পেছনের পর্বগুলো-
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৩)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৪)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৫)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৬)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব৭)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৮)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৯)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১০)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১১)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১২)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৩)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৪)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৫)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৬)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৭)
বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১৮)
হজ থেকে কী পরিমান আয় হয় সউদি সরকারের?
আলহামদুলিল্লাহ। প্রতি বছর বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মুসলমান হজ করতে যান সউদি আরবে। এসময় দেশটির আর্থিক লেনদেনের হার বেড়ে যায় বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। অনেকেই জানতে চান, সউদি সরকারের কেমন আয় হয় এই খাতটি থেকে। তাই এ বিষয়ে একটু খোঁজ-খবর নেয়ার চেষ্টা।
আসলে ভিন্ন উদ্দেশ্যে নয়, সঙ্গত কারণেই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, হজ ও ওমরাহ পালন করতে আসা মুসলমানদের কাছ থেকে প্রকৃতপক্ষে কত আয় করে সউদি সরকার?
গেলো বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মোট ৮৩ লাখ মানুষ হজ করতে যান। এরমধ্যে ৬০ লাখের বেশি মানুষ ওমরাহ পালন করেন। যতটুকু জানতে পেরেছি, গেলো বছর হজ থেকে সউদি আরবের সরাসরি রোজগার হয় প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া যারা হজ করতে সউদি আরবে যান তারা মোট ২৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করেন।
মক্কার চেম্বার অব কমার্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাইরের দেশ থেকে আসা মুসলমানরা মাথাপিছু ব্যয় করেন ৪৬০০ ডলার। তবে একেক দেশ থেকে আসা হজপ্রত্যাশীদের জন্য আবার একেক রকম খরচ। যেমন ইরান থেকে আসা মানুষদের মাথাপিছু ৩ হাজার ডলার খরচ হয়।
এরমধ্যে যাত্রা, খাওয়া, কেনাকাটা সব খরচই ধরা হয়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশিদেরও মোটামুটি এরকমই খরচ হয়।
বিভিন্ন দেশে থেকে সৌদি আরবে হজ করতে আসা মুসলমানদের পার্সেন্টেজ
বিভিন্ন দেশে থেকে সৌদি আরবে হজ করতে আসা মুসলমানদের মধ্যে মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার মুসলমানের সংখ্যাই বেশি। সেখান থেকে ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ প্রতিবছর হজে যান। এটা মোট হজপ্রত্যাশীর সংখ্যার প্রায় ১৪%।
এরপরই রয়েছে পাকিস্তান (১১%), ভারত (১১%) ও বাংলাদেশ (৮%)।
গেলো এক দশকে গড়ে ২৫ লাখ মুসলমান হজ করেছেন। নানা দেশ থেকে মুসলমানদের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষই ওমরাহ করেন। ৭ বছর আগে ওমরাহ করতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখের কাছাকাছি। সম্প্রতি বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত খবরে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
হজ ফরজ হওয়ার পর দ্রুত পালন করা উত্তম
হজ ফরজ হওয়ার পর সময় ক্ষেপণ না করে হজ পালন করা উত্তম। হজের মধ্যে রয়েছে অশেষ কল্যাণ। কোনো অজুহাতে হজ পালনে বিলম্ব করা উচিত নয়। হজরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা বলেন : নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'হজ ও ওমরাহ সঙ্গে সঙ্গে কর। কেননা, এ দুটি ইবাদত দারিদ্র্য ও গুনা দূর করে, যেভাবে হাপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে। কবুল হজের সওয়াব জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।'—তিরমিজি, নাসায়ি।
হজ করার মাধ্যমে গুনাহ থেকে মুক্ত হওয়ার যে সুযোগ পাওয়া যায় তা আল্লাহর অসীম করুণা বিশেষ। হজরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি : 'যে ব্যক্তি হজ করে, সে বাজে কথা বলে না এবং কোনো গুনার কাজও করে না, সে নিজের গুনা থেকে এমনভাবে মুক্ত ও পবিত্র হয়ে ফিরে যায়, যেন তার মা তাকে (এখনই) প্রসব করেছে।'—বুখারি, মুসলিম।
সহিভাবে হজ পালন করে যেহেতু নিষ্পাপ হওয়া যায়, সেহেতু তার জন্য আখিরাতের জীবনে মেলে জান্নাতের পুরস্কার।
হজরত উম্মে সালামা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি : 'যে ব্যক্তি বায়তুল মাকদাস থেকে (মক্কার) কাবা শরিফের দিকে হজ বা ওমরাহর ইহরাম বাঁধে, তার আগের বা পরের গুনা মাফ করা হবে। অথবা তিনি বলেছেন, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।'—আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ।
আরেক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত : নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, 'এক ওমরাহ থেকে অন্য ওমরাহ পর্যন্ত সময়ের জন্য কাফ্ফারাস্বরূপ এবং কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।'
হজ ও ওমরাহ তাদের পক্ষে পালন করা সম্ভব হয়, আল্লাহর দাওয়াত যারা লাভ করেন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, 'হজ ও ওমরাহকারীরা হচ্ছে, আল্লাহর দাওয়াতি যাত্রীদল। অতএব, তারা যদি তার কাছে প্রার্থনা করে তবে তিনি তা কবুল করেন এবং যদি ক্ষমা চান তবে তিনি তাদের ক্ষমা করে দেন।'—ইবনে মাজাহ।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সত্বর হজ করার এবং আল্লাহর দাওয়াতি কাফেলার যাত্রী হওয়ার তাওফিক দান করুন।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ সকাল ৯:১৯