ছোটবেলায় দোকানে গিয়ে গেম খেলে নাই এমন ছেলে কমই আছে। মোস্তফা, 97 সহ আরো অনেক গেম সবারই পরিচিত। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন এক টাকা করে কয়েন ছিল। গেম খেলার জন্য অভিভাবকের দৌড়ানি বা মার খায় নাই এমন কেউ নাই বললেই চলে। আসলে সেই সময়ের গেম খেলার মজা এখনকার শত গ্রাফিক্স যুক্ত গেম দিয়েও পূরণ করা সম্ভব না।
আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। রীতিমতো গেমের দোকানে রেগুলার যাতায়াত ছিল। খেলতে না পারলেও দর্শক হিসেবেই বেশি একটিভ ছিলাম। আস্তে আস্তে কেমন যেন নেশার মতো হয়ে গেল। একদিন না গেলে কেমন যেন লাগতো। টাকা যা পাইতাম বেশিরভাগ গেমসের কয়েন কিনতেই চলে যেত।
আপনাদের মনে আছে কিনা তখন কয়েন ছিল লোহা দিয়ে বানানো গোল গোল পয়সার মতো। যেটা গেমসের মনিটরের নিচে বক্সের মতো একটা ছিদ্রতে ফেললে গেমস চালু হতো। তো হঠাৎ একদিন মাথায় বুদ্ধি আসলো ঐ পয়সার মতো কয়েন আর নাট-বল্টুর বল্টুর সাইজও একই। তাই বল্টু দিয়ে যদি হয় তাহলেতো টাকা দিয়ে কয়েন কিনতে হবে না। যেই ভাবা সেই কাজ। ঘরে অনেক বল্টু ছিল কয়েকটা নিয়ে দোকানে গেলাম। একটা ফেলে দিলাম বক্সে। প্রথমে দেখি যাচ্ছে না। জোড়ে বল প্রয়োগ করলাম। দেখি কাজ হয়েছে। তখন আমাকে আর পায় কে!
প্রতিদিন বল্টু নিয়ে যেতাম আর চুপি চুপি খেলে চলে আসতাম। দোকানদার টেরই পেত না। কিন্তু চোরের দশ দিন আর গৃহস্থের একদিন। রীতিমতো ঐ দিনও বল্টু ঢুকিয়েছি কিন্তু কাজ করছে না। বল্টু ছিদ্রে আটকে গেছে। হঠাৎ করে দোকানি এগিয়ে আসল। বলল দেখি আমি চেষ্টা করি। আমি বলি কোন দরকার নেই। আমার কয়েন লাগবে না। কিন্তু ততক্ষনে দেরি হয়ে গেছে। দোকানি বক্স খুলে দেখে বল্টু আটকে আছে।
যথারীতি দোকানদার হুংকার দিয়ে উঠলো। ঐ পাইছি ঐ চোররে। কয়দিন ধরেই অফুরন্ত বল্টু দেখে দোকানদার ক্ষেপে ছিল। ধরা খেয়ে বগা হিসেবে আমি ফান্দে পড়েছি। পরের দৃশ্য আপনারা হয়তো কল্পনা করতে পারছেন। দোকানদার আমাকে রশি দিয়ে পিছমোরা করে বাধলো। ছোট দেখে হয়ত মাইর দেয় নাই। কিন্তু আমাকে রশি বাধা অবস্থায় ছেড়ে দিল........
এভাবেই দোকানের গেম ক্র্যাক করে খেলার প্রতিভা বন্ধ হয়ে গেল।
ইচ্ছা করলে সেই গেমগুলো পিসিতেও খেলতে পারেন। পাবেন এখানে