স-মূত্র পানে রোগ মুক্তি! তাও আবার আধুনিক যুগের আধুনিক সমাজে!
তা আবার যেন তেন রোগ নয় আলসার, পেটের পীড়া, স্তন টিউমার, জড়ায়ু সমস্যা জিভ ও গলার ক্যান্সার, হার্টের ব্লক এমনকি যৌবন ও ত্বকের সজিবতায় এবং চেহারার লাবন্য ধরে রাখতেও স-মূত্র পান টনিকের মত কাজ করে।
এটি আজকের আমাদের সময় পত্রিকার একটি প্রধান খবর! পড়তে পারেন এখানে !
কিন্তু ব্যপারটা কি আসলেই তাই! সত্যিই কি স-মূত্র পানে রোগ মুক্তি সম্ভব! কিছবৈগ্গানিক গবেষনায় অবশ্য মূত্রের মধ্যে কিছু হরমোনের অস্তিত্ব পাওয়া যায় যা মানূষের রক্তের সোডিয়াম লেভেল কমিয়ে রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। এরকম অনেক ধরনের হরমোন, মিনারেল এবং ভিটামিনের অস্তিত্ব মূত্রে বিদ্যমান থাকলেও এগুলো আসলে শরীরের অপ্রয়োজনীয় বিধায় মূত্রের মাধ্যমে বের হয়, সুতরাং এদের পুনরায় গ্রহন মোটেও যুক্তিসংগত নয়! আর মূত্রের প্রধান উপাধান হলো ইউরিয়া বা ইউরিক এসিড, যা একটি বিষাক্ত উপাদান! বাহ্যিকভাবে এটা ত্বক আর চোখের জন্য খুবি ক্ষতিকর এবং রক্তে এর মাত্রা খুব বেশি হলে শরীরের যেকোন ধরনের অঙ্গহানী ঘটতে পারে!
অথচ আদিকাল থেকেই মূত্র চিকিৎসা নামে স্ব মূত্র নিজের শরীরে মাখানো (যেকোন ত্বকরে সমস্যা সমাধানের জন্য) এবং স-মূত্র পান (সবধরনের শারিরীক সমস্যা সমাধানে) প্রচলিত ছিল! এমনকি বিভিন্ন ধর্মেও এর ব্যবহারকে উৎসাহিত করা হয়েছে! ইসলাম ধর্মে কমপক্ষে ছয়টি ছহীহ হাদীসের বর্ননা পাওয়া যায় যেখানে রোগমুক্তির জন্য গাধার মুত্র পানের কথা বলা হয়েছে! বাইবেলে নাকি স্ব মূত্র পানের কথাও বলা আছে!
আর হিন্দু ধর্মেও এই ব্যপারে খুবি উৎসাহ দেয়া হয়েছে বলেই মনে হয়! চৈনিক (চীন) দেশের নাগরিকরাও নাকি এই ব্যপারে আদিকাল থেকেই খুবি ওস্তাদ! ন্যশনাল জিওগ্রাফি নিউজে এক আমেরিকানের ভিডিও পাওয়া গেল যে নাকি মহা আনন্দে স্বমূত্র পানের উপকারিতা বর্ননা করছে এবং পান করছে! তার মতে স্ব মূত্র পানে নাকি শারীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়!
প্রাচীনকাল থেকেই মূত্র চিকিৎসার নামে শরীরে মূত্র মাখানো (যেকোন ত্বকের সমস্য সমাধানের জন্য) কিংবা স্ব মূত্র পান (যেকোন শারীরিক সমস্য সমাধানের জন্য) প্রচলিত থাকলেও এর আসলে কোন বৈগ্গানিক ব্যখ্যা নেই এবং থাকার কথাও না! বরং মূত্র শরীরে মাখালে ত্বকের মারাত্বক ক্ষতি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে! অতিরিক্ত মূত্র পানের ফলে রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমান বেড়ে যেতে পারে এবং এর ফলে শরীরের মূল্যবান অংগের চিরস্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে! শরীরের প্রায় সকল প্রকার মেটাবলিক বর্জ্য মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়, সুতরাং এই বর্জ্য পূনরায় শরীরে গ্রহন অনেক ধরনের মারাত্বক ক্ষতির কারন হতে পারে। আর কিডনি কিংবা মূত্রথলিতে যেকোন ধরনের ইনফেকশন থাকলেতো কথাই নেই!
সর্বশেষ এই বছরই ফেব্রুয়ারি মাসে বলিভিয়ায় গ্যব্রিয়েলা নামের এক ব্যক্তির রক্তে ইনজেকশনের মাধ্যমে মানূষের মূত্র প্রবেশ করানোর পর তার মৃত্যু হয় এবং এটাই স্বাভাবিক এবং বৈগ্গানিক সত্যি!
সুতরাং এই ধরনের মূত্র চিকিৎসার অপলাপ থেকে মূক্ত থাকাই মনে হয় আমাদের কাম্য হওয়া উচিৎ!!