আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে আমাদের পাশে পেয়েছিলাম ভিন দেশী কিছু স্মরণীয় সুহৃদকে যারা নিজের জীবন বাজী রেখে , দেশ কালের সীমা অতিক্রম করে আমাদের সেই মহাক্রান্তিকালে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সাহায্যের হাত ।
১৯৭১ সনে যাদের গর্জে ওঠেছিল হাতিয়ার, কারো কলম,কারো কণ্ঠ, আবার কখনো বা নিজেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জীবন বিপন্ন করে।
বিজয়ের এই মাসে সশ্রদ্ধ চিত্তে তাঁদের স্মরণ করে এই ছবি ব্লগ ২ । ( একাত্তরের স্মরণীয় ভিন দেশী সুহৃদ গন ( একটি ছবি ব্লগ ) - ১ নামে প্রথম পর্ব দিয়েছিলাম ২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে
http://www.somewhereinblog.net/blog/Giasliton007/29908791 )
১।ইন্দিরা গান্ধী
'ভারতের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সাহায্য বৃদ্ধি করা ছাড়া গত্যন্তর নেই ' হেনরি কিসিঞ্জারের মুখের উপর এমন কথা বলার মত উদার মানসিকতা তৎকালীন সময়ে একজনেরই ছিল এবং তিনি সেটা করে দেখাতেও পেরেছিলেন। তিনি আর কেউ নন, ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
ইন্দিরা গান্ধীকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছুই নেই, এই নামটি প্রতিটি বাঙালির কাছে একটি পরিচিত নাম ।
একাত্তরের ১৩ এপ্রিল তিনি বলেন- পূর্ব বাংলা যা ঘটেছে, তাতে ভারত সরকার নীরব থাকবেনা।
১৭ই মে পশ্চিমবঙ্গে এসে রাজ্য সরকারকে আশ্বস্ত করেন এবং বলেন- শরনার্থী বিষয়ে কেন্দ্র তাদের পাশে থাকবে।
একাত্তরের ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া হয় এবং পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশী তরুণদের সশস্ত্র ট্রেনিং দানের দায়িত্বও দেয়া হয় তাদের। সেই সাথে তিনি সারা বিশ্বে পাকিস্তানীদের নির্মম, নিষ্ঠুর নারকীয় হত্যাযজ্ঞের চিত্র তুলে ধরে বিশ্ববাসীকে আহবান জানান বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়াতে। তাঁর দুর্লভ ব্যক্তিত্ব এবং কূটনৈতিক দক্ষতার জোরে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তার পক্ষে সমর্থন দিতে থাকেন।
বাংলাদেশের লাখ লাখ শরণার্থীকে সেবাযত্ন করায় ইন্দিরা গান্ধীর এ কাজকে যীশুখৃষ্টের কাজের সঙ্গে তুলনা করেছেন নোবেলজয়ী মাদার তেরেসা।
তারা সবাই ঈশ্বরের সন্তান শীর্ষক একটি বইয়ে তেরেসা এ বিষয়টি উল্লেখ করেন। ইন্দিরা গান্ধী আজ পৃথিবীতে নেই, কিন্তু আমরা আজও চিত কৃতজ্ঞ এই মহীয়সী নারীর প্রতি।
২। মাদার তেরেসা
মাদার তেরেসা সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। একাত্তরে কলকাতার উপকন্ঠে সল্টলেক সিটির শরনার্থী শিবিরে তখন বাঙালী শরণার্থীর সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে, এই শরণার্থীদের অধিকাংশই অর্ধাহারে, অনাহারে, অপুষ্টিতে, কলেরা, আমাশয়ে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল।
মহীয়সী মাদার তেরেসা তার 'মিশনারিজ অব চ্যারিটি'র সদস্যদের নিয়ে হাজির হয়ে যান সেই সব শরণার্থী শিবিরে। পাশে দাঁড়িয়ে সেইসব অসহায় মানুষের সেবা করেছেন, তাদের করুণ অবস্থা দেখে পৃথিবীর বিবেকবান মানুষদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
একাত্তরে পাক বাহিনীর নীল নকশা অনুযায়ী লাখ লাখ নারী ধর্ষিত হয়েছে, এই ধর্ষিতা নারীদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই গর্ভবতী হয়ে পড়ে। যুদ্ধ শেষে এই গর্ভবতী নারীরা যুদ্ধ সন্তানদের দিয়ে পড়ে বিপাকে।
