(Dimensional binding of the 1rst-space)
আল-কোরআন মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নযিলকৃত সৃষ্টি থেকে শুরু করে সর্ববিষয়ে দিকনির্দেশনা দানকারী মহাবিজ্ঞানময় ঐশী কিতাব।
নিম্নে পবিত্র কোরআন থেকে প্রথম আসমান সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ইংগিতবহ কয়েকটি আয়াত উল্লেখ করার পাশাপাশি আধুনিক বিজ্ঞান ও আমার নিজস্ব বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তা-ভাবনার আলোকে কিছু বক্তব্য পেশ করতে চেয়েছি। প্রকৃত জ্ঞান তো সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহতায়ালার নিকটে।
আল-কোরআন-
সূরা আর-রাহমান-আয়াত নং-৩৩
(৫৫ : ৩৩) ইয়া মা’শারাল জিন্নি ওয়াল ইনছি ইনিছতাত’তুম আন তানফুজূ মিন আক্বতা-রিছ ছামা- ওয়া-তি ওয়াল আরদ্বি ফানফুজূ; লা-তানফুজূনা ইল্লা-বিছুলতা- ন।
{তানফীযুন =(অর্থ)- এপার ওপার ছিদ্র করা। সুলত্বানূন =(অর্থ)- আইনসঙ্গত অধিকার (‘আল-কাওসার’- মদীনা পাবলিকেশন্স)। লা-তুতিয় =(অর্থ) - তুমি আনুগতত করো না (কোরআনের অভিধান- ১৩১পৃষ্ঠা--মুনির উদ্দীন আহমদ)}
(৫৫:৩৩) অর্থ:--হে জ্বীন ও মানুষ জাতি! তোমরা আনুগততের সাথে যদি আকাশমন্ডলীর নিকটতম সীমা এবং পৃথিবীর একপাশ থেকে ভেদ করে অপর পাশে যেতে পার, ভেদ কর। তোমরা ভেদ করে যেতে পার না আইনসংগত অধিকার অর্জন (ক্ষমতা অর্জন) ব্যাতিরেকে।
সূরা ইনশিকাক--আয়াত নং-১৯
(৮৪ : ১৯) অর্থ:- নিশ্চয়ই তোমরা এক স্তর থেকে অপর স্তরে আরোহন করবে (সাওয়ার হবে)।
(৫৫:৩৩) ও (৮৪:১৯) নং আয়াতের ইংগিতের সাথে সংগতি রেখে বলা যায় যে, অদম্য মানব জাতি অজেয়কে জয় করার নেশায় উৎসাহ ও উদ্দিপনার সাথে ক্রমাগত চেষ্টা-সাধনার ফলে জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতি সাধন করছে ও তা প্রয়োগের মাধ্যমে (৫৫:৩৩) ক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। এর ফলে ঊর্ধ্ব জগতের অসীমত্বের মাঝে নিজেদের পদচারণার পরিধিকে ধাপে ধাপে (৮৪:১৯) উন্নীত করছে,-যেমন খনিজ তেলকে উড়োজাহাজে এবং পারমাণবিক জ্বালানীকে রকেটে ব্যবহার করে প্রচন্ড গতিশক্তি অর্থাৎ ক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে একে একে বায়ুমন্ডলে উড্ডয়ন, মহাশুন্যে ভ্রমন, চন্দ্রপৃষ্ঠে আরোহন ও মঙ্গলগ্রহে নভোজান প্রেরণ করেছে। আলোক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে “হাবল টেলিস্কোপের” সাহায্যে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরের, নক্ষত্রসমূহের এবং এক গ্যালাক্সি থেকে অপর গ্যালাক্সির তথ্য সংগ্রহ করছে এবং বহু দূর- দূরান্ত পর্যন্ত দৃষ্টিসীমাকে প্রসারিত করেছে।
আল-কোরআন -
সূরা মুমিন-আয়াত নং-৬৪
(৪০ : ৬৪) অর্থ:- আল্লাহই তোমাদের জন্য পৃথিবীকে করেছেন বাসোপযোগী এবং আকাশকে করেছেন ছাদ-----
সূরা মূল্ক-আয়াত নং-৫
