somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সব ভালবাসা পূর্ণতা পায়না ( অনু গল্প)

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যখন মনে অস্থিরতা বিরাজ করে চারপাশ কেমন যেন অন্ধকার হয়ে আসে। হতাশা কাজ করে। সব কিছু ঘোলাটে লাগে।
মনের শান্তি কি সব হারিয়ে ফেললাম? কেন মনে শান্তি পাইনা? কেন কেন কেন? কি চায় এই মন?
উত্তর এলো শুধু তোমাকে, তোমাকে ,তোমাকে।
ছেলে পক্ষ দেখে গেল, পছন্দ করল। আমার পরিবার থেকেও ছেলেকে পছন্দ করা হল। কি করব আমি এখন? মেনে নিব, নাকি তোমার জন্য অপেক্ষা করব। কেন দেশ ছেড়ে চলে গেলে তুমি? এখন তোমার কথা বললেও ফ্যামিলি শুনবেনা। যে পাত্র দেখেছে সে খুব সুন্দর। তাই দেখে সবাই খুশি। কিন্তু আমি যে খুশি হতে পারিনা। আমার মন জুড়ে শুধু তুমি। এক মুহূর্তের জন্য হোক তাওতো ভাল লেগেছে তোমাকে। আর আমার যে ইচ্ছে ভালবেসে বিয়ে করা। যে মানুষটি কে চিনিনা জানিনা তাকে কিভাবে বিয়ে করব আমি?
জীবনে বোধহয় সব স্বপ্ন পূরণ হয় না। আমার স্বপ্নও পূরণ হবেনা জানি। আমি কি খুব বেশি চেয়েছি, শুধু তোমাকেই চেয়েছি। এই চাওয়াটা কি ভুল?
তোমাকে বললাম
- আমাকে পাত্র পক্ষ দেখে গেছে
- তোমার কি পাত্র পছন্দ হয়েছে
- ছেলে দেখতে ভাল। আমার পরিবার পছন্দ করেছে আমি নই।
- তুমি কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে?
এই কথা শুনে আমার বুকের ভেতর রক্তক্ষরণ হতে লাগল, তোমার জন্য।
-না যাবনা। তুমি কি জানো আমি প্রতিদিন কাঁদি।
-কেন?
-তোমার জন্য
- আমি ধন্য
- আমিতো ধন্য নই
-কেন?
-তোমাকে পেলে হব
- তাই?
-হুম তাই

তুমি একটা বার কি বলতে পারনা? ‘সেতু তুমি রাজী হইয়ো না । অপেক্ষা করো আমার জন্য। তুমি শুধু আমার’।
তুমি দেখ এই কথা শুনার পর আমি কি করি! এই পৃথিবীর কারো শক্তি নেই আমাকে জোড় করে বিয়ে দেয়ার।
তুমি শুধু বললে
-আমিতো দেশে নেই। কি করব আমি? বিদেশ এসে আমার সব কিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখন দেশেও ফিরতে পারছিনা।
আমাকে ক্ষমা করো।
-ক্ষমা করব? না না তোমার তো দোষ নেই। দোষ আমার কপালের।
দিন কেটে যাচ্ছে আমার। বেঁচে আছি জীবন্ত লাশ হয়ে। ভালবাসার তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছিল আমার হৃদয়ে । বেশ কিছুদিন কথা হলনা তোমার সাথে। স্বাভাবিক কথা হল অনেকদিন পর-

-কেমন আছ সেতু?
-বেঁচে আছি। তুমি?
- এইত !
- আই লাভ ইউ সেতু
- কেন এই কথা বল? কেন কেন?
- কাঁদছ তুমি? প্লিজ কেদনা। শোনো আমি তোমাকে মনে মনে বিয়ে করে ফেলেছি।
- মনে মনে বিয়ে করলেই কি হল কিছু? আমার বিয়ে কি বন্ধ করতে পারবে?
- আচ্ছা তোমার তো বিয়ে হয়ে যায়নি। এতো নেগেটিভ ভাব কেন?
- ভাবছি কারন ছেলেকেও আমার পরিবার পছন্দ করেছে। ভয় হয় আমার। তুমি বুজবেনা আমার কষ্টটা।
- শোনো মনোবল হারিয়ো না। ইনশাআল্লাহ আমরা এঁকে অপরকে পাব।
-তাই যেন হয়। আমার আর ভাল লাগেনা। এতো যন্ত্রণা আমরা সহ্য হয়না সজল।
জীবনটা বয়ে চলা নদীর মত, কখনো বা শঙ্খচিল শালিকের মত। কখনো আকাশের মত ,কখনো রোদ্রজ্জ্বল দিনের মত, কখনো জমে থাকা মেঘের মত। কখনো অঝর ধারার মত।

