somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুমিয়োনা দীপ্তিময়ী

২৩ শে মে, ২০১৩ রাত ২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দীপ্তিময়ী,
এই দীর্ঘ চিঠিটা ঠিক কী উদ্দেশ্যে তোমাকে লিখছি জানি না। তোমার আর আমার মাঝে অবিশ্বাসের দেয়াল দাঁড় করিয়েছিলো প্রবঞ্চক হৃদকর্মীরা। আমরা শীতলতার সওদা করেছি হিমপাখিদের বুকের ভেতর থেকে। আমার স্পর্শে তোমার হিরকসূর্যমুখী দেদীপ্যমনতা ম্লান হতে হতে নিভু নিভু কুপিবাতির মত হয়ে গিয়েছিল। তারপরেও কেন লিখছি তোমায়? কিসের আশায়? তুমি আবার জোনাক হবে? গোলাপ হবে? চড়ুই হবে? আমার জোনাকবাতি, গোলাপদানী, আর চড়ুইরেডিও সব হারিয়ে গেছে। এখন আমি কালান্তক অন্ধকারে নিমজ্জিত। নিঃশ্বাস নিতে গেলে ভক করে ফুসফুসের ভেতর ঢুকে যায় হৃৎপিন্ডের পচে যাওয়া কুচি কুচি ধ্বংসপিন্ড। তোমার কন্ঠ শুনতে চাইলে নিরন্তর নিরীখকারী বাজপাখিরা এসে কানের ভেতর ঠোকড়াতে থাকে। যেদিন তুমি পুরোপুরি নিভে যাবার আগে জ্বলে উঠলে অনন্ত নক্ষত্ররাজীর সমস্ত আভা নিয়ে, সেদিন তোমাকে স্পর্শ করতে গিয়ে আমি হাত পুড়িয়ে ফেলেছিলাম। তারপর থেকে স্পর্শ-গন্ধহীন পিচুটে জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। রাতের পর রাত কেটে গেছে তারাহীন বন্ধ্যা আকাশ দেখে। নির্মোহ সত্যের মত শৈত্যপ্রবাহ এসে ভাসিয়ে নিয়ে যেত ভালোবাসাহীন সরোবরে। সেখানে আমার ভুলগুলো সাঁতরে বেড়াত পিরানহা মাছের মত হিংস্র হয়ে। আমাকে দংশন করত। দেখ আমার শরীরে অজস্র ক্ষতচিহ্ন অনুযোগহীন, নত হয়ে আছে লজ্জাবতী গাছের মত। আমি লজ্জিত আমার ভুলের জন্যে। না, তোমার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে আমার এই ক্ষতবিক্ষত শরীর উদোম দেখাব না। করুণাপ্রার্থী হবার যোগ্যতাও যে হারিয়ে ফেলেছি যেদিন তোমাকে প্রথম আঘাত করলাম, রক্ত ঝরালাম তোমার শরীর থেকে মদোন্মত্ত অবস্থায়। এর আগেও আমার উদ্দাম, বেপরোয়া জীবনের রাশ টানতে গিয়ে তোমাকে হড়কে পড়ে আঙুল ভাংতে হয়েছে। অবিশ্বাসের দেয়ালে মাথা ঠুকে যাবার সময়টাও কাছাকাছিই ছিল। তুমি শীতল হতে থাকলে। তোমার দীপ্তি কমতে লাগলো। আর আমি তখন বোকার মত এতসব কিছু খেয়াল না করে পঙ্কিলতার অশ্বারোহী হয়ে চড়া দামের টিকিট কেটে এ্যামিউজমেন্ট পার্কে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। একবার, বেশ অর্থকষ্টে পড়েছিলাম। কী করব খুঁজে না পেয়ে তোমার কাছে এলাম, স্পর্শ করলাম। তখন ছিল উজ্জ্বল সূর্যালোকিত দিন। তখন ছিল চৈতালী বাতাসের আনন্দমুখরতা। আর আমার ছোঁয়ায় তোমার দীপ্তিময়ী হওয়াটাতো প্রত্যাশিতই ছিল! সেদিন আমি অবাক চোখে তাকিয়ে দেখলাম তোমার দীপ্তিহীনতার সাথে সুন্দর পরিপার্শ্ব কিভাবে বদলে গেল! শুকনো, ঠান্ডা তোমার হাত ধরে আমি স্মৃতির ট্রেনে চড়ে চলে গেলাম ভালোবাসার উৎসমুখে, বিভ্রান্ত যাত্রীর মত...

