তার বছর বিশেক আগে থেকেই তারা সংখ্যালঘু হওয়া শুরু করেছে নিজের মাটিতে । তাদের পাহাড়ে গাড়ী ভরে হাজার হাজার মানুষ নিয়ে আসা হচ্ছে সমতল থেকে ।
তারা ভূমি হারাচ্ছে , শরনাথী হচ্ছে , বিচ্ছিন্নতাবাদী দমনের নামে চলছে নিযাতন চারিত্রিক ভাবে সবথেকে সরল মানুষগুলোর উপর ।
মেয়েটা এসব বোঝতো, প্রতিবাদ করতে চাইতো । তাই মাত্র তেইশ বছর বয়সে সে হতে পেরেছিলো মানবাধিকার সংগঠনের স হ -সভাপতি ।
তার নাম কল্পনা চাকমা ।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের এই নেত্রী তখন ব্যস্ত আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তাদের প্রাথর্ীর জন্য ভোট প্রার্থনায় । এভাবেই কল্পনা চাকমা তার একটিভিটিসের জন্য টার্গেট হয়ে পড়ে সেনাবাহিনীর ।
12 জুন। রাত 1টা ।
আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পর জাতীয় সংসদ নিবাচন । কোজোইছড়ি আর্মিক্যাম্পের ল্যাফটেনেন্ট ফেরদৌস তার 11 জন সিপাহী নিয়ে ঘেরাও করে কল্পনাদের বাড়ী । ে
চাখ বেঁধে তুলে আনা হয় কল্পনা ও তার ভাই ক্ষুদিরাম চাকমাকে ।কিছুদূর আসার পর গুলি করা হয় ক্ষুদিরামকে । সে পানিতে ঝাপিয়ে পড়ে প্রান বাঁচায় । কল্পনা রয়ে যায় অপ হরনকারীদের জিম্মায় ।
পরদিন সকালে ক্ষুদিরাম ও পরিবারে র অন্যান্যরা নিকটবতর্ীসেনা ক্যাম্পে রিপোর্ট করতে গেলে তাদের শান্তিবাহিনীর চর বলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয় । পুলিশ স্টেশনে এফ.আই.আর করতে গেলে একই অবস্থা ।
কল্পনা চাকমা অপ হরনকে কেন্দ্রকরে পুরো পার্বত্য চট্রগ্রাম উত্তপ্ত হয়ে উঠে । সরব হয় সারাদেশের মানবাধিকার সংগঠন গুলো । সেনাবাহিনী প্রথমে পুরো ঘটনা অস্বীকার করে ।
কিন্তু আন্তজর্াতিক মানবাধিকার গ্রুপগুলো র চাপের মুখে নতুন গল্প হাজির করে । 'লে: ফেরদৌসের সাথে কল্পনার প্রেম ছিলো এবং সে স্বেচ্ছায় পালিয়ে এসেছে ।কিন্তু সেনাবাহিনীর কাছে তার কোনো হদিস নেই ।' [ দিনাজপুরের ইয়াসমিনকে ধর্ষন করে হত্যা করার পর ও পুলিশ গল্প বানিয়েছিল সে খারাপ মেয়ে , পতিতা ]
এই গল্প প্রত্যাখান হবার পর সেনাবাহিনী হাজির করে আরেক কাহিনী ' কল্পনার পাসপোর্টছিল এবং সে ভিসা নিয়ে ভারতে চলে গেছে ' । কিন্তু আন্তজর্াতিক তদন্তে এটা ও মিথ্যা প্রমানিত হয় । বস্তুত: কলপনার আদৌ কোনো পাসপোর্ট ছিলোনা ।
সবশেষে ফাজলামীর চুড়ান্ত করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী । হেলিকপ্টারে করে সমস্ত পাহাড়ে লিফলেট ছড়ায়: কল্পনার সন্ধান দিতে পারলে 50,000 হাজার টাকা পুরস্কার ।
এই শেষ ।
তার পর আর কোনো গল্প নেই ।
কল্পনা চাকমাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি ।
লে: ফেরদৌস এখন ক্যাপ্টেন হয়েছেন ।
একদিন জাতিসংঘ শান্তি মিশনে গিয়ে বাংলাদেশের কালো মূখ উজ্জ্বল করবেন । একদিন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান হবেন । আল্লাহর অসীম করুনায় একদিন বাংলাদেশের রাস্ট্রপ্রধান ও হয়ে যেতে পারেন ।
আজ 12 জুন 2006 ।
10বছর।
আমরা তোমাকে ভূলে গেছি কল্পনা । যদি ও সংবিধান বলে রাস্ট্র বাধ্য তার প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করতে । কিন্তু আমাদের সময় কই !
