somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দেখা থাইল্যান্ড (পর্ব-৬)

১৯ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাসাআজ
রাত এগারটায় সিদ্ধান্ত নিলাম ফুট মাসাআজ করাতে হবে। সারাদিন এতোবেশি হাটাচলা করতে হয়েছে যে এখন শরীর মন বলছে, মাসআজ, মাসআজ। মাসআজ না করলে আমি বোধহয় আর হাটতে চলতে পারবো না! থাইল্যান্ডে এলাম আর মাসাআজ করালাম না তা হয় নাকি? তো কোথায় মাসাআজ করা যায়? পাতায়া শহরে আমরা উঠেছি ওয়েলকাম হোটেল-এ। এই হোটেল থেকে বের হতেই রাস্তার পাশে সারি সারি মাসাআজ পার্লার । সুদর্শন থাইনারীরা মাসাআজ পার্লারের সামনে বসে সুর করে মাসআআজ মাসআআজ গীত গেয়ে ভোক্তাদের আকর্ষণ করছে। সারাদিন মাসআআজ মাসআআজ শুনতে শুনতে এখন মাসাআজটা অস্তিমজ্জায় ঢুকে গেছে। তাই রাত এগারটায় হোটেল থেকে বের হলাম মাসাআজ করাতে।
পাতায়া আর ব্যাংকক থাইল্যান্ডের এই দুই শহরে আমাদের ঘোরার সুযোগ হয়েছে এবং শহর দুইটার সর্বত্রই মাসাআজ পার্লার চোখে পড়ে। বিশেষ করে পর্যটনবেষ্টিত হোটেলগুলোর পাশে এই মাসাআজ পার্লারের আধিক্য অনেক বেশি। থাই মাসাআজ, ফুট মাসাআজ, অয়েল মাসাআজ আরও হরেক রকমের মাসাআজ আর আছে রকমারী স্পা। থাইল্যান্ডের এই মাসাআজকে এরা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
ব্যাংককের তুলনায় পাতায়ায় মাসাআজ খরচ তুলনামূলক কম। পাতায়ার পরিবেশনাটাও যথেষ্ট ভালো। প্রত্যেক মাসাআজ পার্লারের সবাই নির্দিষ্ট পোশাক পরা। পার্লারের ভিতরের রুমসজ্জাও দারুন। ব্যাংককের মাসাআজ পার্লারে যৌনতাকে প্রশ্রয় দেয়। পাতায়ার মাসাআজ পার্লার সেইদিক থেকে মুক্ত।
তো যাই হোক রাত এগারটায় পাতায়ার এক মাসাআজ পার্লারের দরজায় কড়া নাড়লাম। সুদর্শন এক থাই নারী অভ্যর্থনা জানালো। যখন হোটেল রুম থেকে বের হয়েছিলাম তখন চিন্তা ছিল ফুট মাসাআজ করাবো। সারাদিন হাটতে হাটতে পা দু'টা বড্ড ক্লান্ত। পা দু'টার একটু আরাম দরকার। আগে যেহেতু এখানে আসা হয় নি তাই কেমন কী খরচ তার একটা ধারণা নিলাম। যখন শুনলাম ফুট মাসাআজ ২০০ বাথ, থাই মাসাআজও ২০০ বাথ; তখন দ্বিতীয়বার চিন্তা না করেই থাই মাসাআজ নেবার সিদ্ধান্ত নিলাম। থাই মাসাআজ মানে সারা শরীর মাসাআজ। একই খরচে কেন শুধু পা মাসাআজ করাবো?
থাই মাসাআজের জন্য আমাকে তিনতলার একটা ঘরে নিয়ে যাওয়া হলো। ঘরটায় নীল রঙের পর্দা দিয়ে ঢাকা। আমাকে মাসাআজ করানোর জন্য যেই মেয়েটি আমার সামনে দাড়িয়ে আছে তার পরনেই নীল রঙের পোশাক। আমাকে মাসাআজ-এর বিশেষ পোশাক দেওয়া হলো। অদ্ভুত পোশাক। অনেকটা ত্রিকোয়াটার প‌্যান্টের মতোন। প‌্যান্টের কোমরের সাইজ হবে পঞ্চাশ। পোশাকটা কোমরে বাঁধার মতো ফিতাও নেই। এইটা কিভাবে পড়বো। আমি পোশাকটা হাতে নিয়ে বোকার মতো দাড়িয়ে আছি। মেয়েটা থাই ভাষায় অনর্গল কি সব বলছে। ওরা যেমন বাংলা-ইংরেজী জানে না, আমি তেমন থাই ভাষাও জানি না। নিজেকে বড় অসহায় লাগছে। ওর কথা, আকার-ইঙ্গিতে যেটা বুঝলাম ও বলছে আমার পরনের পোশাক সব খুলে এই মাসাআজ পোশাক পড়তে। শার্টটা না হয় খুললাম। প‌্যান্টটা কিভাবে খুলি যদি সামনে ষোল-সতেরও বছরের একটা মেয়ে দাড়িয়ে থাকি। আমি বাংলা-ইংরেজী মিশিয়ে যথাসাধ্য বোঝানোর চেষ্টা করছি, জানার কোন চেঞ্জ রুম আছে কিনা। ও কি বুঝছে সেই জানে, আমার সামনে দাড়িয়ে হি হি করে হাসছে। মিনিট পাঁচেক এমন ভাষা জটিলতায় যাওয়ার পর অবশেষে মনে হলো, মেয়েটি আমার অবস্থা বুঝতে পারলো। আমাকে রুমে একা রেখে চলে গেল। এই তো সুযোগ, অদ্ভুত পোশাকটা কোন রকমে আওত্তে নিয়ে মেয়েটির অপেক্ষায়..।
তার মিনিট পাঁচেক পরে নীল রঙের ষোড়শী মেয়েটি ফিরে এলো। আমাকে শুইয়ে আমার পায়ের আঙুলগুলো হাতে নিয়ে আলতো করে টান দিতে লাগলো। তারপর ধীরে ধীরে মেয়েটির নরম হাত পা থেকে মাথা পর্যন্ত বিচরণ করতে থাকে। আর পরম আয়েশে আমার শরীর ঢুবতে থাকে।...... তারপর.... তারপর....
মাসাআজ-এর বিস্তারিত বর্ণনা আমি দেবো না। আগ্রহীরা থাইল্যান্ড-এ যখন যাবেন তখন থাই মাসাআজ যে নিবেন এটা আর বলার দরকার নেই। থাই মাসাআজ সম্পর্কে শুধু এটুকুই বলে রাখি, একঘন্টার থাই মাসাআজ আপনার সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে দেবে।
(চলবে...)

আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-১
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-২
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-৩
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-৪
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-৫
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-৭
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-৮
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-৯
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-১০
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-১১
আমার দেখা থাইল্যান্ড পর্ব-১২
আমার দেখা থাইল্যান্ড (শেষ পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৮
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×