর অপেক্ষায় ।
অপেক্ষায় থাকেন কোন হাসবেন্ড তার স্ত্রীর জন্য , কোন মা তার সন্তানের জন্য । তাঁদের এই ত্যাগ কে খাটো করে দেখতে পারিনা । বরং সালাম জানাই ।
সবার সুস্বাস্থ্য আর আনন্দিত মনের জন্য প্রার্থনা করছি । সেই সাথে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা । ঈদ মোবারক ।





ছবি ঃ গুগল
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০২