১৯৭২ সালে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের হতভাগী এইসব নারীদের একটা গতি করতে এগিয়ে এসেছিলেন তিনি। বীরাঙ্গনা সমস্যা, যুদ্ধশিশুদের নিয়ে তখন দিশেহারা বাংলাদেশ সরকার। তখন অনেক যুদ্ধশিশুদেরকে ফেলে দেয়া হত ডাস্টবিনে। এমনই এক পরিস্থিতে তিনি এলেন, ঢাকায় খুললেন দ্য মিশনারিজ অভ চ্যারিটি'র শাখা। পরম মমতায় সেইসব যুদ্ধশিশুদের কোলে তুলে নিতে নিলেন। সমাজ ও পরিবারে অবাঞ্ছিত হয়ে বাঁচার বদলে তাদের পাঠিয়ে দেন কলকাতা, সুইডেন ও ফ্রান্সে।
৩। শহীদ ফাদার উইলিয়াম ইভান্স, যুক্তরাষ্ট্র
ফাদার ইভান্স জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এদেশের নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন । তিনি ভাল করেই জানতেন মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোন ধরনের সাহায্যের খবর পাক বাহিনী জানতে পারলে নিশ্চিত মৃত্যু! তা সত্ত্বেও তিনি এদেশের অসহায় মানুষ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে দাড়িয়েছিলেন, হাসিমুখে এবং স্বেচ্ছায় আশ্রয় দিয়েছিলেন অসংখ্য রিফিউজি, গেরিলা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের। যার মূল্য দিতে হয়েছিল নিজের জীবন দিয়ে। একাত্তরের ১৩ই নভেম্বর, নৌকাযোগে বক্সানগর গ্রামে যাবার পথে নওয়াবগঞ্জ পাকিস্তানী ক্যাম্পে অবস্থানরত পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সৈন্যরা নৌকা থামাতে বলে। ফাদার ইভান্স নৌকা থেকে নামতেই রাইফেলের বাঁট দিয়ে তার মুখে প্রচণ্ড আঘাত করে পাকিস্তানী সৈন্যরা। তারপর আরও দুটি গুলি করে ফাদার ইভান্স এর বুকে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে আঘাত করা হয় বেয়োনেট দিয়ে। তারপর যখন সব শেষ হয়ে যায়, তার লাশ ছুঁড়ে ফেলা হয় নদীতে।
৪। শহীদ ফাদার মারিও ভেরোনেসি, ইতালি
১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিল, যশোরের একটি ক্যাথলিক চার্চের ফাতিমা হাসপাতালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার সেবার তদারকি করতেন ফাদার মারিও। এই হাসপাতালে প্রাণ বাঁচাতে কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। সেদিন বিকেল ৪টা, পাক বাহিনীর একটি দল গালি দিতে দিতে চার্চে প্রবেশ করে। রেডক্রসের পতাকা, বুকে ঝোলানো রেডক্রসের ব্যাজ সব কিছু অবজ্ঞা করে পাক বাহিনী চার্চে ঢুকে সাতজনকে গুলি করে হত্যা করে। ফাদার মারিও দুই হাত উঁচু করে এক সেনার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন, কিন্তু তাঁকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে গুলি করা হয়, সাথে সাথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন গরিব-দুঃখির এই দরদী বন্ধু। শিমুলিয়া ধর্মপল্লীতে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
৫ । ফাদার মারিনো রিগন ইতালি।
বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার বানিয়ারচর গ্রামের একটি ক্যাথলিক মিশনের একজন ধর্মযাজক ফাদার মারিনো রিগন। ভয়াবহ দিনগুলোতে এদেশ থেকে চলে যাওয়ার পরিবর্তে তিনি এদেরই একজন হয়ে এদের পাশে দাঁড়ান পরম বন্ধুর মত। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ, হত্যা-লুণ্ঠন, নারী নির্যাতন, অগ্নিসংযোগের কারণে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা নিজ চোখে দেখে যুদ্ধপীড়িত ও যুদ্ধাহত মানুষের পাশে এসে দাঁড়ালেন, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ঢেলে সাজালেন নিজের ক্ষুদ্র চিকিৎসাকেন্দ্রটি। সেই সাথে তাদের আশ্রয় ও খাদ্য সংস্থানের ব্যবস্থাও করলেন।