তুমি ছিলে রোদ্দুরের মত আলোকিত, আমি ছিলেম ছায়ার গ্যাসবেলুন। অস্তিত্ব খুঁজে বেড়াতাম এর ওর কাছে, একসময় তারা নিজেরাই অস্তিত্বহীন হয়ে যেত। ছায়াদের নিজস্ব শারীরিক অবয়ব নেই, তারপরেও তারা ক্লান্ত হয়, ভীষণ ক্লান্তি তাদের কাঁদায়। কান্নাকে আমি একটা হাস্যকর রসিকতা মনে করতাম। ছায়ার গ্রাসে হারিয়ে যাচ্ছিল আমার সব রঙ, অনুভূতি। আমি আবিস্কার করলাম, আমি আর কাউকে ভালোবাসতে পারবো না। ভালোবাসার মিহিবুনটে গড়া আচ্ছাদন কুটকুট করে কামড়াতে থাকলাম পেটুক ইঁদুরের মত। অপোনুভূতির ভাঁড়ারঘরে এভাবে বেশ কাটছিল দিন। হঠাৎ একদিন সুড়ঙ্গ বেয়ে আলো, হঠাৎ আমার অন্ধ হল চোখ তোমার আগমনযানের সম্মুখবাতির তীব্র আলোকছটায়। এত আলো, এত আলো! ভূবন ভরা আলো। ভালোবাসা যেন আমার ওপর ভরসা করতে পারলো আবার। আমি শুধোলাম,
"ভালোবাসা, এ কোন ভরসায় আবার তুমি ডাকছো আমায়?"
এসব প্রশ্নের কোন উত্তর হয়না। তোমার দেয়া আলোকচুম্বন আমার ছায়াশরীরের জমিনে প্রবল অনুভূতির বীজ রোপন করে দিল। ভালোবাসা নামক বহুল ব্যবহৃত একটি স্ল্যাংকে আমার প্রথমবারের মত শূদ্ধতম শব্দ মনে হল। প্রথমে ভেবেছিলাম যে এ অনুভব সাময়িক। সময়ের সাথে সাথে উবে যাবে, উড়ে যাবে। কিন্তু রৌদ্রময়ীর বুনে দেয়া শেকড় এমনভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল, যে আমার আর যাবার কোন পথ ছিল না...
আমাদের চলার পথে কোন প্রতিকূলতা ছিল না। ছিলো না কোন সামাজিক বা পারিবারিক বিধিনিষেধ। আকাশ থেকে খসে পড়া উজ্জ্বলতম তারা, রৌদ্রময়ী, তুমি তোমার সব আলো গচ্ছিত রাখলে আমার কাছে। আমার সংস্পর্শ পেলেই কেবল অনুভবের অনুরনন ঘটত তোমার শরীরে, এক অদ্ভুত সুন্দর আভায় তুমি দীপ্তিময়ী হয়ে উঠতে। আগের মত রোদচঞ্চল প্রখর এবং প্রবল রৌদ্রময়ী না, স্নিগ্ধ এবং কোমল হয়ে উঠেছিলে তুমি, আমার দীপ্তিময়ী! আর আমি জেনেছিলাম, এই মৃদু আলোতে মোহগ্রস্থ আত্মহত্যাপ্রবণ পোকাদের মত বারবার, আজীবন ছুটে আসা, পুড়ে যাওয়াই আমার নিয়তি। কে জানতো একদিন সব আলো নিভে যাবে, সব উষ্ণতা উবে যাবে!

