নাসেরা বেগম ,যিনি ১৯৬৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হতে অনার্স সহ মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। নাসেরা বেগমের জন্ম ১৯৩৮ সালে নাটোরের কান্দিভিটা গ্রামে।নাটোরস্থ নাটোর গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। লেখাপড়া শেষে কর্মজীবন শুরু করেন একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে। ১৯৬৯ সালে তৎকালীন হাবীব ব্যাংকের (বর্তমান অগ্রণী ব্যাংক) কর্মকর্তা চান মিঞার সঙ্গে বিবাহ হয়।১৯৭১ সালের ১ এপ্রিল ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী চান মিঞাকে হানাদার পাকিস্তান বাহিনী ধরে নিয়ে হত্যা করে। সদা হাসিমাখা মুখে দাদি কথা গুলো বলবার সময় চোখঝাপসা হয়ে আসে তার, চোখ মুছতে মুছতে নিজের জীবন কাহিনী বলতে থাকেন কলমদাদি। তিনি আরো জানান, এখন হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। ভালোই চলছিল নাসেরা বেগমের সংসার। স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন নাসেরা। পরে আর বিবাহ করেননি। ১৯৮৫ সালে খুলনা মেমোরিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালনকালে ধরা পড়ে তার হার্টের ভাল্ব নষ্ট।স্বাভাবিক ভাবেই বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়ে ১৯৮৭ সালে ঢাকায় এসে কল্যাণপুর কিন্ডারগার্টেন স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি নেন অপেক্ষাকৃত কম পরিশ্রমে। অসুস্থতার তাকে সেখানেও পিছু ছাড়েনি।তারপর জমানো কিছু টাকা দিয়ে কল্যাণপুরের রাজিয়া সুলতানা রোডে একটি হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকান দেন। একপর্যায়ে তাকে দোকানও বিক্রি করতে হয়।
এর পর শুরু হয় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কলম বিক্রির সংগ্রামী জীবন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় ১৯৮৯ সাল থেকে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কলম বিক্রি শুরু করেন। সেই থেকেই শুরু কলমফেরি করা...অসুস্থতার কারণে এখন আর অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া সম্ভব হয় না বলে জানান। নাসেরা বেগম বলেন,একটি বেসরকারী চ্যানেলে তাকে দেখাবার পর ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এরশাদ রহমান নামে এক ডাক্তার তাকে মিরপুর হার্ট ফাউন্ডেশনে চিকিৎসা দেন। তার হার্টে ৫টি ব্লক ধরা পড়ে। এরপর ওই ডাক্তারের বোন সঞ্জিতা রিমা ওষুধ বাবদ মাসে ১৫০০ টাকা করে দিতেন। গত ২ বছর ধরে কারও কাছ থেকে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পান না। নাসেরা বেগম বলেন, বুকে ব্যথার কারণে কথা বলতে খুব কষ্ট হয়। মুক্তিযুদ্ধে স্বামী হারানো একজন উচ্চশিক্ষিত বয়োবৃদ্ধা অসুস্থ নারী হিসেবে বিবেচনা করে যাতে বয়স্ক ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা তাকে প্রদান করা হয়।
কলমদাদিকে সাহায্য পাঠানোর একমাত্র ঠিকানা একাউন্ট নম্বর-২০৮২১৮,,,, অগ্রণী ব্যাংক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
কিন্তু আদৌ এ একাউন্টটি সচল আছে কি এ ব্যাপারে দাদির নিজের ও ধারনা নেই...
আরো একটি স্বাধীনতার মাস চলছে,প্রকৃতঅর্থে স্বাধীনতার বাহকদের আজো কি আমরা কি যথার্থ মূল্যায়ন করতে পেরেছি??
করতে কি পেরেছি প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার??একজন দেশপ্রেমী সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজের বিবেকের কাছে একটিবার জিজ্ঞেস করে দেখুন....
আমরা সকলে কি পারি না অসহায় এ নারীর পাশে এসে দাড়াতে??
সে যার অবস্থান থেকে যতটুকু পারি সাহায্যের হাত প্রসারিত করতে....
