মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ করুন
'''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''
কয়েছ আহমদ বকুল
আমাদের সমাজে দুই রকমের বিয়ে প্রথা চালু আছে, পরিবারের পছন্দ মতো তাদের আলোচনার ভিত্তিতে অনুষ্টানের মাধ্যমে বিয়ে আর প্রেম করে বিয়ে। প্রেম করে বিয়ে করা পুত্রবধু বা জামাতাকে খুব সহজে পরিবার থেকে গ্রহণ করা হয়না কিন্তু কোন কোন সময়ে আবার গ্রহণ করাও হয়, যদি সে পুত্রবধু বা জামাতা বেশী যোগ্য বা সামাজিক ভাবে প্রতিষ্টিত বা খুব সুন্দর অথবা অর্থনৈতিক বা পাশাপাশি কোন কারণে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকেন। আমাদের দেশে দুই রকমের নির্বাচন প্রথাও চালু আছে, সব দলের অংশ গ্রহণে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন আর ক্ষমতাসীন দলের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে একতরফা নির্বাচন। একতরফা নির্বাচন সাধারণত জনগণ কর্তৃক প্রত্যাখাত হয় আবার কোন কোন সময় সাধারণ মানুষ তা মেনেও নেয় যদি তা দেশ জাতির স্বার্থ রক্ষার সম্ভাবনা থেকে হয়ে থাকে। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের বিরুদ্ধে জনগণ এখনো নীরব এবং তারা আশা করছে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা বর্তমান সরকার নিশ্চয়ই তাদের নীরব থাকাটাকে মূল্যায়ন করবে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। অনেকাংশে সাধারণ মানুষের অনুভূতিকে সম্মান দেখানো হয়েছে বলা যায়। বিগত সরকারের অনেক নির্লজ্জ ও প্রতিষ্টিত চুরকে এই সরকারের মন্ত্রীসভায় স্থান দেয়া হয়নি, ভালো লক্ষণ কিন্তু আরো সচেতন হওয়া দরকার ছিলো, প্রনম্য তৌফিক এলাহিকে শেষ দিকে এসে উপদেষ্টা না করলেই কি হতো না?
আওয়ামীলীগের বিগত দুই সরকারের চেয়ে এই সরকারেরকে বেশ স্বচ্ছ ও জবাবদিহি মূলক বলেই ধারনা করছেন অনেকে। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী, বয়োবৃদ্ধ মানুষ, সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধা, তাঁর নির্বাচনী এলাকায় তিনি সর্বস্থরের মানুষের কাছে ভাল মানুষ হিসাবেই সমাদৃত। ধুমপান জনিত কারণে তাঁকে আমাদের মহানুভব মিডিয়া যে ভাবে অপদস্থ করলো তা নজির বিহীন, আমাদের দেশে পাবলিক প্লেসে ধুমপান নিষিদ্ধ, যদিও মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে হৈ চৈ সৃষ্টিকারী সাংবাদিক বন্ধুদের অনেকেই শুধু ধুমপানই করেন না, পাবলিক প্লেসেই ধুমপান করে থাকেন প্রায়সই, শুধু ছবি বন্ধি করার কেু থাকে না এই যা ব্যবধান। কিন্তু মাননীয় সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে একটিও বাঁকা কথা বলার চেষ্টা করেন নি, দফায় দফায় বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় তিনি তাঁর সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে গেছেন, কথা দিয়েছেন তিনি এ রকম অন্যায় আর করবেন না। অন্যায় কে অন্যায় বলে স্বীকার করার এই প্রবনতা আমাদেরকে আশান্বিত করে আশ্বস্থ করে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনমতে সম্পন্ন করে সরকার গঠন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। এই নির্বাচনটি কি ভাবে সংঘটিত হয়েছে তা কি জানে আওয়ামীলীগের অন্ধ সমর্থক গুষ্টি? এই নির্বাচন কি কেবল ছাত্রলীগ সংঘটিত করেছে, এই নির্বাচন কি কেবল আওয়ামীলীগের কর্মী সমর্থক দিয়েই সফল রূপ দেয়া হয়েছে? এই নির্বাচনটি সফল হবার পেছনে সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর, বিশেষ করে পুলিশের। বলা চলে বহু দিন পরে আমাদের পুলিশ প্রশাসনে চেইন অব কামান্ড ফিরে এসেছে। নিজের জীবনকে বিপন্ন করে দিয়ে যেভাবে আমাদের পুলিশ সমাজ আওয়ামীলীগের এই দুর্যোগকাল মোকাবেলা করেছে তা অভূতপূর্ব। আওয়ামীলীগ সরকারের বিগত পাঁচ বছরে পুলিশ বিরোধীদলের হরতাল অবরোধ প্রতিরোধ করতে যেয়ে যেভাবে আক্রান্ত হয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু বিনীময়ে সরকার থেকে তারা মিথ্যে অপবাদের অনুষঙ্গ সৃষ্টি ছাড়া কিছু অতীতেও পায়নি এখনো পাচ্ছেনা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ স্টুডেন্ট বর্ধিত ভর্তি ফি আর নৈশ ক্লাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, করতেই পারে, করাটা স্বাভাবিক, সরকার বিরোধী ছাত্র সংঘটন আন্দোলনের সেই সুযোগে কিছু অনভিপ্রেত কিছু করে পেলতে পারে সে আশঙ্কাও ঠিক আছে কিন্তু যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য যেহেতু পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিলো সরকারের মদদ পুষ্ট ছাত্রলীগ কেন সেখানে সহিংস হলো, কেন অস্ত্র উচিয়ে গুলি ছুড়ে পুলিশের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করলো তারা?
ছাত্রলীগ' শব্দটার প্রতি অপরিসীম দুর্বলতা আছে, কিন্তু আজকের ছাত্রলীগ কি ছাত্রলীগ শব্দটার মাহাত্ম জানে? তারা কি ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্যের সম্মান রক্ষা করতে পারছে? আদৌ কি আজকের ছাত্রলীগ বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বা স্বাধীনতার পক্ষশক্তির কোন কাজে আসছে? তাহলে কেন এই ছাত্রলীগ নামের কলঙ্ক কে গায়ে জড়িয়ে সরকার নিজেকে বিপদগামী করছে?
যে কোন কারণেই দুর্মূখেরাও শেখ হাসিনাকে একজন যোগ্য রাষ্ট্র নায়ক অভিধায় ভূষিত করছেন আজকাল। যে কোন প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় থেকে মানবতা বিরোধী অপরাধ সহ রাষ্ট্র বিরোধী অবস্থান ও সকল কার্যক্রমের বিচার নিশ্চিত করতে তাঁর দৃঢ় মানষিকতা মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রসংশিত হচ্ছে। কিন্তু ছাত্রলীগ নামের উন্মত্ত উৎশৃঙ্খল ছেলে গুলোকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে তীরে এসে তরী ডুবে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকার ও আওয়ামীলীগের নীতিনির্ধারনী মহল যত তাড়াতাড়ি বিষয়টা অনুধাবন করবেন ততই সরকার ও দেশের জন্য মঙ্গল জনক হবে।