এই চিঠিটা লিখতে গিয়ে বারবার মনে পড়ছে আমাদের প্রতিটা রিক্সাভ্রমণ, চাকুরির লিখিত পরীক্ষা শেষে তোমার জন্যে মহিলা কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে থাকা আমি, পহেলা বৈশাখে নাগরদোলায় চড়া, পুতুলনাচ, শীতের বিকেলে হ্রদের ধারে বসে অস্তাভা দেখা। বিকেলের বিদায়ী সূর্যটা আমার স্পর্শে তোমার দীপ্তিময়ী হয়ে ওঠা দেখে রঙ বিনিময় করতে চাইতো। তখন ছিলো সূর্যের দিন।

আর এখন! তুমি বরফের তুলট চাদর গায়ে দিয়ে শুয়ে আছো কোন মেরুপ্রদেশে। আমি চকমকি পাথর হাতে নিয়ে তোমার পিছু ছুটছি, একটু আলোর জন্যে, একটু আভার জন্যে, তোমায় খুঁজে পাচ্ছি না আমি, খুঁজে পেলেও যে আলোকসংযোগ সফল হবে তা বলা যায় না। আমি খুঁজছি তোমায়, তোমার আলো অনেক আগেই পরাভূত হয়েছিল আমার ছায়ার কাছে, তমসার কাছে। বুঝতে বড্ড দেরী হয়ে গিয়েছিলো। তারপরেও বুঝতে পেরেছি তো! এ্যামিউজমেন্ট পার্ক থেকে সর্বস্ব খুইয়ে আসার পর তোমার শীতল তিরস্কার এখনও কানে বাজে,

-এমন কর না, এমন কর না! আমার আলো নিভে যাচ্ছে। আমি শীতল হয়ে যাচ্ছি, আমাকে ছুঁয়ে দেখ!
ছুঁয়ে দেখেও কোন পরিবর্তন আমি টের পেতাম না। তখন তরল গরলের পরিক্রমায় আমি উত্তপ্ত এক রঙমহল দেখতাম চোখের সামনে। বলপ্রয়োগ করে প্রবেশ করতে গিয়ে ভেঙে পড়ত মহলের পিলার, খসে পড়ত পলেস্তারা, ক্ষয়ে যেত রঙ। আর এভাবেই দূরত্ব আর শীতলতার সন্ধিতে তুমি রঙ হারাতে। আমি ক্ষেপে উঠতাম,
-এত লুতুপুতু হইস কেন তুমি? কিছু হইলেই খালি ফ্যাচফ্যাচানি! আমার মত রেকলেস পাঙ্ক সুপারস্টারের সাথে থাকতে হৈলে তোমাকেও উদ্দাম হতে হবে। সাইকোডেলিক সেল্ফ স্যাডিস্ট হতে হবে।
তরলিত অবস্থায় নিজের সম্পর্কে এমন হাস্যকর ভুল ধারণা নিয়ে আমি তোমাকে আঘাত করতাম। তোমাকেও আহবান করতাম পাল্টা আঘাত করতে। তুমি পারতে না। পরেরদিন তোমার হাতে প্লাস্টার করতে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিলো।

তুমি আমাতে বুনে দিয়েছিলে আলোর চারা, বিনিময়ে আমি তোমাকে দিয়েছিলাম অবিশ্বাসের ঋণ। যা তুমি কোনদিন পরিশোধ করতে পারবে না আমি জানি। আমার স্বেচ্ছাচারী জীবনের প্রতি হতাশ হয়েও তুমি বারবার আমার কাছেই ছুটে আসতে। রঙ ফিরে আসতো আবার। তুমি দীপ্তিময়ী হয়ে উঠতে। কিন্তু একদিন আমার কাছে আসতে গিয়ে ভীষণ চোট পেলে অবিশ্বাসের দেয়াল দ্বারা বাধাগ্রস্থ হয়ে। তুমি অবিশ্বাসী চোখে তাকিয়ে থাকলে অবিশ্বাসের দেয়ালের দিকে। আমি তখন নিষ্প্রদীপ সময়ের ভুলের সরণী থেকে কেবল ফিরেছি অপ্রকৃতস্থ হয়ে। সেই পাথর দেয়ালের চরম আঘাতে তোমার রক্ত ঝরেনি একটুও। অশ্রূ ঝরেছিলো শুধু।