(৬৭ : ০৫) অর্থ:- আমি দুনিয়া বা পৃথিবীর (নিকটবর্তী) আকাশকে সুশোভিত করলাম প্রদীপমালা (নক্ষত্রপুঞ্জ বা গ্যালাক্সি) দ্বারা এবং ওদের করেছি শয়তানের প্রতি নিক্ষেপের উপকরণ এবং তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছি জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তি।
সূরা সাফ্ফাত-আয়াত নং-৬
(৩৭ : ০৬) অর্থ:- আমরা (আল্লাহ-সম্মান সূচক) দুনিয়া বা পৃথিবীর (নিকটবর্তী) আকাশকে গ্রহাদির অলংকারে সজ্জিত করেছি।
সূরা ফুরকান-আয়াত নং-৬১
(২৫ : ৬১) অর্থ:- কত মহান তিনি যিনি (১ম) আকাশে স্থাপন বা পরিগঠন করেছেন বুরুজ অর্থাৎ তারকার ঘরসমূহ বা গ্যালাক্সি সমূহ এবং তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ (সূর্য) ও জ্যোতির্ময় চন্দ্র।
{বুরুজুন = (অর্থ)- তারকার ঘর-- (‘কোরআনের অভিধান’- ৯৬ পৃষ্ঠা - মুনির উদ্দীন আহমদ)}
(‘বুরুজুনের’ বহুবচন হল ‘বুরুজ’। সাধারনত ‘ঘর’ বলতে যেমন দেয়াল ঘেরা এমন একটি স্থানকে বোঝায় যেখানে কয়েকজন মানুষ একত্রে বসবাস করতে পারে। তেমনি ‘বুরুজুন’ অর্থ ‘তারকার ঘর’ বলতে মহাকাশে সৃষ্ট এমন একটি স্থানকে বুঝানো হয়েছে যেখানে অনেকগুলো তারকা বা নত্র একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে একত্রিত অবস্থায় থাকে। সুতরাং ‘বুরুজুনের’ অর্থ ‘মহাকাশের অসংখ্য নক্ষত্র সমৃদ্ধ স্তর অর্থাৎ গ্যালাক্সি’ হওয়াই স্বাভাবিক। আবার বুরুজ শব্দটি যেহেতু বহুবচন, সুতরাং এর দ্বারা ‘মহাকাশের অসংখ্য গ্যালাক্সি সমৃদ্ধ স্তর অর্থাৎ গ্যালাক্সিগুচ্ছ’ হওয়াই যুক্তিসংগত।)
সূরা আম্বীয়া-আয়াত নং-৩৩
(২১ : ৩৩) অর্থ :- আল্লাহই রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করেছেন, প্রত্যেকেই নিজ নিজ কক্ষপথে সঞ্চালমান।
বিজ্ঞানের বদৌলতে আমরা অবগত হয়েছি যে, আমরা ভূপৃষ্ঠে প্রথম আসমানের নিম্নতম স্তর অর্থাৎ বাযুমন্ডলের অক্সিজেন সমৃদ্ধ স্তরে বাসযোগ্য পরিবেশে বসবাস করছি। মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় এই বায়ুমন্ডল বিশেষ করে এর ওজন স্তরের কারণে বহির্জগত থেকে আগত ক্ষতিকারক মহাজাগতিক রশ্মি, অতিবেগুনী রশ্মি, রঞ্জন রশ্মি, সৌরঝড়, প্রতিদিন লাখ লাখ উল্কা পতন ইত্যাদির হাত থেকে পৃথিবীবাসি রক্ষা পাচ্ছে। আর এই তথ্যটি (৪০:৬৪) নং আয়াতে সংক্ষেপে অথচ কত নিখুঁতভাবেই না ব্যক্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা সুউচ্চ আসমানের বিভিন্ন স্তর, মহাস্তর পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে আমরা জানতে পেরেছি যে, (২১:৩৩) সূর্য, পৃথিবী, চন্দ্র ও অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহগুলো আপন আপন কক্ষপথে অনেকটা বৃত্তাকারে পরিভ্রমণ করছে। সূর্য কেন্দ্রীক এই সৌরমন্ডলের পৃথিবী, চন্দ্র, ও অন্যান্য গ্রহ, উপগ্রহ সহ সূর্যটা এই ছায়াপথ বা ( Milky Way galaxy ) গ্যালাক্সির কেন্দ্রকে ঘিরে আবর্তন করছে। এই কেন্দ্রের চারিদিকে একবার ঘুরে আসতে আপন কক্ষপথে ঘন্টায় প্রায় ৪,০০০০০ মাইল গতিবেগে ধাবমান সূর্যের সময় লাগে প্রায় ২২.৫ - ২৫ কোটি বছর।
