একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লাকে রক্ষার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলে প্রমাণ করে দিল খোদ জামায়াত।চিঠি দিয়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াত জাতিসংঘ মহাসচিব ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাজে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে। কেবল তাই নয়, কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর না করার জন্য পদক্ষেপ নেয়ায় দুজনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে আল্লাহ্র আইন প্রতিষ্ঠার দাবীদার এ সংগঠনটি। ভবিষ্যতেও পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার জামায়াতের পাঠানো এক মেইল বার্তায় চিঠি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ‘আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর না করার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির উদ্যোগ এবং পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা’ শিরোনামে চিঠি পাঠিয়েছেন জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমদ। পৃথক দুটি পত্রে আরও বলা হয়েছে. আবদুল কাদের মোল্লাকে যদিও ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে রাজনৈতিক কারণে ফাঁসিতে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু তিনি ছিলেন নিরপরাধ মানুষ। চিঠিতে নেতৃদ্বয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আরও বলা হয় যে, আপনাদের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ার ত্রুটিগুলোকে বিশ্ববাসির সামনে উম্মোচিত করেছে এবং কেন এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ- দেয়া সঠিক হয়নি তা উদ্ভাসিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিরোধী দলসমূহ, জামায়াত এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আবদুল কাদের মোল্লার পরিবার এবং স্বজনদের কাছে অনেক বড় একটা কিছু। আমরা আশা করি আপনাদের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশ সরকার আর কোন রাজনীতিবিদকে ফাঁসিতে ঝুলাতে সক্ষম হবে না।
এর আগে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের দাবিতে পুরো জাতি যখন সোচ্চার ঠিক সেই মুহূর্তে ১১ ডিসেম্বর এ দুজন ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ফোনে রাজনৈতিক বিষয় নির্বাচন নিয়ে কথা বললেও মূলত জামায়াতের পক্ষেই তারা কথা বলতে চেয়েছে বলে ধারণা করছিল মানুষ। কিন্তু অনেক বিষয়ই অস্পষ্ট ছিল। এবার জামায়াতের অবস্থানে পরিষ্কার হলো সকল বিষয়।
কিন্তু প্রশ্ন হলো কেন একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লাকে রক্ষার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি উদ্যোগ নিয়েছিলো ?
কারন অনুসন্ধানে জানা যায় যে, - জামাতে ইসলাম এরা ইসলামের কোন দল নয়,এরা জামাতে মওদুদী। এরা ইহুদি- আমেরিকার দালাল। এদের মুল প্রতিস্ঠাতা আবুল আ'লা মওদুদী ছিলো প্রথমে ব্রিটিশদের এজেন্ট,পরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্হা সিআইএ এর এজেন্ট হয় । এই তথ্য জানা যায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এর গোয়ন্দা সংস্হা কেজিবি কর্মকর্তা দোমিত্র মিত্রোখিন রচিত "মিত্রখিন আর্কাইভ" হতে।
আরো জানা যায় সে সৌদি আরবে গিয়ে মার্কিন তেল কোম্পানী গুলোর মাধ্যমে সিআইএ হতে অর্থানুকুল্য লাভ করতো।যা আজো অব্যহত আছে ।
