somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"আমার অফলাইন থেকে অনলাইন জগত"

১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চিত্রঃ গুগল থেকে।

অখাদ্য টাইপ আমার এই লেখা নিয়ে , লেখার জগতে প্রবেশ ভার্সিটিতে আসার পর। খুব ছোটবেলায় প্রচুর বই পড়ার অভ্যাস ছিল। বই বলতে অবশ্যই এসটেরিক্স, টিনটিন, চাচা চৌধুরী, তিন গোয়েন্দা, জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাস এগুলো। প্রত্যেকটা বই আমি মোহাচ্ছন্ন হয়ে গিলেছি একটা সময়। এমনকি এই পড়া নিয়ে কম ঘটনা ঘটে নি আমার জীবনে। মনে পড়ছে এই বই পড়া আমার জীবনে এমনভাবে ঢুকেছিল যে, আমি পাঠ্য বইয়ের নিচে লুকিয়ে রেখে তিন গোয়েন্দা , মাসুদ রানা , নসিম হিজাজির বইগুলো পড়তাম। আমার পড়ার টেবিল, আমার চেয়ারের পিছনেই ছিল আমার রুমে প্রবেশ করার দরজা। অর্থাৎ চেয়ারে বসলে আমার পিঠ থাকত দরজার দিকে। তাই গল্পের বই পড়া অবস্থায় কেউ আমার রুমে ঢুকলে টের পেতাম না। তাই এক বুদ্ধি করেছিলাম। আয়নার একটা টুকরা আমার টেবিলের উপর রেখে আরামশে পড়া চালিয়ে যেতাম। তারপরও পড়ায় অত্যাধিক মগ্ন থাকায় বেশ কয়েকবার ধরাও পরেছি। কিন্তু অভ্যাসটা সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল তখন থেকেই। ইন্টার লাইফে উঠার পর অবশ্য পাঠ্য বইয়ের চাপে আউট বই ( আমার মায়ের ভাষায়) পড়া কিছুটা কমে গিয়েছিল । কিন্তু ভার্সিটিতে এসে ফুল ফ্রিডমে চালাচ্ছি আমার পুরনো অভ্যাস। এখন প্রতি মাসে মিনিমাম ২ হাজার টাকার বই কেনা হয়( যদিও অংকটা তুলনামুলকভাবে কম, তবে ছাত্র হিসাবে আমার জন্য যথেষ্ট)। এখন পাগলের মত পড়ি এথিইজমের পক্ষে এবং বিরুদ্ধে লেখা বইগুলো। প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ, এন্টিডোট, অন্ধকার থেকে আলোতে, ডাবল স্ট্যান্ডার্ড, কষ্টি পাথর, আরজ আলী সমীপে, আমার অবিশ্বাস, গ্র্যান্ড ডিজাইন, ডারউইনিজিম রিফুটেড, উল্টো নির্ণয়, সিগন্যাচার ইন দ্যা সেল, দ্যা রিভার্টস, প্রত্যাবর্তন, দ্যা অরিজিন অফ স্পেসিস, দ্যা ব্লাইন্ড ওয়াচম্যাকার, ল্যাঙ্গুয়েজ অফ গড, দেয়ার ইজ এ গড এরকম বইগুলো আমার পছন্দের তালিকায় আছে। তারপরও এর বাইরে এই মুহুর্তে পাঠ্য তালিকায় আছে ড. হিশাম আল- আওয়াদির “Muhammad: How He can make you Extra-ordinary” , ইমাম ইবনুল কাইয়্যুম এর “Inner Dimension for the Prayer” আহমাদ আবদুল কাহহার এর “ সহজ ক্বোরআনীয় ভাষা শিক্ষা” ক্যারেন আর্মস্ট্রং এর “ইসলামের ইতিহাস”, তামীম রায়হানের “ সুলতান কাহিনী”, প্রন্স মুহাম্মদ সজলের “ সানজাক-ই উসমান” , আবুল হাওয়ার “ Mornings In Jenin” , আর কিছু বই অর্ধেক পড়ে রেখে দেওয়া আছে।
এটাতো গেল পড়ার গল্প।

