somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিষণ্ন সময় ধার করে আত্মার গন্ধ খোঁজে শরীর

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কতোদিন পর আমাদের দেখা হয়েছে বলুন তো?
হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন, দু'লক্ষ বছর পর আমাদের দেখা।
ক্যামন ছিলেন? জানেন তো অংকে খুব কাঁচা,
সেকেন্ড মিনিট ঘন্টার সমীকরণে কিছুই বুঝিনি।
বরঙ আপনার কুকুরটাকে নিয়ে কিছু বলুনঃ
তার জিহ্বার লালায় এখনো কী স্নান সারেন?
নাকি আপনার পোষা বিড়ালটার মতো এখনো
কারো কোলঘেঁষে বসে থাকেন!
আচ্ছা, দু'লক্ষ বছর তো কম কিছু নয়। নিশ্চয়,
এখন সে উত্তাপ পান না, যা আগে পেতেন?

দেখছেন মানুষ প্রতিদিন ক্যামন বদলে যাচ্ছে,
আমাদের ঘুমোবার সময় ওদের সকাল আর জেগে ওঠবার সময়...
হা হা হা! ঠিক বলছেন----
দু'লক্ষ বছর পর আমাদের দেখা! কই পরস্পরের
আলিঙ্গনে একটু উত্তাপ নেবো,
তা না করে আমরা কুকুর বেড়াল নিয়ে পড়ে আছি!
সত্যিই মানুষ আমরা!

আসলেই কী মানুষ! দু'লক্ষ বছর তো কেউ বাঁচে না, তবে
আমাদের দেখা হলো কী করে! বড্ড অদ্ভুত লাগছে সব!
হিমবাহ গলে গ্যালো, প্রিয় স্বদেশ হয়ে গ্যালো হাঙ্গরের আবাস!
আচ্ছা, সত্যি করে বলুন তো, সত্যিই কী আমরা বেঁচে আছি?
না সব হেলুসিনেশন? যদ্দুর মনে পড়ে, আপনার শরীর থেকে
কুকুরের গন্ধ পেতে শুরু করার পর আপনাকে খুন করি।

কোনো সহজ স্বাভাবিক খুন নয়।
আপনার হাত দু'টো বেঁধে গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছিলাম
পানি ভর্তি একটা কলস, তারপর সলিল সমাধি।
যদিও পা দু'টো বেঁধে রাখিনি, ধারণকৃত ভিডিওতে
দেখেছিলাম আপনার ছটফটানি!

আপনি বেঁচে উঠলেন কী করে? নাকি আপনি মরেন নি
কিংবা ভূত হয়ে ফিরে এসেছেন? আমার ঘাড় মটকে তারপর...
কী বললেন? একসময় আপনাকে তুমি সম্বোধন করতাম?

আপনাকে তুমি সম্বোধন করবো কেন?
আপনিই তো আমি; শরীরের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ছিলেন।
আমার রাত-বিহান আপনি ছাড়া কিছু ছিলো না!
আবার খুনের কথা বলছেন? বললাম না একবার।
আপনার শরীর থেকে কুকুরের গন্ধ পেতে শুরু করেছিলাম।
তারপর... আপনি বুঝি...?

বাহ্ বাহ্! আপনার লেজুরবৃত্তিকে এখনো ঠিক বলছেন?
আপনার এই তোষামুদে আচরণ ছিলো আপনার মৃত্যুর কারণ।
কী বললেন? অন্যেরাও করছে, তারা বহাল তবিয়তে আছে!
তা থাকুক। ওদের আচরণ আমার ধর্তব্য নয়।
ওরা নিশ্চয় আমার শরীরের কলকাঠি নয়!

এই দেখুন আমার কঙ্কাল আচ্ছাদিত শরীর।
দেখছেন, কেমন আপসহীন, নির্ঝঞ্জাট ...
সকালে খেয়ে কাজে যায় আর শেষ বিকেলে ঘরে ফেরে,
যা পায় তাতেই ওর চলে যায়। আপনি?
আপনি ছিলেন আমার পাঁজরের প্রোকোষ্ঠে,
আপনার ইচ্ছে অনিচ্ছেয় ছিলো আমার সকাল-বিকেল-রাত।
আপনার ইচ্ছেতে কালোরাত হতো গোলাপী,
ধূসর প্রান্তর হতো সবুজ। আপনার ইচ্ছের যোগসূত্রে গাঁথা হতো
আমার খামখেয়ালীপণার বৈকালিক অবকাশ, সুখ রোদ্দুর!

এতোকিছু মনে রেখছি কী করে? আপনাকে খুন করবার
আগে সব টুকে রেখেছিলাম ডায়রীর পাতায় কালো অক্ষরে।
মনে নেই? সেইদিন ব্যাংক পাড়া থেকে ফিরে সুইসাইড নোটে
টুকে রাখা মৃত্যুতান্ত্রিক নিয়মের অনুকরণ কেব্কল রেছি।
এই দেখুন রোবটিক জীবনের ধ্রুপদী আয়োজন!
ক্যামন হুলুস্থুল কেটে যাচ্ছে সময়ের সাথে সাথে...

আপনাকে প্রয়োজন কিনা? ছিলেন বৈকি। আমাকে
কবর দেয়ার পূর্বে! দু'লক্ষ বছর যাবত কেবল শরীর
বয়ে বেড়াচ্ছি! যদি কখনো ঘুম ভেঙ্গে দেখেন পুবের
বাতায়নে রক্তাভ সূ্র্য প্রবেশ করছে কিংবা নিশুতি চন্দ্রিমা
ফুল হয়ে ফুটেছে তবে এসে দেখে যেতে পারেন!
আপনি ছাড়া, আপনাকে ছাড়া কতোটা ভালো আছি!

জানি এখোনি ঘুম ভেঙ্গে যাবে। আপনিও
চলে যাবেন! যাওয়ার আগে জেনে যাবেন, আত্না বলে
কিছু নেই! শরীরটাই সব। দেখুন, আমার স্বাস্থ্য আগের
চেয়ে কতোটা ভালো হয়েছে! এখন রোবটের মতো
করে যেতে পারি কাজ যতিচিহ্নবিহীন! সুখ সাগরে!






* প্রিয় দুই কবি অপর্ণা আপু এবং সোনালী ডানার চিল ভাইকে অনেক অনেক থ্যাঙ্কস।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৭
৩৯টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×