পৃথিবীর নিকটবর্তী আসমান অর্থাৎ আমাদের এই ছায়াপথ বা গ্যালাক্সিতে ২০,০০০ থেকে ৪০,০০০ কোটি ( সূর্যের মত বা এর চেয়েও বড় ) নক্ষত্র রয়েছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন নক্ষত্রগুলো অসংখ্য প্রদীপ দ্বারা গাঁথা (৬৭:৫) মালার আকারে সাজান। সুতরাং বলা যায় যে, এই ছায়াপথ বা গ্যালাক্সিতে (দুনিয়ার নিকটবর্তী আসমানে) যেমন অসংখ্য নক্ষত্র (৬৭:৫) আছে, তেমনি রয়েছে অসংখ্য (৩৭:৬) গ্রহ ও উপগ্রহ। ২০,০০০ থেকে ৪০,০০০ কোটি নক্ষত্র ও অসংখ্য গ্রহ ও উপগ্রহ নিয়ে গঠিত এই ছায়াপথের একপাশে বিন্দুর মত আমরা পড়ে রয়েছি। অসংখ্য নক্ষত্রের একত্রিত অবস্থানকে যেমন নক্ষত্রপুঞ্জ বা গ্যালাক্সি বলে, তেমনি অনেকগুলো গ্যালাক্সির গুচ্ছের আকারে অবস্থানকে গ্যালাক্সিগুচ্ছ ( বুরুজ অর্থাৎ তারকার ঘরসমূহ ) বলে। আমাদের এই ছায়াপথ বা গ্যালাক্সি যে গ্যালাক্সিগুচ্ছের অন্তর্গত তাতে মোট বিশটি গ্যালাক্সি আছে অর্থাৎ আমাদেরটি ছাড়াও আরও ঊনিশটি গ্যালাক্সি বিদ্যমান। জ্ঞাত সর্ববৃহৎ গ্যালাক্সিগুচ্ছ “হারকিউলাস কাস্টার” এর মধ্যকার গ্যালক্সির সংখ্যা দশ হাজার। বিজ্ঞানের জানামতে এভাবে মহাবিশ্বের (প্রথম) আসমানে কমপক্ষে ৮,০০০ কোটি গ্যালাক্সি দলে দলে ছোট বড় আসংখ্য গ্যালাক্সিগুচ্ছের (২৫:৬১) আকারে ছড়িয়ে আছে। সুতরাং (৬৭:৫) ও (৩৭:৬) নং আয়াত থেকে অনুমান করা যায় যে, প্রথম আসমানের অসীম বিস্তৃতিতে ছড়িয়ে থাকা (২৫:৬১) তারকার ঘরসমূহের বা গ্যালাক্সিগুচ্ছের (বুরুজ) প্রতিটি গ্যালাক্সিতেই (২৫:৬১) সূর্য ও চন্দ্রের মত অসংখ্য নক্ষত্র ও গ্রহ, উপগ্রহ আছে। তবে (৩৭:৬) নং আয়াতের বর্ণনা অনুসারে, মহান আল্লাহতায়ালা পৃথিবীর নিকটতম আসমান অর্থাৎ আমাদের এই ছায়াপথের সৌরমন্ডলে যে অনেকগুলো গ্রহ, উপগ্রহকে অলংকারের আকারে (৩৭:৬) সাজিয়ে রেখেছেন তা দূরবিক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে আকাশ পর্যবেক্ষণের সময় সহজেই অনুমান করা যায়। গ্রহ, উপগ্রহগুলোর উপর সূর্যের আলো পড়ায় মতির মত ঝকমক করতে থাকে। রং-বেরঙের আলোর ঝলকানিতে চোখ জুড়িয়ে যায় ও মনে প্রশান্তি আনে।
আল-কোরআন -
সূরা রাহমান-আয়াত নং-৭, ৮ ও ৩৫
(৫৫ : ০৭) অর্থ:- তিনি আকাশকে করেছেন সমুন্নত এবং স্থাপন করেছেন মানদন্ডে ( মাত্রা বা ডাইমেনশনে )
(৫৫ : ০৮) অর্থ:- যেন তোমরা ভারসাম্য লংঘন না কর।
(৫৫:৩৫) অর্থ:- তোমাদের প্রতি প্রেরিত হবে অগ্নিশিখা ও ধুম্রকুঞ্জ, তখন তোমরা প্রতিরোধ করতে পারবে না।
সূরা জ্বিন- আয়াত নং-৮ ও ৯
(৭২ : ৮) অর্থ:-এবং ওরা পরস্পর বলাবলি করছিল যে, আমরা চেয়েছিলাম আকাশের তথ্য সংগ্রহ করতে, কিন্তু আমরা দেখতে পেলাম কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ;
(৭২ : ৯) অর্থ:-পূর্বে আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শোনার জন্য বসে থাকতাম কিন্তু এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে তার উপর নিক্ষেপের জন্য প্রস্তুত জ্বলন্ত উল্কাপিন্ডকে ওঁৎ পেতে থাকতে দেখে।