যার স্বামী দেশে জন্য সর্বোচ্চো আত্মত্যাগে কুন্ঠিত হয়নি আমরা আজ তার এই প্রতিদান দিচ্ছি!!!
সত্যি আমরা বড় স্বার্থপর জাতি.....
আপডেট ১:
সময় এখন কলমদাদির পাশে দাড়াবার,কথাকে কাজে পরিণত করবার।
প্রকৃতঅর্থে যারা এই জীবনযুদ্ধে হার না মানা মুক্তিযুদ্ধে শহীদের স্ত্রী পাশে দাড়াতে ইচ্ছুক তারা নিচের পেইজে জয়েন করে আপনাদের সুচিন্তিত মতামত বা পরামর্শ দিতে পারবেন...পরবর্তিতে খুব শীঘ্রই আমরা মিলিত হয়ে আলোচনা পূর্বক কলমদাদির হাতে সরাসরি সাহায্য তুলে দেব....
Amader Kolomdadi ( আমাদের কলমদাদি )
আপডেট ২:
সবাইকে আবারও বিনিতভাবে জানাতে চাচ্ছি এটি আমরা নির্দিষ্ট কিছু ব্লগারদের উদ্যোগ বা কোন উদ্দেশ্য নয়...
আমরা শুধু উদ্দোগটা নিয়েছি ...
কিন্তু তা সফল করবার দায়িত্ব আমাদের সবার ...
আসুন আমরা একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে বাস্তবিকঅর্থে কলমদাদির জন্য কিছু করি ...
সত্যিকারঅর্থে আপনাদের সবার আন্তরিক আর বিপুল সারা পেয়ে অবিভূত হয়ে গেলাম
আজ রাত ১১ টা হতে ১২.৩০ এই সময়ে কলমদাদি কে কিভাবে সাহায্য করা যেতে পারে ... কিভাবে সাহায্য করলে উনি উপকৃত হবেন ... সে ব্যাপারে সবাই কথা বলার জন্য একটি গ্রুপ চ্যা্টের আয়োজন করা হয়েছে এখানে..
Amader Kolomdadi ( আমাদের কলমদাদি )
আলোচনার পর আমরা সবাই মিলে পরবর্তি কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত নিবো...
মাঝে এক ব্লগার ভাইয়ের মতামতকে সময়োপযোগি আর কার্যকর বলে মনে হলো,সেটি হচ্ছে কলমদাদির জন্য এটিকে কেউ দান-খরাতের অংশ মনে করবেন না,নিজেদের দায়বোধ আর মানবিক উপলব্ধি থেকে আমরা সবাই তার পাশে দাড়াবো,এককালীন সাহায্যের বদলে আমরা সকলের সহযোগীতার মাধ্যমে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই একটা ছোট-খাটো কিন্তু স্থায়ী উপার্জনের ব্যবস্থা করে দিতে চাই...
আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম
আপডেট ৩:
প্রানবন্ত আলোচনা থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বের হয়ে আসলো,যেটি সত্যিকার ভাবেই 'কলমদাদির' পাশে দাড়ানোর জন্য কার্যকরী ভূমিকা রাখবে মনে করছি,
'কলমদাদি' বেশ কিছু দিন ধরে ক্যাম্পাস এলাকায় অনুপস্থিত,তাই সবার প্রথম কাজটি ঠিক হলো তাকে খুঁজে বের করা,
তারপর আমরা সবাই যে যার অবস্থান থেকে যতটুকু সাহায্যের হাত প্রসারিত করতে পারি তাই দিয়ে এগিয়ে আসবো...
প্রথমে তাকে ক্যাম্পাস এলাকাতেই একটা ছোটখাটো দোকান তুলে দেবার ব্যাপারে আলোচলা হলেও পরবর্তিতে নানামুখি সমস্যা আর ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে সেটি থেকেও সরে আসতে হয়ে,কেউ আবার বড় ধরনের সাহায্য পাঠাবার আগ্রহও প্রকাশ করেন,
তবে একটি কথা পরিষ্কার ভাবে আবারও বলতে চাই,এখানে কোন ফান্ডিংয়ের কথা কখোনোই আমরা চিন্তা করছি না,
কলমদাদির জন্য যে সাহায্য আমরা সংগ্রহ করি না কেন তা হবে সবার উপস্থিতিতে এবং সরাসরি তেকে সামনে রেখে...
