চিলের সহপাঠি ডানাগুলো কই...!
ভেতরের মানুষটাকে মুক্তি দে,
আত্মাকে শিক্ষিত কর, বিকশিত হ' মানুষ,
মনটাতো শরীরের মত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান চায় নাই,
শুধু মুক্তি চেয়েছে,
মুক্তি দে…… বেপরোয়া স্বপ্ন দোহাই তাকে মুক্তি দে,
এই যৌবনই তো বখে যাওয়ার উপযুক্ত সময়,
যে পদ্য বলেছে নন্দিতার চোখই রঙের জননী,
তাতে কবির কোন ছলনা ছিলনা,
গরপত্তা সাহিত্য চর্চা নাই,
যা আছে…
তা জানতে চাইলে, আত্মাকে মুক্তি দে,
মানুষ বড় কষ্টে আছে, তাকে কাছে টেনে নে,
আমার জীবন যাচ্ছে তাই, সংশোধনযোগ্য নয়,
মুক্তি পাক ভেজা আচলে ঢাকা গৃহিনীর চোখ, শেফালী ফুল বিক্রি করা রাস্তার মেয়েটার মন,
জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববি্দ্যালয়ের লেকে ফিরে আসুক অতিথি পাখিরা,
পাখিদের সমান অধিকার নিয়ে মানুষের মনগুলো উড়ুক…
আহা স্বাধিনতা স্বাদ…!!
নীল চাষীর আরোপিত জীবন..
গর্ভের জলজ মৃত্তিকায় ভ্রনীয় চারাগাছের বিবর্তনে গজালো আঙ্গুল, চুল, নখ,নাজুক হ্রদপিন্ড,
ড্যাবড্যাবে রঙ ভিক্ষুক দুইটি চোখ;
সম্মতিহীন-
একনায়কতান্ত্রিক অনুমোদনে মানুষ হলাম,
সেই থেকে আরোপিত ক্ষুধা,
স্মায়ুর নির্বিঘ্ন টেলি যোগাযোগ;
খয়রী বর্ণের কৌটায় আজন্ম বর্ণ বৈষম্য,
গড়ন চলনে সমসাময়িক আঞ্চলিকতার প্রভাব,
অতঃপর নারীর প্রতি বিষ্ফোরিত জোয়ার রসায়ন,
নিয়ন্ত্রনহীন বয়সের নিপুন রেখাচিত্র চামড়ায় লিখে দেয়-
সবই ফুরায়; সেই তো নিয়ম,
এ আদি অসংশোধনযোগ্য আইন;
কে বানালো এ নিকৃষ্ট দাসত্ব!
"ঈশ্বর"! সে কে?
এজাবত যারা নিজেদের ঈশ্বর দাবি করেছে-
তাদের কাছে একটি জরুরী প্রশ্ন-
"ভাই, আমাকে কেন এমন পরাধীন বানালে!"
মানবিক ক্ষুধা, যৌনতা, প্লাটনিক ভালোবাসা, ক্রোধ,
সবই তো এনজাইমের প্রোগ্রাম;
আমার নিয়ন্ত্রনে কখন ছিল কী;
তাহলে আমার স্বত্তার স্বাধীনতা কোথায়!
সমবয়সী এক আত্মাকে মা জেনেছি, সমবয়সী আরেক
আত্মাকে প্রেমিকা, আরেক সমবয়সী আত্মাকে জন্ম দিব বলেই
বাচি! সব সম-সাময়িক প্রোটন ইলেকট্রনের রুপান্তর-
শক্তি/পদার্থ, কেন কী হেতু!
ওরা কী স্বাধীন!
ঈশ্বর কী স্বাধীন! কে তাকে এমন সর্বগ্রাসী স্বাধীনতা দিল!
আমি কী মানুষ হয়ে জন্মেছিলাম?
নাকি জন্মে মানুষ হয়েছি!
কেন জন্ম, কেন মৃত্যু, কেন এই গোপনীয়তা!
হেক্সা ট্রিলিয়ন বছর ধরে মানুষের দাসত্বতের চাষাবাদ করে মহাজাগতিক রহস্য,
আমি কি তাহলে কেবলই সেই একনায়ক স্বত্তার এক্সপেরিমেন্টাল গিনিপিগ!!