এদেশের মুক্তিযুদ্ধে, সৃজনশীল ও শিক্ষামূলক কাজে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার তাঁকে প্রদান করেছেন বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব। মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য সম্প্রতি তিনি অর্জন করেছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার'মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা ।
৬। প্রনব মুখার্জি
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি । একাত্তরে সেই ভয়াবহ দিনগুলোতে চরম সংকটকালীন সময়ে উদারভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সেই সময়ের রাজ্যসভার সদস্য প্রনব মুখার্জি। একাত্তরে লাখ লাখ শরনার্থি ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়সহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে আসে।
বাংলাদেশের সেই চরম অসহায় মুহুর্তে পরম বন্ধুর মত ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাথে প্রনব মুখার্জি সীমান্ত খুলে দেয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় শরনার্থী শিবির স্থাপন, পর্যাপ্ত খাদ্য, চিকিৎসা ও অন্যন্য সুবিধা নিশ্চিত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। কোলকাতায় প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন, ভারতীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সম্প্রচার কেন্দ্র চালুসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করেন।
৭। লর্ড ব্রকওয়ে ইংল্যান্ড ।
ঔপনিবেশিক মুক্তি আন্দোলনের প্রাবাদপুরুষ ব্রিটিশ লর্ডস সভার সদস্য লর্ড ফেনার ব্রকওয়ে ৪ এপ্রিল ১৯৭১ ব্রিটেনের এক উন্মুক্ত জনসভায় বলেন- তাঁর শৈশব কেটেছে বাংলায় তাই নিজেকে তিনি সবসময় বাংলার বন্ধু হিসেবে মনে করেন। পূর্ব বাংলায় তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যে অবর্ননীয় মানবিক বিপর্যয় ঘটছে অতি দ্রুত তা বন্ধ করতে অবদান রাখার জন্য তিনি দাবি জানান। এজন্য তিনি ছয় দফা দাবি পেশ করেন এবং নিরাপত্তা পরিষদে পূর্ব পাকিস্থানের পরিস্থিতি নিয়ে উত্থাপিত ভারতীয় প্রস্তাবের প্রতি তিনি জোরালো সমর্থন জানান।
৮। ফ্রাংক চার্চ যুক্তরাষ্ট্র
একাত্তরের ২২শে জুন, নিউইয়র্ক টাইমস সংবাদদাতা ট্যাড শুলক একটি চাঞ্চল্যকর সংবাদ প্রকাশ করলেন-পাকিস্তানি পতাকাবাহী একটি মালবাহী জাহাজ সামরিক সরঞ্জামবোঝাই অবস্থায় নিউইয়র্ক থেকে করাচির উদ্দেশে রওনা করতে যাচ্ছে। ।
মার্কিন সিনেটে মুখ খুললেন সিনেটর ফ্রাংক চার্চ, তিনি বললেন- বিষয়টি উদ্বেগজনক। প্রথম থেকেই বলা হচ্ছে, পশ্চিম পাকিস্তানী সরকার আমেরিকান অস্ত্র ও গোলাবারুদ পূর্ব পাকিস্তানী নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যায় ব্যবহার করছে। সেদিনই সিনেটর ফ্রাংক চার্চ মার্কিন সিনেটে বিষয়টি তুলে ধরে জানালেন, তাঁর কাছে প্রামাণিক কাগজপত্র রয়েছে যে, দুটি মালবাহী জাহাজ সুন্দরবন ও পদ্মা ৮ এবং ১২ই জুন নিউইয়র্ক বন্দর ছেড়ে যাওয়ার কথা।