এরপর শীতকাল এলো। বড় দীর্ঘস্থায়ী এক শীতকাল। শীত থেকে রক্ষা পেতে আমি বেশ ভালোরকম প্রস্তুতি গ্রহণ করলাম। দেরাজে ভরে রাখলাম অনলপানীয়, শীতের অব্যর্থ ওষুধ! কিন্তু তুমি ক্রমশ কাবু হতে থাকলে শীতে। তোমার কোন প্রস্তুতি ছিলো না, উপরন্তু আমার প্রস্তুতিগুলো তোমাকে বরফকন্যায় পরিণত করতে থাকলো। তুমি খুব ক্লান্ত এবং নির্জীব কন্ঠে বললে,
-আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম, এমন করোনা আমার সাথে। আমি যে পাল্টা আঘাত দিতে জানি না!
তার চুল থেকে বরফকূচি সরাতে গিয়ে মাথার খুলি প্রকাশ্যে দেখতে পেরে আমি আতঙ্কিত হয়ে উঠি। আমার মধ্যে জাগ্রত হয় পুরোনো এক ভয়, গেড়ে বসে...

প্যানিক এ্যাটাক...

"এটি একটি অত্যন্ত ভয়ানক মনোশারীরিক দূরাবস্থা, যাতে আক্রান্তের মনে হবে যে সে মারা যাচ্ছে, তার হার্টবিট লাফিয়ে ১৫০/২০০ হয়ে যাবে, মনে হবে যে সে বাস্তব জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে, ব্রেইনে এলোপাথারি ইলেকট্রিক সিগন্যালগুলি জানাবে যে সে পাগল হয়ে যাচ্ছে, প্রভৃতি..."

আমার এই রোগটা ছিলো। অনেকদিন আগে একবার হয়েছিলো, তারপর কয়েকবার মাথাচাড়া দেয়ার চেষ্টা করেও সুবিধে করতে পারেনি। কিন্তু দীপ্তিময়ীর চোখের তারায় আমার নির্ভরতার ধ্বংসলিপি, তার মস্তিষ্কে উন্মাদীয় খুলিলিপি পড়তে পেরে আমি আবারও আতঙ্কগ্রস্থ হই। প্যানিক ওয়েভ আসতে থাকে একটার পর একটা।

"এর থেকে পরিত্রানের উপায়, নিয়মিত ব্যায়াম করবেন, নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখবেন, মেডিকেশন-ব্রোমাজিপাম..."

ফাক ইট!

সেই ধুসর শীতকালে কোনকিছুই আমাকে সাহায্য করতে পারেনি দীপ্তিময়ী তোমার সংস্পর্শ ছাড়া। আমি বারবার আতঙ্কগ্রস্থ হতাম, বারবার তোমার বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করতাম, তুমি তোমার ঠোঁট থেকে বরফকুচিগুলো সরিয়ে আমাকে নির্ভরতার প্রতিশ্রূতি দিত। ধীরে ধীরে আমি সুস্থ হয়ে উঠলাম, এবং পুনরায় আগ্নেয় তরলের কাছে ফিরে গেলাম। নিজেকে আমার আবারও রেকলেস রকস্টার কবি প্লেবয় ইত্যাদি মনে হতে থাকলো। আর তোমার থেকে সবকিছু শুষে নেবার পর তা মনে হতে লাগলো বোরিং আর ডাম্ব।

এবার আমি তোমাকে চরমতম আঘাত করলাম বিভ্রান্তি তরলের চরমতম দশায় উপনীত হয়ে। তোমার নাক বেয়ে দরদর করে রক্ত বেরুতে লাগলো, তোমার গলায় আমার হাতের দাগ বসে গেল। এবং সোল্লাসে অনুভব করলাম যে তারপরেও তুমি আমারই আছো! অবশ্য স্রেফ থাকা আর পাশে থাকা, এই দুটো ব্যাপারের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে দেরী হয়ে গিয়েছিলো আমার। বিলম্বিত উপলদ্ধিটা আগেও হয়েছিলো, উল্লেখ করেছি চিঠিতে। আমি খুঁজতে বেড়িয়েছিলাম তোমাকে কিন্তু বেশিদিন উৎসাহ থাকেনি। ক্ষান্ত দিয়েছিলাম অল্পতেই। তারপর যখন দেখলাম,
তোমার মলিন মুখমন্ডলীতে আমার মানচিত্র পুরোটাই,
যখন দেখলাম,
তোমার নির্জীব চোখের তারায় আমার জন্যে এখনও কিছু অবগুন্ঠিত আকুতি রক্ষিত আছে,
তখন সিদ্ধান্ত নিলাম, শেষ চেষ্টা একটা করতেই হবে। তোমাকে আবারও আমি দীপ্তিময়ী করে গড়ে তুলব। সৌরছাঁচ দিয়ে ছেকে তুলবো তোমার বরফকূচিসমূহ। নিজেকে আর কাল্পনিক রকস্টার, প্লেবয় আর লেখক ভাববো না।

