যেডফ্রমএঃ বিয়ে করলেন ফিউশন ফাইভ] আপনিতো ফিউশন ফাইভ-এর বিয়ের খবর জানিয়েছিলেন, কিন্তু এরপর কি হয়েছে, হচ্ছে তার খবর রাখেন? এই পোস্টটি থেকে ফিফার বর্তমান কাজের কিছুটা হলেও তথ্য পাবেন
সবাকঃ ফিফার বয়স কতো যেন বলেছিলেন ?
তন্ময় ফেরদৌসঃ আমি “Why so serious?” এবার বুঝে যাবেন
ক্ষুধার্তঃ ক্ষমা করবেন। কিজন্যে এবং কেন এখানে উত্তর দিয়ে দিয়েছি
দূর্যোধনঃ ভার্চুয়াল জগতে আমি যতো কঠিন বা যতো আবেগীই হই না কেন, ফিফা আমার ভার্চুয়াল জগতেরই হিরো, বাস্তবের কি?!
আকাশটা লালঃ যা ঘটে তার সবই কি বটে?
♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
রহস্য আমিও পছন্দ করি কিন্তু তাই বলে এক লাখের উপর ব্লগারকে তো আর ফিউশন ফাইভকে নিয়ে ঘটে যাওয়া কাহিনী জানানো থেকে বঞ্চিত করতে পারি না
কাহিনী শুরু যেভাবে:
আমার ব্লগ বয়স মাত্র ৮ মাস থেকে কিছু বেশি। এর আগে "ব্লগ কি?" তা নিয়ে আমার কোন ধারণাই ছিলো না । প্রথম দিকে সিনিয়র ব্লগারদের মুখেই ফিফার কথা শুনেছি, কিন্তু অনভিজ্ঞতার জন্যে উনার ব্লগ খুঁজে পাইনি কিন্তু ফেসবুকে খুঁজতে শুরু করলাম এবং খুব সহজেই পেয়ে গেলাম অন্য ব্লগারদের মিউচুয়াল ফ্র্যান্ড হিসেবে। মনে আছে, আমি ফ্র্যান্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর সাথে সাথে ইনবক্সে মেসেজ দিয়েছিলাম “would u plz accept my frnd request? This is blogger Arju Pony. Thnk u ”
আমি মেয়ে বলে কি না জানি না, অবাক হয়ে খেয়াল করলাম উনি সাথে সাথে একসেপ্ট করলেন এবং ইনবক্সে একটা হাসিমুখের ঈমো রিপ্লাই দিলেন আমি তখনও বুঝিনি সামনের দিনগুলোতে কি অপেক্ষা করছে আমার জন্যে
চ্যাট বক্সঃ
আমি সাধারণত চ্যাট বক্সে বিশেষ করে ক্ষেপানোর মতো কোন টেক্সট পাঠালে উনি মেজাজ খারাপ করে রিপ্লাই দিতেন সাথে সাথে। এটা পরীক্ষিতি সত্য
তবে দিনের শুরুতে যখন “গুড মরনিং” বলতাম উনি মজার মজার ঈমো দিয়ে রিপ্লাই দিতেন (আমার ঈমোর টিচার ) উনার ঈমো দেখেই বুঝতাম কোন মুডে আছেন!