গনতন্ত্র, জেহাদ , র্যাব-সন্ত্রাসী, উজিরে খামোখা ,বিদিশা-এরশাদ ,সিইসি, জলিল,ঘেরাও ,পোড়াও কততো নাটক আমাদের ! ইরাকে বোমা পড়ছে , ফ্রান্সে হিজাব নিষিদ্ধ হয়েছে, গুজরাটে মুসলিম নিধন, কাশমীরে মুজাহিদদের অপারেশন --কততো আর্ন্তজাতিক ভাবনা আমাদের ।
তোমাকে মনে পড়ার সময় কোথায় বলো !
তুমি তো ঘরের মেয়ে । তা ও সংখ্যা য় লঘু । ধর্মে, ভাষায়, সংস্কৃতিতে, চেহারায় !
তোমাকে ভুলে গেছি কল্পনা ।
কিছু মনে করোনা প্রিয় বোন আমার । ।
১. ১২ ই জুন, ২০০৬ ভোর ৫:০৬ ০
'' লালসালু'' একটা বক্তব্য চোখের সামনে তুলে দিয়েছে আমাদের। এই মাটির মানুষ খুব প্রয়োজন না হলে র্ধমের ধার ধারে না। সেই জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিত্ব কারী একটা দল, শুধু ধর্ামিক ঐক্যের দোহাই দিয়ে ; সমস্ত রকম নাগরিক আধিকার, েমৗলিক অধিকার, যোগ্যতার ভিত্তিতে র্অজিত নেতৃত্বের অধিকার, বানিজ্যের সম অধিকার (আমাদের পাট শিল্প ধ্বংসের পিছনে, পশ্চিম পাকিস্তানি শিল্পগ্রুপ গুলোর মিলে উৎপাদিত পাটের ফিনিশড গুড এর বাজার প্রতিষ্ঠার চেষ্টাই ছিল মূল কারণ। এশিয়াটিক এর বাংলাদেশের ইতিহাস পড়লে হালকায়ে জেনে যাবেন) সব বনচিত মানুষকে কি বিবেচনায় একই পতাকাতলে রাখার পণ করেছিল। এর পরও
কি বলবেন ওরা দেশপ্রেমিক ছিল? দেশ কি ? শুধু একটা ভূখন্ড ,না কি ভূখন্ডে বসবাসকরী জনগণ ?
জনগণ যেখানে গৌণ , সেখানে র্ধমের দোহাই কি হাস্যকর না।
এই মন্তব্য এর উপর কেউ বলে বসবেন না 'দ্্বিজাতি তত্ত্ব ' , এই তত্ত্ব অসম্পর্ূণ। এটা এখন বহুজাতি তত্ত্ব । বাংলাদেশের জন্মই যার প্রমাণ।
তাই কল্পনা চাকমাদের সাথে সহাবস্থানের জন্য তাদের বুকে জড়িয়ে ধরতে হবে। জিয়াউর রহমান ময়মনসিংহের (কেউ রাগ করবেন না) থেকে এবং জেল থেকে প্রচুর দাগী আসামি পর্াবত্য চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়েছিলেন বসতি স্থাপনের জন্য। কলোনিয়াল আচরণের র্সবোচ্চ মাত্রা। এইরকম বিমাতা সুলভ আচরণ এর পর আমরা ওদের কাছ থেকে কতখানি ভাল আচরন আশা করতে পারি। শেখ মুজিব বলেছেন সবাই বাংগালি হয়ে যাও, ভয়ংকর কথা।
কল্পনা চাকমার জন্য হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা।