somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চার্লস ডারউইন কি স্রষ্টায় বিশ্বাস করতেন না!?

২৩ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি চার্লস ডারউইনের ফ্যান কিংবা অন্ধ অনুসারী নই। কিন্তু তারপরও এই প্রশ্নটি করতে বাধ্য হলাম। আমার এই অনুসন্ধিৎসা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হলেও সত্যের খোঁজে এর মূল্য আমার কাছে কম নয়। এ সম্পর্কে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য জানা থাকলে বা কোন বক্তব্য থাকলে তা সেয়ার করার জন্য আমন্ত্রণ রইল।
…………………………………………….
ঐশী কিতাব হিসেবে বাইবেল এবং স্রষ্টা বা ইশ্বরের পুত্র হিসেবে যিশুখ্রিষ্ট অর্থাৎ ঈশা নবী সম্পর্কিত ডারউইনের মন্তব্য-
"I am sorry to have to inform you that I do not believe in the Bible as a divine revelation, & therefore not in Jesus Christ as the Son of God."

তার এই বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে যায় যে বাইবেলে বিদ্যমান নানান অসঙ্গতি তার চোখে ধরা পরেছিল। তাই তিনি বর্তমানের এই বাইবেলকে ঐশী কিতাব হিসেবে মেনে নিতে পারেন নাই। সঙ্গত কারণেই বাইবেলের ত্রিত্ববাদ মেনে নিতে না পারায় যিশূখ্রিষ্টকেও তিনি ইশ্বরের পুত্র হিসেবে স্বীকার করতেন না। আর সে কারণেই সে সময়কার খৃষ্টধর্মের অনুসারী ধর্মান্ধরা তাকে নাস্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করতে কুণ্ঠাবোধ করে নাই। পরবর্তীতে ইশ্বরে অবিশ্বাসী ও প্রকৃতিবাদী নাস্তিকরা নাস্তিকতা বিস্তারের কুটকৌশল হিসেবে তার এই একপেশে অবস্থাকে কাজে লাগায় এবং খানিকটা সফলকামও হয়।

চার্লস ডারউইন নাস্তিক নয়, বরং অজ্ঞেয়বাদী আস্তিক (Agnostic theism- The view of those who do not claim to know of the existence of any deity, but still believe in such an existence.) ছিলেন। চিন্তা-চেতনায় তিনি একজন পরম স্রষ্টায় বিশ্বাস করতেন এবং একই সাথে স্রষ্টার অস্তিত্ব অর্থাৎ বিদ্যমানতা সম্পর্কে প্রত্যক্ষভাবে কিছুই জানা সম্ভব নয় বলেও তিনি বিশ্বাস করতেন। এ সম্পর্কে তার বক্তব্য-
"I am with you in thought, but I should prefer the word Agnostic to the word Atheist."

১৮৭৯ সালে John Fordyce কে লেখা এক পত্রে ডারউইনের বক্তব্য থেকে বিষয়টি আরও পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে। তিনি বিবর্তন ও আস্তিকতা অর্থাৎ স্রষ্টা বা ইশ্বরে বিশ্বাস এর মাঝে সুসংগতিপূর্ণ যে মতামত ব্যক্ত করেন তা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে তিনি নাস্তিক ছিলেন না অর্থাৎ স্রষ্টা বা ইশ্বরে অবিশ্বাস করতেন না-
"In my most extreme fluctuations I have never been an atheist in the sense of denying the existence of a God.— I think that generally (& more and more so as I grow older) but not always, that an agnostic would be the most correct description of my state of mind."

যিনি চিন্তা-চেতানায় ও বিশ্বাসে নাস্তিক ছিলেন না। তার কর্মও নিশ্চয় নাস্তিক্যবাদকে কখনই প্রশ্রয় দেয় নাই। কিন্তু অজ্ঞতা প্রসূত ভুল বোঝাবুঝির কারণে ধর্মান্ধ সম্প্রদায় কর্তৃক তিনি ও তার কর্ম প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় নাস্তিক সম্প্রদায় সেই সুযোগকে লুফে নিয়েছিল এবং তার কর্মের কিছু অংশকে ভিন্নভাবে উপস্থান কোরে তাদের পক্ষে কাজে লাগানোর জন্য যে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছিল এবং এখনও করছে তা বলার অপক্ষো রাখেনা।

ধর্মহীনতা ও ধর্মের খাঁটি ঐশীবাণী হৃদয়ঙ্গম করার ব্যর্থতার কারণে সৃষ্ট ধর্মান্ধতা মানুষকে সরাসরি বিবর্তনবাদী নাস্তিক কিংবা বিবর্তন বিরোধী আস্তিক হতে কিংবা কুসংস্কারাচ্ছন্ন সস্তা সেন্টিমেন্টকে আত্মস্থ কোরে তা ধর্ম হিসেবে মানতে শেখায়।

ধর্মের নিগূঢ় তত্ত্বকে আত্মস্থ করার আগেই বংশপরম্পরায় প্রাপ্ত ধর্মের ভাসা ভাসা জ্ঞানের উপর ভর কোরে যখন মানুষ প্রকৃতির মাঝে বিরাজিত গভীর তত্ত্বকে স্থুল দৃষ্টিতে দেখতে চায়, তখন সে নিজেই বিভ্রান্তিতে হাবুডুবু খায়।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহর তাফসিরের পর আর কেউ কোরআনের তাফসির করবে না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৩২



সূরাঃ ৩১ লোকমান, ২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৭। পৃথিবীর সমস্ত বৃক্ষ যদি কলম হয় আর সমূদ্র হয় কালি এবং এর সাথে আরো সাত সমূদ্র যুক্ত হয় তবু আল্লাহর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের ফুটনোট.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৪২

ইতিহাসের ফুটনোট.....

বিদ্যুৎ বিভ্রাট তথা লোডশেডিং আমাদের দেশের একটা কমন প্রব্লেম। লোডশেডিং থেকে কিছুটা উপশম পেতেই আমরা আইপিএস, জেনারেটর ব্যবহার করি। কিন্তু জেনারেটর আবিস্কার হয়েছিল মূলত লোডশেডিং থেকে রক্ষা পেতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে কারা পরিকল্পিত ভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৬:৫৯


বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দূর্বলতম সরকার বর্তমানে দেশ শাসন করছে। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই সরকারের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে এমনিতেও পুলিশের মুখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ ভালোবাসার বৃত্তে কবিতা

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ ভালোবাসার বৃত্তে কবিতা
ব্লগার, কবি খায়রুল আহসান


একজন সাহিত্যিক, প্রবন্ধিক অনেক শব্দ বাক্যে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণে অনেক পৃষ্ঠা জুড়ে যা লিখেন, একজন কবি তা মাত্র কয়েকটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকস্বাধীনতা মানে কী যাচ্ছেতাই বলা?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৪০


দেশ বিরোধী ততপরতা ও ধর্ম নিয়ে অপতথ্য ছড়ানো বন্ধ করা হোক। দেশ বিরোধী ততপরতা রাষ্ট্রদ্রোহের সামিল এবং ধর্ম নিয়ে ভুলভাল তথ্য সাম্প্রদায়ীক সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে তাই সঠিক তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×