এবার আসি লেখালেখির গল্পে।
বলেছিলাম ভার্সিটিতে এসে ফুল ফ্রিডমে বই পড়া শুরু করলাম। পড়ার ঝোঁক থাকার দরুন ফেসবুকে লেখক, লেখিকাদের আইডি খোঁজা শুরু করলাম এবং তাদেরকে ফলো করতে লাগলাম নিয়মিতভাবে। সেই লেখকদের দরুন পরিচিত হলাম বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি প্রথম ক্যাটাগরির পেজের সাথে। হঠাৎ করে মনের ভিতর প্রশ্ন জাগল আমি কেন পারব না লেখতে? শুরু করলাম ২০০-৫০০ শব্দের ভিতরে পোস্ট লেখা । লেখাগুলো তখনকার খুব বড় বড় পেজ জয়বিডি, স্বদেশ , রেডিও মুন্না, রেডিও সংগী এগুলোতে পোস্ট হতে থাকল। প্রায় শতাধিক গল্প লিখেছিলাম পেজগুলোতে। বিভিন্ন গ্রুপ এবং পেজ কর্তৃক আয়োজিত গল্প লেখা প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করতে লাগলাম। এইভাবে শুরু হল অনলাইনে সাদা নীলের দুনিয়ায় পদচারনা। এবার চিন্তা হল লেখাগুলো কাগজে আসতে বাঁধা কোথায়? বিভিন্ন গ্রুপ কর্তৃক বইয়ের জন্য লেখা কালেকশনের একটা ধুম পড়ে গেল তখন। সেই সুবাদে লেখালেখির মান এবং পরিধি বাড়াতে বাধ্য হলাম। আমার লেখার পছন্দের বিষয় সায়েন্স ফিকশন এবং হরর ছিল । সেই হিসাবে সর্বপ্রথম প্রায় পাঁচ হাজার শব্দের একটা সায়েন্স ফিকশন লিখে ফেললাম। সাইলিয়াস নামক এই ফিকশনটি ২০১৭ সালে বিভাস কর্তৃক প্রকাশিত রহস্যের অন্তরালে রহস্য বইতে জায়গা পেল। এভাবে একে একে সায়েন্স ফিকশন, হরর , জীবনের গল্প সব মিলিয়ে পাঁচটি বইতে গল্পগুলো জায়গা করে নিল। স্টুডেন্ট মানুষ ইচ্ছা থাকলেও একক বই বের করার সামর্থ্য নেই।

এগুলো সব ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ের কথা। এখন আর সায়েন্স ফিকশন বা হরর বা এই জাতীয় টপিক্সে লিখি না। এখন জীবনের মোড় সম্পূর্ণ ঘুরে গেছে। ইসলামী সাহিত্য, ইসলামী ইতিহাস এখন টেনে ধরেছে আমাকে। ড্যান ব্রাউন, অগাথা ক্রিস্টি, চার্লস ডকিন্স পড়ে অভ্যস্ত এই আমি এখন ডুবেছি আরিফ আজাদ, তোয়াহা আকবর, এন হাসান, আশরাফুল আলম , শরীফ আবু হায়াত অপু, মুশফিকুর রহমান মিনার, সিহাব আহমেদ তুহিন, আসিফ আদনান, শামসুল আরেফিন শক্তি , মাসুদ শরীফ, আবুল হাওয়া, হারুন ইয়াহিয়া, আহমদ আলী এদের লেখার ভিতরে। চেষ্টা করছি অনেক কিছু জানার। একটা আফসোস সব সময় ঘিরে ধরে আমাকে আর তা হল, “ হায়! কত ভাল ভাল লেখকের বই না পড়েই আমাকে এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে। আহ!” কত কিছুই অপড়া থেকে যাবে!
যাইহোক কথা বাড়াব না। যে লেখাগুলো কখনও কাগজ ছেড়ে অনলাইনের মুখ দেখে নি সেই লেখাগুলো এখানে আপনাদের সাথে শেয়ার করব চিন্তা করছি ইন-শা-আল্লাহ। কিভাবে ইসলাম একজনকে ভিতর থেকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারে তা তখনকার (২০১৭ এর আগপর্যন্ত) লেখা এবং এখনকার লেখা তুলনা করলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৪৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×