ভালো-মন্দ, মান- অভিমানে সময়গুলো ভালোই চলছিলো। কিন্তু আমার উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা ছিলো যেন উনার সাথে এই যোগাযোগের কথা কেউ না জানে (কপালে কি আছে কে জানে! )
একরাতে কথা প্রসংগে উনার সাথে আমার চরম ঝগড়া হলো, কারণ কিছুই না, উনি ব্লগে সময় দিতে পারছেন না। আর এখন ফেসবুকে সময় দেয়াও উনার জন্যে কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে! আমার আসলে অনেক মন খারাপ হয়ে গিয়েছিলো, কারণ আমি নারীদের নিয়ে যেসব লেখার চিন্তা-ভাবনা করছিলাম তাতে উনি খুব উৎসাহ দিচ্ছিলেন। তাই উনার ফেসবুক ছাড়ার কথায় নিজেকে এতিম মনে হচ্ছিল। রেগে উনি যা করলেন- তখনই উনার ফেবু আইডি ডিএ্যাকটিভেট করে ফেললেন।
ব্লগ রাজপুত্র দূর্যোধন ব্যাপারটাকে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে স্বাভাবিকভাবে নিয়ে স্ট্যাটাস দিলো। আমি শুধু নিরবে চোখের জল ফেলছি
হি ইজ ব্যাকঃ
ওই সময়টাতে ব্লগিং করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম! কোন পোস্ট দিতে ইচ্ছে করতো না। পাশেতো অনুপ্রেরণা দেবার মতো কেউ নেই
হঠাৎ ইনবক্সে একটা অপরিচিত আইডি থেকে টেক্সট পেলাম, নতুন পোস্ট কৈ? মাথার মধ্যে বিদ্যুৎ খেলে গেল! এ তো সেই পরিচিত মেসেজ! সাথে সাথে রিকু পাঠালাম, যা ভেবেছিলাম তাই :#>
ফোনালাপঃ
কথা প্রসংগে আমার ফোন নম্বর দিতে হলো। যা লাউ তাই কদু
আবার ঝগড়া হলো ইনবক্সে। সেই রাতে সারারাত কেঁদেছি। সকাল বেলা ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে মন খারাপ করে জা.বি-এর খাতা দেখছি। একটা অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এলো-
আমিঃ হ্যালো
সেঃ কি খবর আপনার? (হাসছে!)
আমিঃ জ্বি, কে বলছেন?
সেঃ যার সাথে ইনবক্সে এতো কথা বলেন তাকে চিনতে পাচ্ছেন না?!
আমিঃ থ’ (যা হাসি দিয়েছিলাম চাঁদ ও হার মেনেছিলো নিশ্চিত। :!> :#>
এভাবে চলতে লাগলো ফোনালাপ।
উনি ফোন দিলে আমি সাধারণত প্রথম কিছুক্ষণ কথা বলতে পারি না, এই নিয়ে উনি খোঁচাও দিয়েছেন!
“আরজু পনি” আইডি ডি এ্যাকটিভেটঃ
অনেকেই জানেন, সিন্ডিকেট ক্যাচাল শুরু হওয়ার কিছুদিন আগে আমি ফেবুতে “আরজু পনি” আইডি ডিএ্যাকটিভেট করে ফেলেছিলাম।অনেককে অনেক কারণ বলেছি। আজ আসল কারণটা বলি।
আমার বন্ধু ব্লগার কাউন্সেলর সিনিয়র এক ব্লগারের পোস্টের সমালোচনা করে মন্তব্য করেছিলেন। সেই সিনিয়র ব্লগার কাউন্সেলরকে না পেয়ে আমাকে ফোন করে ছাগু ট্যাগিংয়ের পরোক্ষ হুমকি দিয়েছে।
আমার আগ্রহেই “কাউন্সেলর” ব্লগিং শুরু করেছে। আর ওকে একথা আমি কি করে বলি?!
মন তখন চরম বিক্ষিপ্ত। ফিফাকে মেসেজ দিলাম, ফোনে কথা বলতে চাই বলে। উনি বললেন ইনবক্সেই বলতে! কিন্তু তখন এতো মন খারাপের মধ্যে আমি চ্যাট করতে পাচ্ছিলাম না , অনেক অনুরোধ করেও ওয়ান ম্যান আর্মিকে রাজি করাতে পারিনি। শেষে কাঁদতে কাঁদতে উনার কাছ থেকেই শিখে নিলাম কি করে ফেস বুক ডিএ্যাকটিভেট করতে হয়। উনি শেষ চেষ্টা করেছিলেন আমাকে ফেরাতে। আমার ভেতর তখন বাঁধ ভাঙ্গা অভিমান। করে ফেললাম ডিএ্যাকটিভেট!