চিঠিটা লেখার শুরুতে মনে হচ্ছিল এর কোন অর্থ নেই। শেষের দিকে এসে মনে হচ্ছে এর থেকে অর্থবোধক আর কিছু আমি লিখিনি। তোমার জন্যে একটা লিরিক, এটাতে সুর করলেই প্রস্ফুটিত হবে তোমার রঙ, আলো, অক্ষর,

"
ঘুমিয়েছো দীপ্তিময়ী?
রাত এখন বেজে সাড়ে তিন
ক্লান্তিকে করে বিজয়ী
নিয়েছো কটা রিলাক্সিন?
ঘুমচোখে তাকাও যদি
কতদূর দেখতে পারো?
দেখো আমার ঘর অবধি
তমসা কাটাতে পারো?
অনেক হল আঁধারবিলাস
ছুড়ে ফেলো তিমিরচাদর
চোখে দেখো, কী অভিলাষ?
আমাকে দাও আলোকআদর!
স্পর্শিত অহংকারে
তোমার ওই মুখের জ্যোতি
দেখে চলি রাতকাবারে
ঈর্ষাতে কে করে ভ্রুকুটি!
ঘুমিয়োনা দীপ্তিময়ী
রাত কেবল বেজে সাড়ে তিন!
ভালোবাসা হোক বিজয়ী
ভালোবেসে যাও প্রতিদিন..."

*
ভালোবাসা আমাকে কোন ভরসায় যেন ডেকেছিলো আবার! ক্লান্ত, ভ্রান্ত আমাকে। আর আমি জেনেছি, ভালোবাসাকে অবজ্ঞা করার মত শক্তিশালী আমি না। যদিও অপজীবনের অপচ্ছাসে প্লাবিত হয়েছে আমার দীপ্তাঞ্চল। তাতে কী! দীপ্তিময়ী এখন তার কর্মস্থলে। আমি চিঠিটা সেই ঠিকানায় গিয়ে পোস্ট করে আসব। হঠাৎ পাওয়া এই চিঠি বা কনফেশন যাই বলি না কেন, পেলে পরে তার গাল একটুও রক্তিম হবেনা? দীপ্তি ছড়াবে না? না ছড়িয়ে পারবে? জানি আমার হাতে লেগে আছে রক্তের দাগ, অবিশ্বাসের চাড়া, জানি আমি নেহায়েৎ স্বার্থপরের মত তার দ্বারস্থ হয়েছিলাম প্যানিক ডিজঅর্ডারের সম্মুখীন হয়ে। কিন্তু এও জানি দীপ্তিময়ীর দীপ্তিউৎস একমাত্র আমিই। আর কেউ না। একবার অন্তত সব উল্লাসসন্ত্রাস আর বিনোদেনকেন্দ্র রহিত করার প্রতিশ্রূতি দিয়ে তার কাছে ফেরার প্রতিশ্রূতি আমি দিতেই পারি। আমি জানি এটা দীর্ঘ এক প্রক্রিয়া এবং আমি আবারও বিগড়ে যেতে পারি। তাতে আবারও সবকিছু নতুন করে শুরু করার প্রয়োজন হতে পারে। হোক!

আমার জীবনে একমাত্র সেই এমন জন, যার জন্যে সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই।

দীপ্তিময়ী, ঘুমিয়োনা দীপ্তিময়ী!

১১৫টি মন্তব্য ১১৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×