ইসলামী সমাজে বসবাসরত সংখ্যালঘু সমপ্রদায়কে রক্ষা করা ইসলামের অন্যতম একটি দায়িত্ব । মূলতঃ ধর্মীয় সহিঞ্চুতার ঘটনায় ইসলামের ইতিহাস পরিপূর্ণ।
ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা উমার ইব্নুল খাত্তাব (রাঃ) ৬৩৪ হিজরীতে বিজয়ী বেশে যখন বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করলেন তখন তিনি সেখানে অবস্থানরত প্রতিটি মানুষকে ধর্মীয় স্বাধীনতা দান করেছিলেন এবং ঘোষণা করেছিলেন, প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারবে। আরো ঘোষণা করলেন, প্রতিটি মানুষের জান-মাল নিরাপদ এবং তাদের উপাসনালয়গুলোকে রক্ষা করার যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অনুরূপভাবে ইসলামী আইনে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের জন্য আলাদা বিচারালয় প্রতিষ্ঠা করা অনুমোদিত। যেখানে সংখ্যালঘুদের নিজস্ব আইন অনুযায়ী পারস্পারিক বিষয়াদীর নিষ্পত্তি করা হবে।
মোটকথা, ইসলামী রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের জান-মালকে পবিত্র আমানত হিসেবে গণ্য করা হয়। চাই সে মুসলিম হোক বা অমুসলিম হোক। ইসলামে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই।
কুরআন বলে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নাই; সকল মানুষ সমান। ইরশাদ হচ্ছেঃ
“হে মানুষগণ, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ এবং একজন নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোষ্ঠিতে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মাঝে আল্লাহর নিকট সেই সবচেয়ে বেশী সম্মানিত যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহভীরু।” (সূরা হুজুরাতঃ ৪৯)
ইসলাম কখনো অন্য কোন ধর্মাবলম্বীকে জোর করে ধর্মান্তরিত করতে বলেনি। বরং সকল ধর্মকে সম্মান করতে শিক্ষা দিয়েছে। সকল ধর্মাবলম্বীদেরকে প্রদান করেছে ধর্ম গ্রহণের স্বাধীনতা। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
“দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হতে বহিস্কার করেনি তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার ও ন্যায় বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়-পরায়ণদেরকে ভালবাসেন।” (সূরা মুমতাহিনাঃ ৮)
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
“দ্বীনের ক্ষেত্রে জোর-জবরদস্তী চলবে না। হেদায়াত এবং গোমরাহী স্পষ্ট হয়ে গেছে। যে ব্যক্তি ‘তাগুত’ কে অস্বীকার করল সে এমন ‘মজবূত হাতল’ ধরল যা কখনো বিচ্ছিন্ন হবার নয়। আল্লাহ সবকিছু শুনেন; সব কিছু জানেন।” (সূরা বাকারাঃ ২৫৬)
অথচ জামায়াতে ইসলাম সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িতে হামলা করছে। পুড়িয়ে দিচ্ছে বাড়ি ঘর। মন্দিরে হামলা এবং ভাংচুর করছে।সারা দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে।
‘মেশিনম্যান’ দেইল্লা রাজাকারের রায়ের সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোন সম্পর্ক নাই। তারা এই রায়ের জন্য কোনভাবেই দায়ী নয়।
জামায়াতের কাছে ইসলাম মানে হল তাণ্ডব। ইসলাম মানে হল সংখ্যালঘুদের উপর হামলা নির্যাতন। ইসলাম মানে হল খুন, ধর্ষণ, গণহত্যা। তারা তাদের সুবিধা মতো ইসলামকে বানিয়ে নিয়েছে। তাদের কর্মকাণ্ড ইসলামের কোন রীতির সঙ্গে মেলে না।
তাহলে তারা কিভাবে ইসলামী দল হয় ? জামায়াতে ইসলাম এবং ইসলাম এক নয়। এদের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই এরা প্রমাণ করেছে এরা ইসলামী দল নয়।
জঙ্গীবাদী জামায়াত ইসলামকে অতি শীঘ্রই নিষিদ্ধ করতে হবে। নইলে এদের হাতে কারো জানমাল নিরাপদ থাকবে না। এদের তাণ্ডব এখনই রুখে দিতে হবে।