বিজ্ঞানের সহায়তায় আমরা জেনেছি যে,- { আমরা শুধুমাত্র স্থানের তিনটি এবং কালের একটি মাত্রা দেখতে পাই, কারণ অন্য মাত্রাগুলো বক্র হয়ে অত্যন্ত ক্ষুদ্র আয়তনের স্থানে রয়েছে। সুতরাং স্পষ্টই মনে হয় স্থান-কালের যে সমস্ত অঞ্চলে একটি কালিক ও তিনটি স্থানিক মাত্রা কুঞ্চিত হয়ে যায়নি একমাত্র সেই সমস্ত অঞ্চলেই আমরা প্রাণ অর্থাৎ প্রাণ বলতে যা বুঝি, সেই রকম প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব। ( ‘কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’- স্টফেন ডবু হকিং -১০ অধ্যায় - ‘পদার্থবিদ্যাকে ঐক্যবদ্ধ করা’- দেখে নিতে পারেন ) }
আল-কোরআনের বিজ্ঞানময় ঐশী বাণী ও বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো পর্যালোচনা করলে আমরা সহজেই বুঝে নিতে পারি যে, মহান আল্লাহতায়ালা এই পৃথিবীকে বাসোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য সৌরমন্ডল সহ আসমানের প্রতিটি স্তর ও মহাস্তরকে (৫৫:৭) কয়েকটি মানদন্ড অর্থাৎ ডাইমেনশন বা মাত্রার ছকে এমনভাবে বেঁধে দিয়েছেন যেন (৫৫:৮) ভারসাম্য লংঘিত না হয়। আর ‘স্থানের তিনটি ও কালের একটি মাত্রা’ = ‘চারটি মাত্রায়’ বেঁধে দেয়া ভারসাম্যের কারণেই আমাদের এই পৃথিবীতে (৪০:৬৪) বাসযোগ্য পরিবেশ গড়ে উঠেছে ও প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব হচ্ছে। এই মানদন্ডের কারণেই প্রথম আসমান (৪০:৬৪) ছাদরূপ পৃথককারীর মত আমাদেরকে সপ্ত-আসমানের বাকী অঞ্চলগুলো থেকে আড়াল করে রেখেছে। হয়ত এমন একদিন আসবে যখন এই সৌরজগতের গ্রহ, উপগ্রহগুলো সহ সমস্ত কিছুকে ধীরে ধীরে জয় করা সম্ভব হবে। কিন্তু এই সৌরজগতের জ্ঞাত শেষ সীমানার (পুটো) পরে কোটি কোটি (৭২:৮), (৭২:৯) ধুমকেতু অধ্যূষিত যে বিশাল এলাকা রয়েছে তার (৫৫:৩৫) বাঁধাগুলোকে প্রতিহত করে আরও ঊর্ধ্বে আরোহন করা ( সাওয়ার হওয়া ) সম্ভব হবে কিনা তা ভবিষ্যতই বলে দেবে। প্রতিদিন প্রায় বিশ লাখ উল্কা পতন ঘটে এবং সেগুলো আমাদের পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে। কিন্তু মহান আল্লাহতায়ালার অশেষ কৃপায় আমরা পৃথিবীবাসি এগুলোর হাত থেকে যে শুধু রক্ষা পাচ্ছি তাই নয়, এর ভয়াবহ রূপ আমরা সচরাচর অনুভবও করতে পারি না। মহান আল্লাহতায়ালা জ্বীন জাতিকে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে ঘুরে বেড়ানোর ক্ষমতা দান করেছেন। কিন্তু দুষ্টু জ্বীনেরা মাঝে মাঝে তাদের সীমা লঙ্ঘন করে যেতে চায় এবং আকাশের গোপন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে। (৭২:০৮), (৭২:০৯) তখন তাদের প্রতি জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড নিক্ষেপ করে সেখান থেকে বিতাড়িত করা হয়।
Main article: Observable universe