(ঈশ্বরকে ভাই বলে সম্বোধনটা কিছুটা লিঙ্গ নির্ভর হলেও আমি পুরো দোষটা চাপাই ভাষার সীমাবদ্ধতার উপর, ভাষাই লিঙ্গ নির্ভর। ধর্মগুলো ঈশ্বরকে পুরুষরুপী বলে ধরে নিয়েছে। আমি অনিশ্চয়তাবাদী, স্টিফেন হকিংসের ধারনাই সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য বলে মনে হয়, " হয়ত ঈশ্বর আছেন অথবা তিনি নেই, যদি তিনি থেকে থাকেন তাহলে মহাবিশ্ব সৃষ্টির পর তিনি এখানে হস্তক্ষেপ করেননি"। আস্তিক/নাস্তিকের টানাপোড়েন থেকে বাচার জন্য ঈশ্বরের ধারনাকে আমি মহাজাগতিক রহস্য বলি। ধর্ম বিষয়ক আমার অন্বেষনের ইতি বৃত্তান্ত পরে কোন লিখায় বলব। এই কবিতার পেছনে যে ভাবনা ছিল তার তলানি হল- আমাদের অক্ষমতা অসীম, এত অক্ষম হয়ে জন্মেছিলাম কেন ভেবে পাই না, অক্ষম যদি হবই তবে জানলাম কেন আমি অক্ষম। আমি কী তবে মহাজাগতিক রহস্যের বিনোদনের একটি সাবজেক্ট ও অবজেক্ট, এক ক্ষমতাহীন বিষন্ন ক্লাউন ...!!)
বিষদ রাতের ঈষদ জোছনা...
জোছনার লবনাক্ততা বেড়ে গেলে আমার এক ব্যক্তির সংসারে টানাপোড়েন বাড়ে; দূর্বা ঘাসের ক্ষিদে পেলে ওদের বাচাতে আমার স্যাতস্যাতে মন সালেকসংশ্লেষন প্রক্রিয়ার মিঠা জলের কবিতা লিখে, তুমি ঐসব রাতে কোথায় ছিলে? কোন মাংশল গন্ধে জলের বাসরে ডুবে ছিলে চুপ!
কাথা মুড়ে স্বামীর বাহুর পাত্রে কোন জলীয় দ্রবন হয়েছিলে তুমি? সেই দ্রবনের লবনাক্ততা ছিল কতটুকু? তোমার সেই দ্রবনের রঙ কী আমার রক্তের চেয়েও গাঢ় ছিল!
আমি দ্রবন বানাবো বলে জোছনা থেকে লবন ছেকে নেই, শুধু একটু আদ্রতা পেলেই বানাবো এক বিশ্ববিন্দু অশ্রু, এক আনবিক কষ্টের সংকলন। জলীয় অনুগুলো জলীয় বাষ্প থাকতেই ভালোবাসে, ওরা জল হতে চায় না; নিরুপায় হয়ে গ্রিক লাভায় তৈরী দগ্ধ ফিনিক্সগুলো মুক্তি দেই নির্জনে ছায়াপথের দরজায়, আচ্ছা, ঐসব রাতে তুমি কোথায় ছিলে? কোন কলম সাক্ষরের সম্পর্কের কাগুজে খাতায়?
তুমি কী দেখোনি আকাশে মস্ত বড় হরফে আমি লিখেছিলাম S.O.S। জোছনার বর্ণে যে চিঠি লিখেছি তোমাকে, জানালার পর্দা টেনে তুমি কি ফিরিয়ে দিয়েছিলে সে চিঠি? রাতের পাখিদের কান কথায় কী একটুও জানতে পারোনি আমার মুমূর্ষ পাথুরে নিস্তব্ধতার কথা! নাকি তুমি জানতে সবই!
জোছনার অগনিত গতকালে অনুপস্থিত ছিলে তুমি। ঐসব রাতে কোথায় ছিলে তুমি?
কোন গোপন কুঠুরিতে লুকিয়ে ছিলে, এই অসম্ভব লুকো-চুরি খেলায় আমাকে চোর বানিয়ে কেন লুকিয়ে ছিলে এত সময়! আবুল হাসানের কবিতা বইয়ের ৫৬-৫৭ পৃষ্ঠার ফাকে লুকানো সাহাবাগের পাঁচ টাকায় কেনা গোলাপের কুচকানো পাপড়িগুলো ফেলে দিয়ে তুমি কী আর ফিরে আসতে চাওনি! নাকি এ সমাধানহীন সমস্যায় দুমুখী দ্বন্দের পেন্ডুলামে তুমিও দুলছো নিরুপায়!!
প্রশ্বাসের অতিরিক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইডের কনাগুলো শুন্যে পাক খায়, তার হাত ধরে নক্ষত্রের বাহুগুলো তৈরী করেছে এক জটিল ধাধার মেরী-গো-রাউন্ড, সেই কক্ষপথে ঘুরে একটি নির্লিপ্ত আক্ষেপের কসমিক কম্পন! জোছনার লবনাক্ত মৃদু তরঙ্গ রশ্মিগুলো আমার চোখের প্রশস্ত চরে খুজে ফেরে মৃত নদীর দাগগুলো।
এখন জোছনার রাতে আমার কপালে আলতোভাবে পড়েনা আর তোমার পাঁচটি পাতা ও একটি কান্ডের ছায়া…
পুষ্কুনির স্রোতকালীন শীতলতা...