বিশেষ করে পদ্মা সেদিন বিকেলেই বন্দর ছেড়েছে। তিনি প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে কে সেদিনের চালানটি বন্ধ করার কার্যকরী নির্দেশ প্রদান করতে অনুরোধ করেন। তিনি আরও বলেন- ২৩শে জুন জাহাজটি মন্ট্রিয়াল ডকে পৌঁছানোর কথা, কোস্টগার্ডরা যদি যুক্তরাষ্ট্রের জলসীমার মধ্যে জাহাজটিকে আটক করতে না পারে, তাহলে কানাডা সরকারের সাহায্য নিয়ে হলেও এইসব নিষিদ্ধ সরঞ্জাম পাঠানোর উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে।
৯। রাসেল জনস্টোন ইংল্যান্ড ।
একাত্তরের ৩১শে মার্চ রাসেল জনস্টোন ব্রিটিশ কমন্স সভার সদস্য হিসেবে যে বিবৃতি দিয়েছেনঃ আমরা অত্যন্ত শঙ্কার সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকটের বিস্তার পর্যবেক্ষণ করছি। স্পষ্ট ও বিস্তারিত প্রতিবেদন না পেলেও সংবাদগুলো অনেক সময় পরস্পরবিরোধী দুটি বিষয় কিন্তু অনস্বীকার্য। প্রথমত, এটা খুব স্পষ্ট যে সংখ্যাগরিষ্ঠের দাবী পূর্ব পাকিস্তানের জন্য স্বাধীনতা। দ্বিতীয়ত, এই স্বাধীনতার দাবীকে দমাতে পশ্চিম পাকিস্তান সরকার তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে সেনাবাহনীকে অত্যাচার আর নির্যাতনে নিয়োজিত করে। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ননামতে সেনাবাহিনীর নৃশংস ও নির্বিচার বর্বতার শিকার হয়ে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষ নিহত হয়। এ ছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বন্যা (জলোচ্ছ্বাস) বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সহানুভূতি জাগিয়েছে; বর্তমান পরিস্থিতিতে ত্রাণ সহায়তা ব্যহত হলে দুর্গতদের যন্ত্রণা আরও অসহনীয় হয়ে উঠবে। বর্তমান ঘটনাবলী পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার- এ যুক্তিতে ব্রিটেন অনড় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না। আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছিযে, খারাপের দিক থেকে অসহনীয় বর্বরতা কতটা নির্মম হতে পারে আর ভালোর দিক থেকে রাজনৈতিক বিষয় মনে করে বড় ভ্রান্তি কি করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে। কমনওয়েলথের জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে একটা কার্যকরী সমাধান বের করতে এবং ওখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্রিটেনের সামনে খোলা সব পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব ব্রিটেনের ওপরই ন্যস্ত।
১০। লিয়ার লেভিন যুক্তরাষ্ট্র ।
লিয়ার লেভিন, একজন মার্কিন চলচিত্র নির্মাতা ও চিত্রগ্রাহক। একাত্তরে তিনি এসেছিলেন বাংলাদেশে, নিজের জীবনকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে 'বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা' নামক একটি দলের সাথে সারাদেশে ঘুরে-ঘুরে তুলেছেন মুক্তিযুদ্ধের বিরল সব চিত্র। এই দলের সাথে থেকে তিনি প্রচুর ফুটেজ সংগ্রহ করেন, উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর একটি ডকুমেন্টরি নির্মান করবেন। অর্থের অভাবে তার সেই ইচ্ছে আর পুরণ হয়নি। লিয়ার অত্যন্ত যত্ন সহকারে সেগুলো তুলে রেখেছিলেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। দীর্ঘ বিশ বছর পর তার অপেক্ষার অবসান ঘটে, বাংলাদেশী চলচিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ নিউইয়র্কে তাকে খুঁজে বের করে তার তৈরি ৭২ মিনিটের জয় বাংলা'মুক্তির গান' শিরোনামে নির্মিত হয় যা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে বিবেচিত।
( তথ্য সুত্র ; ইন্টারনেট , সাথে নিভৃত স্বপ্নচারীর নিকট কৃতজ্ঞ ।)