A majority of cosmologists believe that the observable universe is an extremely tiny part of the whole universe and that it is impossible to observe the whole of comoving space. It is presently unknown if this is correct, and remains under debate. According to studies of the shape of the Universe, it is possible that the observable universe is of nearly the same size as the whole of space.[4][5] If a version of the cosmic inflation scenario is correct, then there is no known way to determine if the whole universe is finite or infinite. If it is infinite, the observable Universe is just a tiny speck of the whole universe.
The observable (or visible) universe, consisting of all locations that could have affected us since the Big Bang given the finite speed of light, is certainly finite. The comoving distance to the edge of the visible universe is about 46.5 billion light years in all directions from the earth; thus the visible universe may be thought of as a perfect sphere with the earth at its center and a diameter of about 93 billion light years.
আলোচনা-
বিংশ শতাব্দিতে বিজ্ঞানী ‘এডউইন হ্যাবলের’ আবিষ্কারের ফলশ্রুতিতে এবং ‘হ্যাবল টেলিস্কোপের’ সহায়তায় এ পর্যন্ত পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে তার চতুর্দিকে ৪৬৫০ কোটি (৪৬৫x ১০~৮) আলোক বছর দূরত্ব পর্যন্ত ঊর্ধ্ব জগতের বিভিন্ন স্তর ও মহাস্তর সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জ্ঞানার্জন ও পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন।{এক বছরে আলোক যে দূরত্ব অতিক্রম করে, তা হলো = ১৮৬০০০ x ৬০ x ৬০ x ২৪ x ৩৬৫.২৫ = ৫৮৬৯৭১ ৩৬০০০০০ মাইল। অতএব ৪৬৫০ কোটি আলোক বছর দূরত্ব = ৫৮৬৯ ৭১৩৬০০০০০ x ৪৬৫ x ১০~৮ মাইল = ২৭২৯৪১৬৮২৪০০০০০০ x ১০~৮ মাইল = ২৭২৯৪১৬৮২৪০০০০০ ০০০০০০০০০ মাইল (আলোর গতিতে অতিক্রম্য)}। সূতরাং পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে তার চতুর্দিকে আলোর গতিতে অতিক্রম্য ২৭২৯৪১৬৮২৪০০০০০০০০০০ ০০০০ মাইল এলাকা ব্যাপী এক বিশাল (মানবীয় দৃষ্টিকোন থেকে অসীম) ব্যাপ্তির সন্ধান পাওয়া গেছে।
Implications for the fate of the universe
Cosmologists estimate that the acceleration began roughly 9 billion years ago. Before that, it is thought that the expansion was decelerating, due to the attractive influence of dark matter and baryons. The density of dark matter in an expanding universe decreases more quickly than dark energy, and eventually the dark energy dominates. Specifically, when the volume of the universe doubles, the density of dark matter is halved but the density of dark energy is nearly unchanged (it is exactly constant in the case of a cosmological constant).
