ওয়ান ইলেভেন এর পরে টিভি দেখার ব্যাপারে আমার আগ্রহ কমে গিয়েছিল। বিভিন্ন চ্যানেলের সাংবাদিকরা কোন হট আইটেম দিতে পারে না। সব কেমন যেন ম্যান্দা ম্যান্দা মনে হয়। যুব মহিলা লীগের একশন নাই,মওদুদের সুললিত বাণী নাই ..ধ্যাত্তেরি।
তো,গতকাল থেকে হঠাৎই আমার অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। নতুন পর্ণোগ্রাফী খুজে পেলাম টকশো গুলোতে। দেখে ফেললাম তৃতীয় মাত্রা,অন্য দৃষ্টি আর পাবলিক ফোরাম নামের তিনটি টক শো।
আমি আগে আশ্চর্য হতাম যে বাঙালির মাঝে কেন মেরুদন্ড অলা মানুষের এতো অভাব।ইদানিং আশ্চর্য হই না,বিনোদিত হই।
তৃতীয় মাত্রায় কালকের আলোচক ছিলেন শফিকুল গনি স্বপন আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কলিমুল্লাহ ।আরে ভাই,তাদের গদগদ অবস্থা যদি দেখতেন!!!! দুজনেই গলায় রক্ত তুলে বলছেন, আর্মিকে স্থায়ী ভাবে দেশের প্রশাসনে রাখতে হবে। গনতন্ত্র ফিরলেও,একটা চেক আর ব্যালেন্স এর জন্য নাকি আর্মি বিভিন্ন স্তরে কাজ করে যাবে সিভিল প্রশাষনের মধ্যে!!! আমাদের সেনাবাহিনী নাকি পৃথিবঅর সবচেয়ে দক্ষ সেনাবাহিনী,এরা একটি শৃংখলা পূর্ণ জীবন যাপন করেন এবং এদের নাকি এখন সময় এসেছে দেশ কে কিছু দেবার!!!!!
আমি প্রথমে মনে করলাম ভুল শুনেছি,তারপর কান রগড়ে দেখি নাহ্,আমাদের তালেবররা ঠিক এ কথাগুলোই বলছেন।এই ছাগল দুটিকে কেউ কি বলে দেয়নি যে সেনাবাহিনীরে পেলেপুষে বড়ো করেছি দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার জন্য,দেশের পাছায় মরিচ ডলা দেয়ার জন্য নয়।দেশের ভিতরে সিভিল প্রশাষনে ছড়ি ঘুরাবার জন্য তাদের কে ডেকে আনার কোন দরকার নেই।
তৃতীয় মাত্রায় এর আগের দিন আরো দুই আলোচক ছিলেন। এদের একজন একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং নিউনেশন পত্রিকার বিশেষ সংবাদাতা। অন্য জন সাবেক উপমন্ত্রী।(স্যরি,দুজনেরই নাম মনে নেই। দেশে সাবেক মন্ত্রী আর বর্তমান অধ্যাপকের অঢেল সাপ্লাই,আমার পক্ষে তো সবার নাম মনে রাখা সম্ভব না।)
কালকের দুই আলোচককে ছাগল বললে আগের রাতের দুইটারে বলতে হয় বদ্ধ উম্মাদ!!! অধ্যাপক যেজন,তার মানসিক সুস্থতা যে নেই,এ ব্যাপারে আমি যে কাউকে চ্যালেঞ্জ করতে রাজি আছি।
এই উম্মাদ অধ্যাপক বললেন,আর্মির উচিত সব নদী পাহারা দেয়া। কোন জেলে জাটকা ধরলে তাকে তৎক্ষনাত গুলি করে মেরে ফেলা যাতে সে পরের দির সুর্যোদয় দেখতে না পারে।
লা হাওলা অলা কুয়াতা...যে দেশের এক অধ্যাপক কাম সাংবাদিক এই লেভেলে চিন্তা করে,সে দেশের ভবিষ্যত নিয়ে আল্লাহর পরিকল্পনাটা যে কী,সেটা বুঝতে পারছি না।
অধ্যাপকের উল্টোপাশে যে সাবেক মন্ত্রী বসেছিলেন,তার মহা আগ্রহ আর্মিকে ডাইরেক্ট ক্ষমতায় দেখতে।তার কথা হচ্ছে,এদেশে নির্বাচনের কোন দরকার নেই।আর্মিই দেশ চালাবে সবসময়!!!!
পাবলিক ফোরাম আর অন্যদৃষ্টির আলোচনা আরো হৃদয়গ্রাহী। সেগুলো নিয়ে আলাদা পোস্ট দিতে হবে ।
তো,পাঠক; আপনার যদি রাতে ঘুম না আসে;বাসায় যদি ইন্টারনেট না থাকে,বিশ্বকাপ ক্রিকেটে যদি আগ্রহ না থাকে,আপনার মন খুব খুব বিষন্ন থাকে,তাহলে এই টকশো গুলো দেখতে বসুন।
মুখ দিয়ে এই বুদ্ধিজীবি আলোচকরা যেভাবে চাটাচাটি করে ,সেটা দেখে নিশ্চয়ই বিমল আনন্দ পাবেন।
(পোস্ট কনভার্টেড বাই এস এম মাহবুব মুর্শেদ এন্ড অরুপ কামাল)