অটো প্রমোশন ছাড়াই প্রায় ২০ লাখ ছেলে-মেয়ে ১ জানুয়ারি নবম শ্রেণীতে নতুন ক্লাস শুরু করবে। তাদের সবাইকে একটি গুরুত্বপুর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিভাগ নির্বাচন - বিজ্ঞান, ব্যবসা শিক্ষা নাকি মানবিক। আজকাল আমাদের দেশে বাণিজ্যে বসতি লহ্মী ধরে নিয়ে সবাই বাণিজ্যতেই নিজেকে দেখতে চায়।
অনেকের ধারণা বাণিজ্য পড়লে সম্ভবত চাকরি বেশি পাওয়া যায়! আমার ধারণা এর উল্টো। আমি দেখেছি বিসিএস পরীক্ষায় সাফল্যের হার বিজ্ঞানের স্নাতকদের বেশি। ডেপুটি গভর্ণর থেকে শুরু করে নানান পদে বাংলাদেশ ব্যাংকে ফিজিক্স গ্রুাজুয়েটরা এখনো সংখ্যাগরিষ্ঠ। আমি আরো হিসাব দিতে পারি তবে সেগুলো কেও শুনবে বলে মনে হয় না! কারণ আমরা না জেনে চিলের পেছনে দৌড়াতে ভালবাসি।
যারা ২০১৪ সালে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হবে তারা কর্মবাজারে যাবে ২০২২+ সালে। সে সময় পৃথিবীতে কোন ধরণের কাজ বেশি থাকবে?
ধারণা করা হচ্ছে সে সময় নতুন দুইটা কাজের একটা হবে আউটসোর্সিং। মানে একজায়গার কাজ হবে আর এক জায়গায়। তারমানে ভাল দক্ষতা থাকতে হবে তিনটি বিষয়ে - প্রবলেম সলভিং, লিডারশীপ এবং টেকনোলজি। গণিত আর বিজ্ঞানে জোর না থাকলে প্রথমটা দূর পরাহত!
দুইদিন আগে এক ঘন্টার কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রোগ্রামে আমাদের সুবিন একটা উদাহরণ দিয়েছিল। একদিন বাসে উঠে সে দেখতে পায় পেছনের দিকে একটা সিট পড়ে আছে এবং তার পাশে কয়েকজন দাড়িয়ে আছে। সুবিন তখন ঐ সীটটা তুলে খাড়া করে সেখানে বসে পড়লো। তখন বাকী আরো দুইজন সেখানে বসেছে! এই হচ্ছে গণিত-প্রোগ্রামিং-বিজ্ঞানের ম্যাজিক।
২০২২ সালটা গুরুত্বপুর্ণ কারণ সেবার কাতারে হবে বিশ্বকাপ! সেই বিশ্বকাপে প্রযুক্তির নানান ব্যাপার থাকবে থাকবে বলে হাজার হাজার নতুন কাজের সৃষ্টি হবে। কোন কোনটা হয়তো ভুরঙ্গামারিতে বসেও করা যাবে। কিন্তু করার জন্য গণিত আর লজিক দুইটা লাগবেই।
আমাদের দেশে কেন জানি বিজ্ঞান পড়ুয়ার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আমরা যদি সবাই মিলে উদ্যমী না হয় তাহলে ২০২৭ সাল নাগাদ বাংলাদেশে কমপক্ষে ৫০ লক্ষ টোকনলজিস্ট থাকবে, দুর্ভাগ্যবশত, তাদের কারো মাতৃভূমি বাংলাদেশ হবে না!
২০২২ সালে আমাদের কয়েক লক্ষ উদ্যোক্তা লাগবে। তার জন্যও প্রবলেম সলভিং জানতে হবে। বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল যখন খুশী তখন নিজের পছন্দের অন্য সাবজেক্টে সুইচ করা যায়। যেটা অন্য কিছুতে সম্ভব নয়।
এই নিয়ে চট্টগ্রামের হালখাতা চট্টহআম বই-এ আমার একটা বিস্তারিত লেখা ছাপা হয়েছে। ইচ্ছে করলে আমার সাইটে সেটা পড়ে আসা যাবে ।
কাজে যার যার সুযোগ আছে, অনুগ্রহ করে নতুনদের কাছে বিষয়টা ব্যাখ্যা করেন।
সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।