সাক্ষাতঃ
উনি আমাকে বলেছিলেন, ফ্রেশ ব্লগিং করতে চাইলে পিঠে ছালা বেঁধে ব্লগিং করতে। কথাটা মাথায় ছিলো। উনার সাথে অভিমানের দু’দিন পর আমার ফেবু-র মেইন আইডি থেকে টেক্সট দিলাম কিছুটা তীর্যক ভাবেই (উনার সাথে এই আইডি থেকে আগেও টুকটাক কথা হয়েছে) উনি হেসে রিপ্লাই দিলেন, “আপনার হাসি মুখটা ভাবতে ভাল্লাগছে”।
একদুপুরে টেক্সট দিলাম এম্নিতেই। উনি অনেক দূরে, খাচ্ছেন এক বিলাস বহুল রেস্তোরায়। বললেন চাইলে আমি জয়েন করতে পারি। আমিতো এক কথায় রাজি, বললাম ৩০ মিনিটের মধ্যে আসছি। কিন্তু উনি যে কতোটা বাস্তববাদী তা সন্ধ্যার সময় বুঝলাম। দুপুর বেলা উনি আমাকে এভয়েড করলেন। আমিতো রেগে আগুন! বললাম, “ আমার সাথে এভাবে গেম খেলবেন জানলে আমি কখনোই আপনার সাথে দেখা করতে রাজি হতাম না”! উনি জিজ্ঞেস করলেন, আমার ঘড়িতে ঠিক কয়টা বাজে? বললাম ৪. ৫৭ মিনিট। উনি তখন বললেন সন্ধ্যা ৬টায় কাটাবন মসজিদের সামনে থাকতে। তখন বুঝলাম যে আগে চাইলেও এতো অল্প সময়ে বের হতে পারতাম না। মনে মনে থ্যাংকস দিলাম
আমি জীবনে এতো টেনশন করিনি। আমার তৈরী হতে হতে ৬টা বেজে গেল, কারণ বাসার কিছু কাজও এর মধ্যেই শেষ করতে হয়েছে। উনি মেসেজ I’ll wait just 5 more minutes ততক্ষণে আমি বাসার বাইরে চলে এসেছি। জ্যামের মধ্যে দিয়েই দৌড়ালাম। দৌড়াতে দৌড়াতে মসজিদের সামনে যেয়ে বুঝতেই পাচ্ছি না, কার সাথে দেখা হবে
কালো হ্যারিয়ারের দরজা খুলে একজন ভারী কন্ঠে বললেন, “আরজু, ভেতরে চলে আসুন” চমকে তাকালাম! –এই কন্ঠটাতো আমার ফিফার! হ্যাঁ, ফিফাই :!> ।
ড্রাইভার গাড়ী স্টার্ট দিলো। কিছু বলার মতো কোন ভাষা নেই। মাথায় কোন চিন্তা কাজ করছে না!
নান্দুসঃ
গুলশান একটা রেস্টুরেন্টের সামনে যেয়ে হ্যারিয়ার থামলো। উনি নেমে ডাকলেন আমায়। আমি সম্মোহিতের মতো উনাকে অনুসরণ করলাম।
দোতলায় নিয়ে গেলেন। অদ্ভুত, মনোরম পরিবেশ! আলোও স্বল্প, মোহাচ্ছন্ন। উনি আমার সামনে মেন্যু ধরিয়ে দিলেন। আমি মেন্যু দেখবো কি উনাকেই দেখতেই ব্যাস্ত কালো শার্টে উনাকে যে কি অদ্ভুত সুন্দর লাগছিলো! জিজ্ঞেস করা হয়নি নিয়মিত জিমে যান নাকি?! কারণ তেমনটাই দেখলাম পাশের টেবিলে ২ জন মেয়ে বসলো, শুরু হলো কাউ কাউ। অস্থির হয়ে ফিফা টেবিল বদলালেন অন্য অজুহাত দেখিয়ে। কিন্তু আমার তীর্যক হাসি আলোর স্বল্পতায় তার চোখ এড়িয়ে গেল
কিছুক্ষণ পর খাবার এলো আমিতো খাবার দেখে হাসতেই আছি। লোহার এটা চ্যাপ্টা ডান্ডার মাথায় শিক দিয়ে গোশত, টম্যাটো, পেয়াজ পর্যায়ক্রমে সাজানো।
শ্যালক-দুলাভাইঃ
নেটে কোন খোঁজ খবর না পেয়ে এক দুপুরে মোবাইলে মেসেজ পাঠালাম U r lost!