If the acceleration continues indefinitely, the ultimate result will be that galaxies outside the local supercluster will move beyond the cosmic horizon: They will no longer be visible, because their line-of-sight velocity becomes greater than the speed of light.
তবে ৪৬৫০ কোটি (৪৬৫x ১০~৮) আলোক বছর দূরত্বের এই সীমানার পরে নক্ষত্রগুলো আলোর চেয়ে অধিক গতিবেগ প্রাপ্ত হওয়ায় দৃশ্যপট থেকে চিরতরে উধাও হয়ে যাচ্ছে। ফলে (৬৭:১,২,৩,৪) নং আয়াত অনুসারে সেই সীমানার পরে সর্বাধূনিক বৈজ্ঞানিক দর্শন-শক্তি সম্পন্ন পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বার বার ব্যর্থ ও ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসছে। সুতরাং এই সীমানার গন্ডিতে বিস্তৃত আসমানী অংশকে আজকের বিজ্ঞানে বর্ণীত সুপার স্পেসের প্রথম অংশ অর্থাৎ সপ্ত-আসমানের প্রথম আসমানী দৃশ্য সীমানা দ্বারা পরিবেষ্টিত, নির্দিষ্ট ভারসাম্যপূর্ণ মানদন্ডের ( চারটি মাত্রা বা ডাইমেনশনের ) বন্ধনে আবদ্ধ ও নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ( সৌরমন্ডলীয় ) পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত অংশ হিসেবে ধরে নেয়া যেতে পারে। এখন পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা প্রথম আসমান অর্থাৎ আসমানী দৃশ্য সীমানার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। এই সীমানার বাহিরে অন্য আসমানগুলোতে কি আছে বা ঘটছে তার খবর মানুষ জানতে পারবে কি পারবে না তা বলা সত্যিই বড় কঠিন। এতটুকু বলা যায় যে, ৪৬৫০ কোটি আলোক বছর দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত ঊর্ধ্ব দৃশ্য জগতের সীমানার অর্থাৎ প্রথম আসমানী ছাদের (৪০:৬৪) দরজা খোলা এবং বাকী ছয়টি আসমানের খবর শুধুমাত্র মানবিক দৃষ্টিশক্তির উৎকর্ষ সাধনের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে আয়ত্তে আনা বা জানতে পারা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। তবে চর্মচক্ষুতে দেখতে পারা না গেলেও চেষ্টা ও সাধনার বলে এর সাথে অন্য প্রকার শক্তি বা মহাশক্তি অর্জন এবং সমন্বয়ের দ্বারা অনুমান ও অনুভবের আলোকে হয়তবা কিছুটা বর্ণনা করা যেতেও পারে।
সূরা আল জিন ( মক্কায় অবতীর্ণ )
(৭২:২৬) অর্থ- তিনি অদৃশ্যের জ্ঞান রাখেন, তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না।
(৭২:২৭) অর্থ- তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত। তখন তিনি তার অগ্রে ও পশ্চাতে প্রহরী নিয়োজিত করেন
(৭২:২৮) অর্থ- যাতে আল্লাহতাআলা জেনে নেন যে, রাসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পয়গাম পৌছে দিয়েছেন কি না। রসূলগণের কাছে যা আছে, তা তাঁর জ্ঞান-গোচর এবং তিনি সবকিছু স্মরণে রাখেন ও সংখ্যাতাত্ত্বিক হিসাব রাখেন।