সজলের ফোন হটাৎ
-কেমন আছ সেতু?
- এইত আছি, তুমি?
- হুম ভাল। বিয়ে নিয়ে চিন্তা করোনা। সব ঠিক করে ফেলেছি।
-কি ঠিক করেছ?
-তুমি চলে আসবে আমার কাছে?
-কিভাবে? আমারতো এতো টাকা নাই।
- তো কি হয়েছে? আমি আছিনা। বোকা মেয়ে !
যা যা করনীয় সব কিছু করে দিল সজল। আর বলে দিল আমাকে কিভাবে কি করতে হবে।
সত্যি আমার খুব ভাল লাগছে। আমিও যাচ্ছি সজলের কাছে। দেশ ছেড়ে পরদেশে। খুব টেনশন লাগছে আমার। সজল খুব করে বলল আমাকে। একদম ভয় পাবেনা। টেনশন করোনা। আমিতো আছি।
আমি ঠিক মত পোঁছালাম। এয়ারপোর্ট এ ঠিক পেয়ে গেলাম সজল কে। আমার জন্য আগেই অপেক্ষা করছিল। এই প্রথম আমাদের দেখা হল। কিন্তু একদম মনে হলনা আমরা প্রথম কাউকে দেখছি সামনা সামনি। শুধু আমরা ছবি দেখেছিলাম একজন আর একজনের। সামনা সামনি না দেখেই ভালবেসেছি দুজন।
আমাকে পেয়ে সজল অনেক খুশি। আমিও খুশি। ওর বাসায় নিয়ে গেল। ফ্রেশ হয়ে দুজনে খেলাম। সজল আমাকে বিশ্রাম নিতে বলল। আমি একটু ঘুমাতে চেষ্টা করলাম। হটাৎ হাতের স্পর্শে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল সজল। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না। ওর বুকে মাথা রেখে অনেক কাঁদলাম। সজল আমকে বুঝাল,
- এইত আমি লক্ষ্মীটি, কেদোনা। আমরা কাল-ই বিয়ে করব। সুন্দর একটা বাসা ভাড়া নিব। আমাদের সুখের সংসার হবে।
- তাই? আমি বাসর রাতে তোমাকে আমি মিষ্টি একটা গান শোনাব

'এই মধু রাত শুধু ফুল পাপিয়া
এই মায়া রাত শুধু তোমার আমার
মায়াবী চাঁদের সনে
চামিলি জাগিছে বনে
ফাগুন খুলিয়া দিল
প্রানের দুয়ার।
এই মায়া রাত শুধু তোমার আমার
দুটি হিয়া চুপি চুপি
এলো কাছাকাছি
প্রেম বলে দুজনার
মাঝে আমি আছি
জীবনের এই চাওয়া
নিবির করিয়া পাওয়া
এ-জীবনে কোন দিন নাহি ফুরিবার
এই মায়া রাত শুধু তোমার আমার'

আজানের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় সেতুর। সাথে সাথে ভেঙ্গে যায় স্বপ্ন দেখা। এতক্ষন ধরে স্বপ্ন দেখছিল সেতু। তা সত্যি নয়। সেতুর বুক ফেটে কান্না আসল। ফজরের নামাজ পড়ে অনেক কাঁদল। আল্লাহ কে বলল পথ দেখাও আমাকে। কি করব আমি? সাহায্য করো দয়াময়।

মানুষের সব স্বপ্ন পূরণ হয় না। সেতু হয়তো আশায় বুক বেধে রাখবে যে তার ভালবাসার মানুষটিকে পাবে। হয়ত তার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যাবে।

সব ভালবাসা পূর্ণতা পায়না
সব প্রেম বাধে নাকো বাসা’
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:২৯
২৯টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×