উনি রিপ্লাই দিলেন Calling u shortly. আমি দম বন্ধ করে অপেক্ষা করছি তার ফোনের আর কনকচাঁপার জানি আসবে তুমি, পায়ের শব্দ শুনি গানটা শুনছি। একটু পর ফোন করে বললেন উত্তরা যেতে পারবো কি-না? আমি বললাম “কেন নয়?”, বাসার কাজগুলো সেরে ফোন দিলাম ড্রাইভারকে জলদি আসতে, কারণ সে দুপুরে থেতে বাসায় গিয়েছিলো। ৪টার মধ্যে হাজির হলাম তার কথামতো উত্তরার “Pizza End”-এ, সাথে একজন মেয়েকে দেখলাম, যতোটা শালীন, ততোটাই স্মার্ট! কিন্তু চেহারা দেখে চমকে উঠলাম! কারণ একই চেহারার আরেকজনকে সিনেমাখোর আড্ডার শেষের দিকে সময়টুকুতে অন্ধকারে দেখেছিলাম। আমার সাথে কন্যার পরিচয় করিয়ে দিলেন। উনি মিসেস ফিফা হাভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্জিনিয়ারিং এ্যান্ড এপ্লাইড সাইন্স-এ পড়ে এসেছেন এবং সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ফিফার সব টেকি জ্ঞান সব তার মিসেসের কাছ থেকে শেখা । সেই কন্যা আর কেউ নয় আমাদের প্রিয়, দূর্মুখ ব্লগার দূর্যোধন-এর ভগিণী! আমার হতভম্ব অবস্থা দেখে উনি বললেন যে, কন্যা ব্লগ পড়ে কিন্তু ব্লগে দেবার মতো যথেষ্ঠ সময় সেই কন্যার নেই। আর ব্লগ লিখলেতো ব্লগের সব টেকি পোস্টগুলো মিসেস ফিফাই দিবেন?! তখন ব্লগের অন্য টেকিরাতো বেকার হয়ে যাবে! যাইহোক, কন্যার আন্তরিকতায় আমি তো দারুণ মুগ্ধ! এবং দূর্যোধন আর ফিফা যে আসলে শ্যালক-দূলাভাই এই ভেবে দূর্যোধনের উপর একটু রাগও হলো। কারণ কখনো সখনো দূর্যোধন কেন আমার সাথে তাল করে তা বোধগম্য হলো
আমি এখন "নাম নাই" ঃ
ফেসবুকে আমার মেইন আইডিতে কয়েকদিন আগে কিছু ঘটনায় বিরক্ত হয়ে ফিফার সাথে শেয়ার করেছিলাম। উনি ঘটনার সাথে জড়িত মানুষদের নাম জানতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু আমি সেই মানুষগুলোর প্রাইভেসীর প্রতি সম্মান জানাতেই বলতে পারিনি তাদের নাম। এতে উনি রেগে গিয়ে হুমকি দিলেন যে, আমাকে ব্লক করা হতে পারে! কিন্তু উনি আমাকে ব্লক করবেন আর আমি সেটা আমি হজম করবো তা কি করে হয়! আমার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রফেশনাল সব বন্ধুদের কাছে মনে মনে ক্ষমা চেয়ে ডিএ্যাকটিভেট করে দিলাম আমার সাধের ফেবু একাউন্ট এবং নিজের নাম হারিয়ে এখন আমি "নাম নাই"
আপাতত শেষ কথাঃ
আমি ব্লগে প্রধানত একজন নারী হিসেবে নয় বরং এজন ব্লগার হিসেবেই কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে মুলত ফ্রেশ ব্লগিং করার চেষ্টা করি। যা আপনার ব্লগীয় সংজ্ঞানুযায়ী মিলে যায়। তো?!.................
|কতো বেদনা দিলে, কতো ব্যাথা দিলে... কাছে এসে ভোলালে, তোমাকে বোঝা বড় দায়
আর দূর্যোধনকেও বলি, দুলাভাইয়ের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র, নো ওরিস
সবাই ভালো থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১২ বিকাল ৩:৪৬