পুষ্কুনির ধারে পদ্মার আত্মাবন্ধি আকাশ; হ্যাঙ্গারে ঝুলন্ত চাদের অর্ধেকটা খেয়ে নিয়েছে অলীক প্রেমের পাকস্থলি,
কাদবনা বলে পালিয়ে এসেছি পুষ্কুনির ঘাটে,
হুতুম পেচা চেটে দেয় চোখের লবনের স্মৃতিময় সরবত,
কাদব না, আজকে অন্তত আর কাদব না,
মস্তিষ্কের গ্রামোফোনে বাজছে সুসান বয়েলের "ক্রাই মি এ রিভার..."
এই গ্রামোফোনের সুইচ না থাকায় গানটাকে বন্ধ করা গেলোনা,
ঘটনার সময়কাল ১২ই জোছনাবার, স্বপ্নের চোদ্দ কোটি বছর পেরিয়ে
ঝাউবনের কম্পাস প্রথমবারের মত দেখিয়েছিল তারাদের সড়কপথ,
আর একজন নারী সাপের মত ফনা তুলে তাকিয়ে ছিল আমার দিয়ে,
সরিসৃপ দৃষ্টি দিয়ে তিনি আমাকে কিছু একটা বলতে এসেছিলেন,
ইতঃস্তত দ্বিধাযুক্ত তার হাতের আঙ্গুলগুলো আমার কাছে এসে থেমে গেল,
তিনি উঠে গেলেন কিছু না বলেই, সবগুলো শিকড় ছিড়ে একটি গাছ উপড়ে ফেলা হল। আহা, আমি তাকে পিছন থেকে ডাকতে পারিনি;
পুষ্কুনিতে সেদিন ডুব দিয়ে আত্মাহুতি দিল আমার ছায়া,
আমি এখন হাটি ছায়াহীন; আমি আর কোনদিন আলোতে যাইনি এর পর,
ছায়াকে আমি ভীষন ভয় পাই, ছায়া আমাকে কামড়ে ধরে,
কাদবনা বলে প্রতিদিন পুষ্কুনির পাড়ে আসি,
সারাদিনে জলীয়বাষ্প হওয়া পানিটুকু রিফিল করি ব্যক্তিগত ঘোলা পানি দিয়ে; সতাব্দির পুঞ্জিকা ঘেটে অতীতের ফিরে যাওয়ার জন্য সময়ের একটা ক্র্যাক খুজতে থাকি,
সময়ের ঐ স্ট্যাটিক বিন্দুতে ফিরে গিয়ে ওনাকে শুধু বলতে চাই,
"ফিরে আসবেন, আমি অপেক্ষায় থাকব।"
শ্বব্দের হাইড্রাসেরী...
তোমাকে চাই প্রথম, তৃতীয় ও সম্ভবপর সকল ইচ্ছায়-
বলে দিয়েছি কুপির দৈত্যকে,
তোমাকে তাই; কুড়াচ্ছি বেলিফুল গাছের নিচ থেকে,
তোমাকে শব্দ করে বলছি, পড়ছি,
তোমাকে ছিড়ছি, কাটছি, লিখছি আবার। তোমাকেই
কাগজের প্লেন, কাগজের নৌকা, দুমড়ানো কাগজে
ফেলে দিয়ে ছুড়ে-
ফের ভাংচুর, ফের ঢেড় সময় ব্যয়ে গড়ছি মুর্তি,
তোমাকে টানছি ফিল্টারহীন সিগারেটের সবে মাত্র অভ্যাসে,
তোমাকে জমিয়ে মেঘ অতপর বৃষ্টি করে ছিটাই ঝড় কবলিত শহরে,
তোমাকে ভাবছি… দুপুর ১২টা ৩, বিকেল ৫টা ১৭, রাত্রি বেলা নিদ্রাহীন ছিদ্রময় ঘুমে,
তোমাকেই গান্স এন্ড রোজেস, পুজোর ফুল, Edvard Munch’এর The Scream,
তোমাকেই করছি, ক্রিয়া বিশেষন আরো সব ভুল ব্যাকরনে-
ছাড়খার। তবু জেনো
তোমাকেই খুজি, পকেট বা প্যাকেটে, চৌকির পাশ ঘেষা জানালায়,
রোদ্রের সিভিলাইজড ডিজিটাল বয়স বলে দিয়েছে তুমি কেবলি অতীত,
সারক্যাসটিক হয়ে নিজেকে বলি, তুমি আসবে,
কই!!!!! অপেক্ষায় আছি…
তুমিতো আসোনা, আসোনা কেন!?!
জাতীয়তাবাদীরাই বিভাজন আনে, ধর্মিকরা যুদ্ধ,
নেতারা কলমা পড়ে দেশ চালায়, শিক্ষকরাই বড় মুর্খ,
আনিয়ম; শুধু অনিয়ম দেখি,
তোমাকে তাই আমি নিয়মহীন করি,
জীবনের দন্দময় কৌতুকে আমি তোমাকে মন্ত্র পড়ে স্বপ্ন করি,
তোমাকে আমি ভুল করি; তোমাকে আমি
ভালোবাসা করে ভালোবাসি সকলকে ।।