এইরকম সারাবিশ্বে বহু নামধারী ইসলামী সংগঠন পরিচালিত হয় সিআইএ এবং এধরনের গোয়ন্দা সংস্হা গুলোর পৃষ্ঠপোষকতায়। ইহুদি- আমেরিকা এদের মাধ্যমে তাদের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায় ।এই জন্যই এরা ইসলাম প্রতিষ্ঠার দোহাই দিয়ে জিহাদের জিগির তোলে,তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে ইসলামকে অভিযুক্ত করার সুযোগ করে দেয়।মুলতঃ তারা তাদের পশ্চিমা প্রভুদের নীলনক্শাই বাস্তবায়ন করে ।
যেখানে হাদীছ -এ বলা হয়েছে,"মুসলমান ঐ ব্যক্তি,যার হাত ও যবান হতে অপর মুসলমান নিরাপদ।"
তাই যারা ১৯৭১ সালে লক্ষ লক্ষ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে,গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে ,লক্ষ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করেছে-লুটপাট করেছে এবং আজকে যারা ঐ সমস্ত অপরাধীকে রক্ষার জন্য একই রকম মানুষকে নৃশংসভাবেবোমা মেরে হত্যা করে -জুলুম করছে তারা কি করে ইসলামের অনুসারী হতে পারে ।
অথচ হাদীছ -এ বলা হয়েছে " ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে গরিব - যে ক্বিয়ামতের দিনে পাহাড় পরিমাণ নেকী নিয়ে উঠবে, মনে করবে সে নিশ্চিত জান্নাতী। কিন্তু এরপর তার একের পর এক পাওনাদাররা আসবে। যাদের হক্ব সে নষ্ট করেছে। যাদের উপর সে জুলুম করেছে । তখন তার নেকি দ্বারা তাদের সে হক্ব আদায় করা হবে। এরপরও আরো পাওনাদার বাকি থেকে যাবে। তখন বাকি পাওনাদারদের ( যাদের হক্ব সে নষ্ট করেছে ) গুনাহ তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে। কিছুক্ষণ পূর্বে যে ব্যক্তি ছিল নিশ্চিত জান্নাতী এখন সে ব্যক্তি হয়ে পড়বে নিশ্চিত জাহান্নামী।”
ইসলামের পরিভাষায় হক্ব দু'প্রকার ।এক-হক্কুল্লাহ্ অর্থ্যাৎ আল্লাহ্পাকের হক্ব , দুই-হক্কুল ইবাদ অর্থ্যাৎ বান্দার হক্ব ।বলা হয়েছে তওবা করলে হক্কুল্লাহ্ অর্থ্যাৎ আল্লাহ্পাকের হক্ব ক্ষমা পাওয়া যায় , কিন্তু হক্কুল ইবাদ অর্থ্যাৎ বান্দার হক্ব আল্লাহ্ ক্ষমা করেন না , যতক্ষন পর্যন্ত যার হক্ব সে ক্ষমা না করবে ।
আর তাই জামাতে ইসলাম এরা ইসলামের কোন দল নয়,এরা জামাতে মওদুদী।
এরা ইহুদি- আমেরিকার বন্ধু।
এদের মাধ্যমে বিশ্ব সন্ত্রাসী মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা শক্তিই এ কথা প্রতিষ্ঠা করতে চায় ইসলাম মানেই সন্ত্রাসবাদ বা টেররিজম,মুসলমান মাত্রই টেররিস্ট বা সন্ত্রাসী। মুসলমানদের এই পৃথিবী হতে নির্মূল করতে হবে ,নয়তো সারা বিশ্বে শান্তির আশা করা দূরাশা মাত্র।
এই অজুহাতে সমগ্র বিশ্বের মুসলমানদের ও ইসলামের আজ সবচেয় বড় শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বিশ্ব সন্ত্রাসী মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা শক্তি।বিশ্ব সভ্যতাকে রক্ষা করতে টেররিজম দমনের নামে ইসলাম এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে বিশ্ব সন্ত্রাসী আমেরিকা সহ তাবত পশ্চিমা শক্তি। তারা তাদের অত্যাধুনিক সমর শক্তি নিয়ে প্রবল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ছে একের পর এক মুসলিম দেশের উপর ।চৌদ্দশত বছর যাবত পুষে রাখা প্রবল আক্রোশে বিমান-ক্ষেপনাস্ত্র-ড্রোন হামলায় শহীদ করছে লক্ষ লক্ষ সাধারন মুসলমান।
তাই এইটাই স্বভাবিক আমেরিকা সহ ইহুদীসংঘ তাদের নীল নক্শা বাস্তবায়নকারীদের রক্ষা করতে চাইবে।
এই কারনেই বিশ্ব সন্ত্রাসী মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমারা পরিপূর্ণ কুটনৈতিক শক্তি ব্যয় করেছিলো তাদের '৭১ এর নীল নক্শা বাস্তবায়নকারী কুখ্যাত জামাতে মওদুদীর কসাই কাদের মোল্লাকে রক্ষা করার জন্যে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৭