এখন আকাশ পরিষ্কার, নদীতে ভয়ঙ্কর স্রোত নেই, তার উপর বৃষ্টিরও ঝামেলা নেই। আর দু.সপ্তাহ পর কুয়াশা পড়বে, তখন ইন্ডিয়ার পাহাড়গুলো তেমন ভাবে দেখা যাবে না। ছবি তুলেও মজা পাওয়া যাবে না।
এই গ্রামের রাস্তার শেষ মাথায় জিন্দাপীর শাহ আরেফিনের (রহ.) আস্তানা। পাশ দিয়ে নদী। আর নদীর পশ্চিম পাড়ে বারেকের টিলা। এখানে হিন্দু ধর্মানুসারীদের একটি তীর্থস্থান আছে। প্রতিবছর চৈত্র মাসে প্রায় একই সময়ে শাহ আরেফিনের (রহ.) আস্তানায় ওরস হয়। তখন মেলা বসে, আর চৈত্রের ৫ তারিখে জাদুকাটা নদীর তীর্থে বসে হিন্দুদের পুণ্যস্নান পনাতীর্থ।
কিছু পুরোন মিথ জরিয়ে আছে লাউরের গড় বাজার সংলগ্ন নদী ঘাট নিয়ে। অনেকেই খুব সকালে বা পড়ন্ত বিকেলে নাকি দেখে থাকে অনেক অনেক নৌকা ঘাটে ভিরছে। কিন্তু নিমিশেই সেগুলো হাওয়া হয়ে যায়। আবার কেউ কেউ দেখে যে, ঘাটের কাছাকাছি পানির নীচ থেকে অনেক নৌকা ভেসে উঠছে। আনেক মানুষের কোলাহল। যেন মনে হয় হাটবার। হাটে হাজার হাজার মানুষ সওদা করতে আসছে। বিশেষ করে শনিবার বা মঙ্গলবার এ ঘটনাগুলো মানুষ প্রত্যাখ্য করত।
আগে নাকি প্রায়ই একটা বিশেষ জায়গা থেকে মানুষ বা ছোট বাচ্চা গোসল করতে গিয়ে মারা পড়ত।
যাই হোক এগুলো প্রবীনরা বেশি জানে। যে যাই জানুক আমি গিয়ে ভীষন আনন্দ পেয়েছি। সিলেট শহর থেকে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরেছি।
এরকম একটা ঘাট সুনামগঞ্জ থেকে মটরসাইকেল সহ নৌকায় পার হতে হবে।
নীল সবুজের স্কেচ
আমার প্রিয় মটরসাইকেল শাহ আরেফিনের আস্তানার মাঠে। সামনেই নো ম্যানস জোন। তারপর কাটাতারের বেড়া। ভারতের রাস্তা পাথুরে পাহাড়...
এরকম রোড প্রায় ৩০ কিমি রান করতে হবে। আর খারাপ রোড প্রায় ১০ কিমি
ধুধু বালুরাশির ওপারে গভীর একটু খানি নদী। তারপরেই ইন্ডিয়া। ছবির পেছনে বিজিবি ক্যাম্প।
আমার বাইক। নদীর তীর ঘেসে বেশ খানিকটা ছুটলাম কিছুক্ষণ। তারপর দাড়িয়ে চোখ জুরালাম পড়ন্ত বিকেলে।
হাতে খুব একটা সময় ছিল না, তাই নদীর ওপারে যাওয়া হয়নি। তীরে দাঁড়িয়ে শুধু চারপাশটা স্তব্ধ হয়ে দেখছিলাম।
শাহ আরেফিন (র

যা না বললেই না: লাউরের গড় এলাকা খুব গ্রাম্য এলাকা। এখানে খাবার কোন ভাল হোটেল নেই। এমন কি দোকানে ড্রিংকিং ওয়াটার নেই, সফট ড্রিংক্স তো দূরের কথা। নদীর ওপার থেকে কয়লা ও পাথর আমদানি করা হয়। শুক্রবার ছাড়া বাকি দিনগুলো জমজমাট থাকে। এখানে স্বাস্হ্য কমপ্লেক্স নেই। এক্সিডেন্ট করলে প্রায় ৫০ কিমি দূরে সুনামগঞ্জ সদরে যেতে হবে। এখানকার বাইকাররা যাদের পেশা মটরসাইকেল যোগে বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে পৌঁছে দেয়া, তারা সারা দেশের বিভিন্ন মটরসাইকেল গ্রুপের মেক্সিমার রাইডারের চেয়ে অনেক অনেক ভাল চালায় এবং ভয়ঙ্কর স্পিডে ৩ তেকে ৫ জন পর্যন্ত নিয়ে চালায়।
আশাকরি এই পোষ্ট অনেকের ভাল লাগবে। আমাদের দেশ আসলে অনেক সুন্দর।