আর আবারও বলছি,এটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি পোষ্ট,
কারো কাছ থেকে কোন রকম রাজনৈতিক উস্কানিমূলক মন্তব্য গ্রহনযোগ্য নয়....
সর্বশেষ সবার সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনা করে আগামী ২৬শে মার্চ বিকেল ৪টায় ঢা.বি.র টি.এস.সি চত্বরে মিলিতো হবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে,
আপনাদের সকলের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহন এবং সুচিন্তিত মতামত কামনা করছি....
নিয়মিত আপডেট পেতে এখানে দেখুন...
Amader Kolomdadi ( আমাদের কলমদাদি )
আপডেট ৪:
সৃস্টিকর্তার কাছে অশেষ ধন্যবাদ ,
অবশেষে কলমদাদির দেখা পাওয়া গেল...
মলিন বদন আর অসুস্থ শরীর নিয়েও চলে এলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে...আজ ছিলেন কিছুক্ষন ক্যাম্পাসে ...
শরীরটা ইদানিং আর যেন চলতে চাইছে না তাও তাকে এক অদৃশ্য টানে ক্যাম্পাসে আসতেই হয়...
আমাদের এক ব্লগারপেনসিল ভাই তাকে দুপুরের খাবার খাওয়ালেন ক্যাম্পাস ক্যান্টিনে..সেটিও পুরোটা শেষ করতে পারলেন না কলমদাদি...
খুব অল্পতেই যেন সন্তুষ্ট আমাদের প্রিয় কলমদাদি...তার ঠিকানা আর সেল নাম্বার রাখা হয়েছে...
আশা করছি আগামী ২৬তারিখ বিকেলে টি.এস.সিতে আমাদের সবার সাথে কলমদাদিও উপস্থিত থাকবেন.....
আপডেট ৫:
স্বাধীনতা দেখবার সুযোগ হয়নি আমার,পারিবারিকভাবে দু একজনের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা নিয়েও বরাই করি না কখনও ...কিন্তু যখন দেখি কলমদাদিদের মতো চির অসহায় মুখগুলো নিষ্পেশিত হয় আর স্বাধীনদেশের স্বাধীন নাগরিক হয়ে আমরা বুকফুলিয়ে চলি তখন নিজের প্রতি অনেক ঘৃনা হয়,কলমদাদিদের চোখের অঃস্ফূট আর্তনাদ আমাদের লজ্জায় মাথানত করে দেয়...
আপনাদের সবার অভূতপূর্ব সাড়া পেয়ে আজ আবার সত্যিকার ভাবেই চির অবহেলিত মানুষটির জন্য কিছু করবার সাহস পাচ্ছি...
অনেকেই অনেক ভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন...এগিয়ে আসতে চাইছেন... দাড়াতে চাচ্ছেন কলমদাদির পাশে.....
তাই আজ দেখিয়ে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে আমাদের দৌড় শুধু কথাতেই সীমাবদ্ধ নয়...শত প্রানের জোয়ার আজ এক নতুন স্বাধীনতা দিবসের কেতন উড়াতে চালেছে...
যেখানে প্রকৃতত্যাগী মানুষগুলো যেন আর অবহেলার শিকার না হন....আমরা সবাই যেন আজ সে শপথ নিতে পারি...৩০লক্ষ প্রানের বিনিময়ে সে স্বাধীনতার সূর্য আমরা ছিনিয়ে এনেছি সেটিকে মলিন হতে দেব না কখনো....
কলমদাদিরা আর যেন নীরবে না কাঁদে,আমরা সন্তানরা থাকতে তার চোখে জল মানায়??
আমার স্বাধীনতার এই দিনটি আমি দাদির জন্য উৎসর্গ করতে চাই...
এবারের স্বাধীনতা দিবস পুরোটা হোক দাদির জন্য ...এটি হোক আমার সবচে স্মরনীয় স্বাধীনতা দিবস...
সবাই আসছেনতো কাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি.এস.সি চত্বরে,ঠিক বিকাল ৪ টায়... সাথে থাকবেন আমাদের কলমদাদিও....
ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১২:৩৩