পরিশেষে বলতে চাই যে, অতীতে মহান আল্লাহতায়ালা (৫৫:৩৩) তাঁর আনুগত্যশীল প্রিয় বান্দা অর্থাৎ নবী ও রসূলগণকে এই মহাবিশ্বের বস্তুগত ও অবস্তুগত, দৃশ্য ও অদৃশ্য বিষয়গুলোর খবর জানাবার জন্য তাঁদের চেষ্টা, সাধনা, যোগ্যতা ও কর্মক্ষেত্র অনুসারে প্রয়োজনমত মহাশক্তি (আইন-সঙ্গত অধিকার) দান করেন। সর্বশেষ নবী রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহতায়ালার অশেষ কৃপায় এই মহাশক্তি অর্জনের চরম সীমায় উন্নীত হয়েছিলেন। মেরাজের গৌরবময় রাত্রিতে মহান আল্লাহ্ তাঁর অসীম ক্ষমতা ও কুদরতের পরশে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ও আনুগত্যশীল বান্দা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে স্থান-কালের সীমানার পরে সপ্ত-আকাশমন্ডলী অতিক্রম করিয়ে ঊর্ধ্বজগতের সর্বোচ্চ সীমায় স্ব-শরীরে ভ্রমণ করিয়েছিলেন এবং অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যে জ্ঞানদান করেছিলেন তা অন্য কারো পক্ষে অর্জন করা কখনই সম্ভব নয়।
বিংশ শতাব্দি বিজ্ঞানের যুগ। প্রায় ১৪৫০ বছর পূর্বেই মহান স্রষ্টা তাঁর বিজ্ঞানময় গ্রন্থে এমন সব অকাট্য বৈজ্ঞানিক তথ্যের অবতারনা করেছেন যেগুলোর মর্ম ধীরে ধীরে উপলব্ধি করা সম্ভব হচ্ছে। এ বিষয়টি তো সর্বজ্ঞ আল্লাহতায়ালার পরিকল্পনার মধ্যেই ছিল এবং তিনি ভালভাবেই জানতেন যে, এমন এক সময় আসবে যখন আল-কোরআনে প্রদত্ত বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো অন্যান্য ধর্মের বিজ্ঞানীদের দ্বারা তাদের অজান্তেই সত্য বলে আবিষ্কৃত হতে থাকবে। এরফলে এই সত্য তথা প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো একদিকে যেমন তারা সরাসরি অস্বীকার করতে পারবে না, অপরদিকে তেমনি এই তথ্যগুলো কিভাবে আল-কোরআনে স্থান পেল তা অবিশ্বাসীরা ভেবে কুল পাবেনা। মহান স্রষ্টা যে আছেন এ পৃথিবীতে আল-কোরআনই তার চিরন্তর জ্জ্বলন্ত প্রমান। এই অকাট্য সত্য তথ্যগুলোকে যে স্বয়ং মহান স্রষ্টাই তাঁর প্রেরিত মহাগ্রন্থে মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য আগে থেকেই সংযোজন করে রেখেছেন তা ঈমানদারেরা সহজেই বুঝে নেবে ও একবাক্যে বিশ্বাস করে নেবে। এই ঐশী তথ্যগুলোর অছিলায় অনেক নীরহংকার জ্ঞানী ও বিচক্ষণ ব্যাক্তিবর্গ যে ইমানের আলোয় আলোকিত হবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে এপরও যারা অহংকার বশত বে-ইমানের পথে পা বাড়াবে তাদের ফায়সালার জন্য তো মহান আল্লাহই যথেষ্ট।
এখানে দেখুন- সাত - আসমান আবার কি?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১২ সকাল ১১:১১